বাইশ গজের মানচিত্রে একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে স্টার নেটওয়ার্ক। ক্রিকেট সম্প্রচারের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে তারা। এবং শুধুমাত্র খেলার কথা মাথায় রেখেই স্টার ইন্ডিয়া তাদের পঞ্চম আঞ্চলিক স্পোর্টস চ্যানেল নিয়ে এসেছে। চলতি বছর মার্চের শুরুর দিকেই বাংলার দর্শকের কথা মাথায় রেখে তারা চালু করেছে 'স্টার স্পোর্টস ওয়ান বাংলা' (এসএস ওয়ান বাংলা)।
বাংলার মানুষের খেলার সঙ্গে নাড়ির যোগ রয়েছে। সেকথা জানে স্টারও। ফলে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের কাছে পৌঁছতেই এই বিশেষ নিবেদন তাদের। হিন্দি, তামিল, তেলুগু, কন্নড়ের পর এবার বাংলা অভিযান শুরু করল স্টার স্পোর্টস।
আরও পড়ুন: মাশরাফির মতো ক্যাপ্টেন দেখি নি, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ চমকে দেবে: হাবিবুল বাশার
আরব সাগরের তীরেই স্টারের সদর দফতর। কলকাতার নির্বাচিত তিন সংবাদমাধ্যমকে স্টার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তাদের অফিসে। দুই সংবাদপত্রের সঙ্গে একমাত্র বাংলা অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে সেই আমন্ত্রণ ছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার। কিভাবে কাজ করছে এসএস ওয়ান বাংলা, তাদের ভবিষ্য়ত পরিকল্পনাই বা কী? এসবই বাংলার মানুষকে জানাতে চেয়েছিল এসএস ওয়ান বাংলা। স্টারের রান্নাঘরে ঢুকে তারই হালহকিকত দেখে এল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।
বিশ্বমানের স্টুডিও এবং সেটেই শুট হচ্ছে এসএস ওয়ান বাংলার একাধিক অনুষ্ঠান। বাংলা ভাষায় চলতি আইপিএল-এর লাইভ সম্প্রচারও হচ্ছে সেখান থেকেই। বাংলা তথা ভারতের পরিচিত ক্রীড়া সাংবাদিক এবং দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটারদেরকে নিয়েই এসএস ওয়ান বাংলার প্যানেল। আইপিএল চলাকালীন ধারাভাষ্য়কারের ভূমিকায় পাওয়া যাচ্ছে তিন সাংবাদিক - বোরিয়া মজুমদার, গৌতম ভট্টাচার্য ও দেবাশিস দত্তকে। ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছেন রণদেব বসু ও সৌরাশীষ লাহিড়ী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে প্রখ্যাত ক্রিকেটার হাবিবুল বাশারকেও কমেন্ট্রি বক্সে উড়িয়ে নিয়ে এসেছিল তারা।
স্টার স্পোর্টসের আঞ্চলিক প্রধান অশোক নামবুদিরি জন্ম ও কর্মসূত্রে শহর কলকাতার মানুষ। বাঙালির, বাংলার পালসটা ভাল বোঝেন। গল্পের ছলে এসএস ওয়ান বাংলার আবির্ভাবের কারণ শোনালেন তিনি। বলছিলেন, "২০১৭-র মে থেকে স্টার স্পোর্টসের আঞ্চলিক চ্যানেলের পথ চলা শুরু। আমরা প্রচুর রিসার্চ ওয়ার্ক করেছি। একটা ব্যাপারে দেখলাম তামিল আর বাংলার ভীষণ মিল। ওখানকার মানুষ প্রচণ্ড নস্ট্যালজিক, এখানকারও মানুষও সেরকম। দেশের এই দুটো প্রান্তের লোক খেলা বলতে পাগল। তামিলে আমরা নিজেদের একটা স্বকীয় পরিচয় তৈরি করতে পেরেছি। বাংলাতেও সেটাই চাই।"
অশোকবাবুর থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল কীভাবে তাঁরা আলাদা একটা পরিচিতি তৈরি করতে চাইছেন এই বাংলায়। বিশ্বকাপে তাঁদের পরিকল্পনাই বা কী হতে চলেছে? তিনি জানাচ্ছেন, "এক সময় বাংলায় রেডিও ধারাভাষ্য় অসম্ভব জনপ্রিয় ছিল। এখন প্রায় হয়ই না। আমরা আবার রেডিও কমেন্ট্রিটা ফেরাতে চাই। আমরা তামিলে একটা কনসেপ্ট এনেছি। সেটা মানুষের ভাল লেগেছে। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের মতো দক্ষিণ ভারতের কোনও জনপ্রিয় ক্রিকেটারের সঙ্গেই ওই ভাষার জনপ্রিয় রেডিও জকিকে এনে ক্রিকেট শো করিয়েছি। এরকম বাংলাতেও করতে চাই।
"সামনেই বিশ্বকাপ রয়েছে। আমরা ভীষণভাবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে আমাদের সঙ্গে চাইছি। কথাবার্তাও চলছে। বাঙলার মানুষের কাছে সৌরভের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। আমরা ক্রিকেটের বাইরে অন্য খেলার সঙ্গে যুক্ত মানুষকেও ক্রিকেটে আনতে চাইছি। সেলিব্রিটিদের আনতে চাই। বাংলার লোক তর্ক-বিতর্ক আর কুইজ খুব পছন্দ করেন। সেটা নিয়েও কিছু অনুষ্ঠান করতে চাইব। এমনকী ফ্যানেদেরও সুযোগ থাকবে সেলেবদের সঙ্গে লাইভ কমেন্ট্রি করার। সেই রাস্তাও খোলা রাখছি আমরা। স্থানীয় রসদ দিয়েই বাংলার মানুষকে আপন করে নিতে চাই। গ্রামবাংলাতে গিয়েও প্রচারের কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। বাঙালি তাঁর কথ্য ভাষায় বিশ্বকাপ দেখবেন।"
আপাতত এসএস ওয়ান বাংলা আইপিএল নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু বিশ্বকাপের সময় তারা বাংলার ঘরেই আশ্রয় নিতে চায়। ক্রিকেটের শো-পিস ইভেন্টের জন্য এখনই তাদের নীলনক্সা তৈরি হয়ে গিয়েছে। আসতে চলেছে বিশেষ প্রোমোও। এখন দেখার, এসএস ওয়ান বাংলা বিশ্বকাপে রাজ করতে পারে কি না।