Advertisment

ডার্বির পর বিস্ফোরক সুব্রত, ছাড়লেন না ইস্ট-মোহন কোনও পক্ষকেই

ডার্বির পোস্টমর্টেম করলেন ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি’ সুব্রত ভট্টাচার্য। শুধু ম্যাচ নিয়েই কথা বললেন না তিনি, প্রশ্ন তুললেন সনি নর্ডের ফিটনেস থেকে মেহতাব হোসেনকে না-খেলানো নিয়ে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Subrata Bhattacharya

ডার্বির পর বিস্ফোরক সুব্রত, ছাড়লেন না ইস্ট-মোহন কাউকেই

সুব্রত ভট্টাচার্য, আজও বঙ্গজ ফুটবলের অন্যতম চর্চিত চরিত্র। বাগানের ঘরের ছেলে বাবলু স্পষ্টবাদী, ও ঠোঁটকাটা। মন্তব্যের জন্য বিতর্কিতও বটে। জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার নিজেই বহু ডার্বির নায়ক। রবিবার চলতি আই-লিগের প্রথম বড় ম্যাচ খেলল ইস্ট বেঙ্গল-মোহন বাগান। আর পাঁচটা বাঙালির মতো সুব্রতরও চোখ ছিল ডার্বিতে। সোমবার প্রেস ক্লাবে একটি হকির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন সুব্রত। কিন্তু অনুষ্ঠানের পর ডার্বির পোস্টমর্টেম করলেন নিজস্ব ভঙ্গীতে। শুধু ম্যাচ নিয়েই কথা বললেন না তিনি, প্রশ্ন তুললেন সনি নর্ডের ফিটনেস থেকে মেহতাব হোসেনকে না-খেলানো নিয়ে।

Advertisment

ডার্বি কেমন দেখলেন? সবার আগে এই প্রশ্নটাই রাখা হয়েছিল। শুরুটাই করলেন সপাটে। বললেন, "একেবারেই উচ্চমানের নয়। ব্যক্তিগত দক্ষতার কোনও ছাপ পেলাম না। একটা চিমা, মজিদ বাসকার, এমেকা বা ব্যারেটোকে দেখলাম না। ইস্ট বেঙ্গল খারাপ খেলে জিতেছে। ছন্দ, গতি কিছুই নেই খেলায়। মোহন বাগানের উচিত ছিল ইস্ট বেঙ্গলের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ম্যাচটা জেতা। এটাই বলব, ইস্ট বেঙ্গল জেতার মতো খেলে জেতেনি।”

আরও পড়ুন: রালতের রংমশালে ডার্বির রং লাল-হলুদ

লাল-হলুদের নতুন বিদেশি জেমি কোলাডো আপাতত আলোচনার মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকেও মনে ধরেনি সুব্রতর। সাফ বক্তব্য, "ইস্ট বেঙ্গল অনেক বিদেশিকে খেলিয়েছে। মজিদ, জামশেদ নাসিরিও ওই ক্লাবে খেলেছে। কোলাডো ওই মানের নয়। ভাল লাগেনি আমার।" ইস্ট-মোহনকে লিগের চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে দেখার কথা ভাবছেন না তিনি। উল্টে বললেন, "আমরা যখন খেলেছি, এমনকি ছয়-সাতের দশকেও দেখেছি, ২৮-২৯ টা ম্যাচ খেলার পর তিন পয়েন্টের ফারাক হতো। এখন তো দেখছি আট-ন’টা ম্যাচের পরেই পয়েন্টের অনেক ফারাক হয়ে যাচ্ছে।"

মোহন বাগানের জার্সিতে ১৭ বছর কাটিয়েছেন। ফুটবলার হিসেবে ক্লাবকে ত্রি-মুকুট সহ অনেক ট্রফিই জিতিয়েছেন। পেলের কসমোসকে আটকে দেওয়া এই ফুটবলার বাগানের কোচ হিসেবেও দুরন্ত সফল। দু’বার ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এখন আই-লিগ) ছাড়াও দিয়েছেন একাধিক মেজর ট্রফি। কখনই বিদেশি কোচের জয়গান শোনা যায়নি তাঁর মুখে। এদিনও দেশীয় কোচদের সমর্থনেই বললেন তিনি। জানালেন, "ভারতবর্ষে এতজন বিদেশি কোচ রয়েছে। বলতে পারবেন, কার কোচিংয়ে কোন দল এখন খুব ভাল খেলছে? বেঙ্গালুরু এফসি-র কথা ধরেই বলছি। বলতে পারবেন না। আমাদের দেশের কোচ অনেক ভাল।"

তাহলে বাগানের বর্তমান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীকে কত নম্বর দেবেন? বলছেন, "আমি পরীক্ষক নই যে, নম্বর দেব। শঙ্করলাল হোক বা মদনলাল, আমার ভেবে কী হবে?" যদিও সুব্রতর চোখে কোচিংয়ের অনেক ভুলচুক রয়েছে দুই কোচেরই, টেকনিক্যাল দিকগুলো নিয়ে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি।

আরও পড়ুন: ফেডারেশনকে চিঠি বাগানের, লাল-হলুদের জন্য বোনাস

সনি নর্ডের প্রশংসা করলেন সুব্রত। কিন্তু কথা শোনাতেও ছাড়লেন না। "ওর সঙ্গে সাতের দশকের প্লেয়ারদের একটা মিল আছে। ছন্দ, দক্ষতা, খেলার ভঙ্গিতে সেটা পাই। ও রবিবার খেললে ভালো হতো। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারছি না, সনি নিজেই বলে দিচ্ছে ও ফিট নয়। আমাদের সময় তো ক্লাব সিদ্ধান্ত নিত, কে ফিট আর কে ফিট নয়। আমার কাজ হলো খেলা। ডাক্তার চোট দেখে বলবে, কে খেলবে আর কে খেলবে না। কিন্তু সনি যদি ফিট থেকেও না-খেলে থাকে তাহলে বলব, ওকে মোহন বাগানে রেখে লাভ নেই।" অন্যদিকে, ডার্বিতে মেহতাবকে খেলানো উচিত ছিল বলেই মত সুব্রতর। জানালেন, মেহতাবের অভিজ্ঞতা বড় ম্যাচে সম্পদ। কিন্তু কেন মোহনবাগান মেহতাবকে খেলাচ্ছে না, তিনি জানেন না।

পরিশেষে ডার্বিতে ইস্ট বেঙ্গলের বিতর্কিত প্রথম গোলটা অফসাইড নয় বলেই জানিয়েছেন সুব্রত। বাগান কোচ শঙ্করলাল থেকে শুরু করে অনেকেই বলেছেন, মোহন বাগান ১০ জনকে নিয়ে শেষের দিকে যে লড়াইটা করেছে, সেটা অত্যন্ত পজিটিভ। দশ-এগারোর হিসেবটা সুব্রতর কাছে ভীষণ পরিষ্কার। তিনি জানালেন, "এগারো থেকে দশজন হয়ে যাওয়াটা কোনও বিষয় নয়। সেটা খেলার যে কোনও সময়তেই হতে পারে। এখান থেকেও জেতা যায়। এসব অনেক অভিজ্ঞতা আছে আমার।"

East Bengal Kolkata Football Mohun Bagan
Advertisment