মার্কিন মুলুকের ’মলোকাই চ্যানেল’ জয়ের স্বপ্নও পূরণ হয়ে গিয়েছে। এবার বাংলার খ্যাতিমান সাতারু সায়নী দাসের লক্ষ্য নিউজিল্যাণ্ডের ’কুক স্ট্রেইট চ্যানেল’ জয় করা। সুদূর মার্কিন মুলুকে বসেই শনিবার নিজের এই লক্ষ্য ও স্বপ্নের কথা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস কে জানালেন সদ্য ’মলোকাই চ্যালেন’ জয় করা বাংলার জলকন্যা। মনের গভীরে সপ্তসিন্ধু জয়ের ইচ্ছা জাগার কথাও শুনিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা সায়নী। মেয়ের এই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকায় থাকতে চান সায়নীর বাবা রাধেশ্যাম দাস ও মা রুপালিদেবীও।
রটনেস্ট ,ক্যাটলিনা ও ইংলিশ চ্যানেল জয়ের পর মাত্র দু’দিন আগেই সায়নী দাস জয় করেছেন মার্কিন মুলুকের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলোকাই চ্যানেল। ১৯ ঘন্টার বেশি সময় সাঁতরে মলোকাই চ্যানেল জয় করার কাহিনী বলার সময়েই সায়নী জানান ,এবার নিউজিল্যাণ্ডের কুক স্ট্রেইট জয় করাই তাঁর লক্ষ্য ও স্বপ্ন। মনের গহীনে রয়েছে সপ্তসিন্ধু জয়ের ইচ্ছা। এই প্রসঙ্গে সায়নী বললেন, সপ্তসিন্ধু জয়ের ব্যাপারে তাঁর আদর্শ হলেন মহারাষ্ট্রের সাঁতারু রোহন মোরে। সায়নীর কথায়, এই রোহন মোরেই গোটা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে একমাত্র সাতারু যিনি সপ্তসিন্ধু জয়ের কীর্তি গড়েছেন।
আরও পড়ুন: ইতিহাস বাংলার জলকন্যা সায়নীর! মোলোকাই চ্যানেল জয় করে সেরার সেরা এশিয়ান তিনিই
সায়নী এদিন এ-ও জানান, “৩ মে কালনার বাড়িতে ফিরেই তিনি প্রথম ’কুক স্ট্রেইট’ চ্যানেল জয়ের লক্ষে প্রস্তুতি শুরু করে দেবেন।কারণ, তার জন্যই ২০১৯ সালে তিনি চ্যানেল কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদনও করে রেখেছেন অগ্রিম। সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়ে গেলেই সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া শুরু করে দেবেন বলে সায়নী জানান। সপ্তসিন্ধু নিয়ে কথা বলার সময়ে সায়নী বলেন ,“ওয়ার্ল্ড ওপেন ওয়াটার সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনায় যাঁরা সাতটি চ্যানেল পার হতে পারেন তাঁরাই সপ্তসিন্ধু জয়ের শিরোপা পান। সপ্তসিন্ধুর মধ্যে রয়েছে ইংলিশ, ক্যাটলিনা, মলোকাই, সুগারু, জিব্রাল্টার, কুক স্ট্রেইট ও নর্থ চ্যানেল।"
সায়নীর দাবি, "এর মধ্যে ক্যাটলিনা ও ইংলিশ চ্যানেল আগেই তিনি জয় করে ফেলেছেন। আর দু’দিন মলোকাই চ্যানেল জয় সম্পূর্ণ করেছেন। সপ্তসিন্ধুর মধ্যে সবথেকে দীর্ঘতম মালোকাই।যা পেরোতে তাঁর ১৯ ঘন্টা ১০ মিনিট সময় লেগেছে বলে সায়নী জানান। একই সঙ্গে সপ্তসিন্ধু জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সায়নী বলেন, "সপ্তসিন্ধুর মধ্যে আরও চারটি চ্যানেল জয় করা তাঁর বাকি রয়েছে। সেইসব চ্যানেল জয়ের পর গর্বের সাথে সেখানই তিনি ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে ধরতে চান। তবে এখন তাঁর প্রথম লক্ষ নিউজিল্যান্ডের ’কুক স্ট্রেইট চ্যানেল’।
আরও পড়ুন: গয়না বন্ধক দিলেন বাবা-মা! হুগলির মেয়ে বিশ্বজয় করতে চললেন ফ্রান্সে
রাধেশ্যাম বাবু জানিয়েছেন, “আর্থিক প্রতিকুলতা বা সমস্যা যাই আসুক না কেন মেয়ে সায়নীর সমস্ত স্বপ্ন পূরণে আমি ও আমার স্ত্রী রুপালি বদ্ধপরিকর। দেশের সমস্ত ক্রীড়া প্রেমী মহিলারা আগামী দিনেও সায়নীর পাশে থাকবেন।" এই প্রত্যাশার কথা এদিনও রাধ্যশ্যাম বাবু বক্তব্যে উঠে এসেছে।
আগামী ৩ রা মে তিনি কালনার বাড়িতে তাঁরা এসে পৌঁছবেন। সায়নী জানালেন, "সপ্তসিন্ধুর মধ্যে আরও চারটি চ্যানেলের তাঁর জয় আমার বাকি রয়েছে। সেইগুলিকে জয় করে আমাদের ভারতের জাতীয় পতাকা গর্বের সাথে উত্তোলন করতে চাই।”