আন্তর্জাতিক স্ট্রেন্থ লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে দেশকে রুপো এনে দিল বাংলার ছেলে সুমিত। তার সাফল্যে রীতিমত উচ্ছ্বসিত বাংলার ক্রিড়া মহল। ২২ বছরের চেষ্টায় অবশেষে সফল সুমিত। দাদার হাত ধরেই খেলাধুলায় আসা। ছোট থেকেই ব্যায়াম অনুশীলন করতে ভালবাসেন সুমিত। এর আগেও জিতে নিয়েছেন একাধিক পদক। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জয় এই প্রথম। ৩৫ বছর বয়সেই রুপো জয় করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের নাম খোদাই করে রাখলেন বাংলা সুমিত মুখোপাধ্যায়। ১০৬ কেজি স্ট্রেন্থ লিফটিংয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করল বাংলার এই প্রতিভাবান তারকা।
২০২৩ সালের এশিয়ান স্ট্রেন্থ লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের হয়ে রুপো জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে বাংলার সুমিত মুখোপাধ্যায় ৷ গত ১০ থেকে ১৩ মার্চ নেপালে আয়োজিত হয় এই টুর্নামেন্ট! সেখানে অংশ নেয় ভারত সহ ৯ টি দেশ। তাঁর বিভাগে হরিয়ানার আজব সিং সোনা এবং তিনি রুপোর পদক জিতেছেন ৷ দেশের হয়ে প্রথম হন হরিয়ানার আজব সিং। তিনি সোনা জিতেছেন।
৯টি দেশের ৩১০ জন প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসে বেজায় খুশি চন্দননগরের সুমিত মুখোপাধ্যায়। ২০২২ সালের মে মাসে জব্বলপুরের স্ট্রেংথ লিফটিংয়ের জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার পরই এশিয়ান স্ট্রেন্থ লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয় ভারত। অংশ নিয়েই ভারতের ঝুলিতে চলে এল দুটি পদক। বাংলার ছেলে সুমিত এখন আগামী নভেম্বরে দুবাইতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্ট্রেন্থ লিফটিংয়ে সোনা জয়কেই এখন পাখির চোখ করেছেন।
২০০৩ সাল থেকে দাদার হাত ধরেই বডি বিল্ডিংয়ে আসা। ২০১২ সালে শুরু করেন স্ট্রেন্থ লিফটিং। চন্দননগরে রথের সড়কের কাছেই নিজের একটি মাল্টিজিমও চালান সুমিত। সুমিতের সেন্টারে সকলেই সুমিতের এই পারফরমেন্সে বেজায় খুশি। অনেকে আবার ভবিষ্যতে স্ট্রেন্থ লিফটিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া অনুশীলন চালাচ্ছেন। ট্রেনার হিসাবেও সুমিতের এলাকায় যথেষ্ট নাম ডাক। সুমিতের মাল্টিজিম সেন্টারে এখন রীতিমত উৎসবের মেজাজ। মাঝে কয়েকটা দিন একটু হালকা মেজাজে থেকেই আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে তৈরি করতে চান সুমিত।
নিজের সাফল্য প্রসঙ্গে সুমিত বলেন, “অনেক ছোট থেকেই বডি বিল্ডিংয়ের প্রতি আমার ভালবাসা। দাদার হাত ধরেই শুরু হয় ব্যায়ামের অনুশীলন। দীর্ঘ ২২ বছর কঠোর অনুশীলনের ফলে আজ আমি দেশের হয়ে এক বিরাট সম্মান আনতে পেরেছি। প্রথম হতে না পারলেও সেভাবে আক্ষেপ নেই সুমিতের। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, এটা আমার কাছে গর্বের যিনি প্রথম হয়েছেন তিনিও ভারতীয়। অন্য কোন দেশের কাছে আমাদের মাথানত করতে হয় নি এটাই সম্মানের। আগামী দিনে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় আরও বড় সাফল্য আশা করছি”।
পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অনেক রাজ্য এমনকী আমাদের রাজ্যের ছেলেমেয়েরা গুটিকয়েক গেমসের মধ্যে নিজেদের আবদ্ধ করে রাখেন। ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিসের মত গেমস ছাড়া অনান্য গেমসেও নিজেকে প্রমাণ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন লাগাতার অনুশীলন আর ধৈর্য। সরকারের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ ওয়েট, স্ট্রেন্থ লিফটিং-নিয়ে যারা ন্যাশনাল বা স্টেট লেভেলে পারফর্ম করছেন তাদের জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য বা স্পন্সরশিপের ব্যবস্থা করে দিলে অনেক গরীব ঘরের ছেলে-মেয়েরা ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফরমেন্স করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে”।