পিকে, চুনী গোস্বামীর মৃত্যুতে কোনো বার্তা পাঠাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই কারণে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আয়োজিত অনলাইন স্মরণসভাতে প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিলেন সুভাষ ভৌমিক।
তিনি বলে দেন, "আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী কয়েক সেকেন্ড খরচ করে টুইটে দুই কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশও করেননি। ব্যক্তিগতভাবে বার্তাও পাঠাননি। আমি জানি না উনি জানেন কিনা যে দেশের বাইরে বহুবার পিকে এবং চুনী গোস্বামীর জন্য জাতীয় সংগীত বেজেছে।"
কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রয়াত হয়েছেন দেশের ফুটবলের দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র- পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চুনী গোস্বামী। লকডাউনে কিংবদন্তিদের স্মরণে এবার অভিনব উদ্যোগ নিল ইস্টবেঙ্গল। ফেসবুকে ৯ মে, শনিবার সন্ধ্যে ৬টায় দুই প্রয়াত ফুটবল ব্যক্তিত্বের স্মরণসভার আয়োজন করা হলো নেট দুনিয়ায়। পুরো অনুষ্ঠানটি একটি সংস্থার ফেসবুক পেজে লাইভ স্ট্রিমিং করাও হয়।
করোনার কারণে দুই ফুটবল তারকার শেষকৃত্যে হাতে গোনা লোক ছিল। শারীরিকভাবে তাই সম্ভব না হলেও নেট দুনিয়ার মাধ্যমে স্মরণসভার অভিনব আয়োজন করে বেনজির কীর্তি করে দেখাল লাল হলুদ ক্লাব।
সেখানেই বক্তব্য রাখেন সুভাষ ভৌমিকের মত বিখ্যাত কোচ-ফুটবলার। তিনি জানান, "আমার গোটা ফুটবল জীবনটাই প্রদীপদার কাছে ঋণী। আমার বাবা-মা পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন। আর প্রদীপদা ফুটবল জগত চেনান আমাকে।"
১৯৭২ সালে মোহনবাগান থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর পিকেই ইস্টবেঙ্গলে সুযোগ দেন সুভাষ ভৌমিককে। তারপর আর ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে।
তিনি চুনী গোস্বামীর প্রসঙ্গে বলেন, "ফুটবল ছাড়াও একই দক্ষতায় হকি ও টেনিস খেলতেও দেখেছি ওঁকে। উনি যদি টেনিসে একটু বেশি সময় দিতেন তাহলে ডেভিস কাপের দলেও থাকতে পারতেন। এই দুই কিংবদন্তির বিরুদ্ধেই ১৯৬৭-৬৮ তে স্পোর্টিং ইউনিয়নের হয়ে খেলার সময় দুজনের বিপক্ষেই খেলেছি। নিজেকে একারণে আজও ভাগ্যবান মনে করি।"
স্মরণসভায় ছিলেন বাইচুং ভুটিয়াও। তিনি জানান, "এই দুজন এমন ব্যক্তি ছিলেন যে প্রত্যেক ফুটবলপ্রেমী ওদের সঙ্গে একাত্ম অনুভব করেন। দুজনের সঙ্গেই অনেক স্মৃতি রয়েছে। ফুটবল জীবনে বহু কিছু ওঁদের কাছ থেকে শিখেছি। প্রদীপদা হাসিখুশি থাকতে ভালোবাসতেন। চারপাশের সবাইকে খুশি দেখতে পছন্দ করতেন। নিজের পুরোনো দিনের গল্প করতেন সবার সঙ্গে। চুনী দা র সঙ্গে খুব কম কথাবার্তা হত। কারণ উনি কোচিংয়ে ছিলেন না। উনি সবসময় পরিপাটি পোশাকে থাকতেন। দুজনেই ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের প্রতিনিধি।"
স্মৃতিচারণ করেন শ্যাম থাপাও। তিনি জানান, "প্রদীপদার কোচিংয়ে খেলেই সমৃদ্ধ হয়েছি। ওঁর মোটিভেশনাল কথাবার্তায় শুধু আমি নই দলের সামলেই উদ্বুদ্ধ হত।"
এই স্মরণসভায় হাজির ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পিকে বন্দোপাধ্যায়ের কন্যা পলা বন্দোপাধ্যায়ও। ও অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ক্রীড়া সাংবাদিক জয়ন্ত চক্রবর্তী।