ফাইনাল হারের বদলা নিয়েই ফাইনালে পৌঁছেছে নিউজিল্যান্ড। সেমিফাইনালে রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারে শেষ হাসি হেসেছে কিউয়িরা। এমন জয়ে আবেগে আত্মহারা হয়ে যাওয়াই যায়। তার উপরে দলের জয়ের যদি অন্যতম কারিগর কেউ হয়, তাহলে তো উদ্দাম সেলিব্রেশন তাঁকেই মানায়।
ড্যারেল মিচেল উইনিং শট হাঁকানোর পরে ব্ল্যাক ক্যাপসদের ড্রেসিংরুমে আনন্দের জোয়ার। সকলেই উদ্দাম উল্লাসে মত্ত। তবে অদ্ভুতভাবে নিস্পৃহ রইলেন ম্যাচের অন্যতম হিরো জিমি নিশাম। যাঁর ১১ বলে ২৭ রানের ক্যামিও ইনিংস না থাকলে সম্ভবত জয় হাতছাড়া হত কিউয়িদের। সাপোর্ট স্টাফ থেকে বাকি ক্রিকেটাররা যেভাবে বন্য সেলিব্রেশনে মাতলেন সেই সময়েই ক্যামেরা আবিষ্কার করল জিমি নিশামকে। বেনজিরভাবে নিজেকে শান্ত রেখেছেন। শত কোলাহল থেকে যেন অনেকটা আলাদা। হাতের উপর হাত তুলে শান্ত হয়ে বসে রয়েছেন। যেন কিছুই হয়নি।
আরও পড়ুন: কোহলি-রোহিতদের ব্যঙ্গ করে নকল! সেমিফাইনালের আগে বড় বিতর্কে আফ্রিদি, দেখুন ভিডিও
শুধু জয়ের মুহূর্তই নয়, ক্রিকেটার এবং ম্যাচ আধিকারিকরা যখন ড্রেসিংরুমে হাঁটা লাগিয়েছেন। সেই সময়েই ফাঁকা শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে দেখা যায় চেয়ারে শূন্য দৃষ্টিতে আকাশে চেয়ে বসে রয়েছেন কিউয়ি সুপারস্টার।
হাজার উল্লাসের মধ্যেই নিশামের এমন ভঙ্গি স্বভাবতই ঝড় তোলে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাকিদের মত লাগামছাড়া উদযাপনে মাতলেন না, প্রশ্ন উঠে যায় সঙ্গেসঙ্গেই। নেট মাধ্যমেই ইংরেজ-বধের অন্যতম নায়ক এর জবাব দিয়েছেন। ইএসপিএন ক্রিকইনফো জিমি নিশামের ছবি শেয়ার করে লিখেছিল, "জিমি নিশাম নট নড়ন চরণ।" ট্যুইটারে সেই ছবি রিপোস্ট করে নিশাম ক্যাপশনে লেখেন, "দায়িত্ব শেষ? মনে হয় না!"
নিশামের এমন সংযত উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গিয়েছে দলের ব্যাটিং কোচ লিউক রঞ্চিকেও। "সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে পৌঁছনো সবসময় দারুণ একটা কৃতিত্ব। তবে এর অর্থ এখনও একটা ম্যাচ বাকি রয়ে গিয়েছে। সেটাই সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছে নিশাম।"
প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে পৌঁছেছে নিউজিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার অন্য সেমিফাইনালে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের বিজয়ীর মোকাবিলা করবে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই আপাতত নিউজিল্যান্ডের রাজত্ব চলছে। ২০১৫ এবং ২০১৯-এ পরপর দুবার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছিল।
আরও পড়ুন: তারকা ক্রিকেটারদের বারবার অভিযোগ! দায়িত্ব নিয়েই বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় কোচ দ্রাবিড়
২০১৫-য় অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে কাপ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়। ২০১৯-এ সুপার ওভারেও ইংল্যান্ড হারাতে পারেনি কিউয়িদের। শেষ পর্যন্ত দুর্বোধ্য নিয়মে জয়ী হয় ইংল্যান্ড। সেই পরাজয়েরই মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এছাড়াও প্ৰথমবার ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ও ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিউয়িরা।
নিউজিল্যান্ডের ফাইনালে ওঠা যে ফ্লুক নয়, তা-ই যেন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে প্রমাণিত।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন