Team India's t20 World Cup selection: বিশ্বকাপের আগে টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের জন্য প্রায় একবছর টিম ইন্ডিয়া তারুণ্যে নির্ভর দল নিয়ে খেলছিল। হঠাৎ করেই গত জানুয়ারিতে বদল এসেছিল। ইউ টার্ন নিয়ে বোর্ডের তরফে ফিরিয়ে আনা হয় বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার মত দুই সিনিয়র তারকাকে। টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের আগে শেষ যে আন্তর্জাতিক টি২০ সিরিজ ছিল সেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠের স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল কোহলি-রোহিত দুজনকেই। গত কয়েকটি সংস্করণের বিশ্বকাপেই ভারতের টপ অর্ডার মোক্ষম সময়ে সমস্যা তৈরি করেছিল। তাই আফগান সিরিজে দুই তারকাকে ফেরানোর পরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল রোহিত-বিরাটকে টপ থ্রিয়ের মধ্যে রেখেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যারিবীয় মুলুকে সম্পূর্ণ অন্য ধরনের পরিবেশে বিশ্বকাপ অভিযানে নামবে টিম ইন্ডিয়া।
ঘটনা হল, ভারত গত কয়েকটি বিশ্বকাপে যে ফর্মুলায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল, কম-বেশি সেই একই টোটকায় এবারেও মিশন-বিশ্বকাপে অংশ নেবে ভারত। কোহলি-রোহিতকে বাইরে রেখে নির্বাচকরা একটা সময়ে ঈশান কিষান, রুতুরাজ গায়কোয়াড, যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল এমনকি ঋষভ পন্থকেও পরীক্ষা করেছে। মিডল অর্ডারে ভারত সূর্যকুমার যাদবকে নিউক্লিয়াস ধরে তিলক ভার্মা, রিঙ্কু সিং, সঞ্জু স্যামসন, জিতেশ শর্মা, অক্ষর প্যাটেল, শিভম দুবেদের সুযোগ দিয়েছে।
২০২৩ বিশ্বকাপের সময় টি২০ বিশ্বকাপের পরিকল্পনা অনেকটাই পিছনের সারিতে চলে গিয়েছিল। তবে গোটা বিশ্ব জুড়ে টি২০ ক্রিকেটের ট্রেন্ড খতিয়ে দেখা বন্ধ হয়নি। যেখানে দেখা যায় টি২০ ক্রিকেটের অন্যতম পরীক্ষিত সত্য হল দলে যত বেশি সম্ভব বাঁ-হাতি তারকাদের উপস্থিতি। কারণ বাঁহাতিদের বিপক্ষেই বোলারদের সমস্যা তৈরি হয়। এই ফর্মুলাতেই গত অগাস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজ, এমনকি এশিয়ান গেমসেও ভারত বাঁহাতি বোঝাই দল গড়েছিল। ভারতের টপ অর্ডারের ৭ জনের পাঁচজনই ছিল বাঁহাতি।
তবে বর্তমান স্কোয়াডের পাঁচজন বাঁহাতি ব্যাটার রয়েছেন। তবে প্ৰথম একাদশে এঁদের মধ্যে যে কোনও দুজনকে জায়গা দেওয়া হবে। টপ ফোরে থাকবেন একজন। আর এতদিন যাঁকে ফিনিশারের ভূমিকায় রেখে এগোনো হচ্ছিল, সেই রিংকু সিং স্কোয়াডে জায়গাই পাননি।
২০২৩ বিশ্বকাপের আগে বোর্ডের নীতি ছিল ফরম্যাট মিক্স করে ক্রিকেটারদের বাছাই করা হবে না। তবে বিশ্বকাপে রোহিতের পাওয়ার প্লের পাওয়ার হিটিং এবং বিরাটের রান ক্ষুধা বোর্ডকে স্ট্র্যাটেজি পাল্টে ফেলতে বাধ্য করে। তারপর গত মার্চেই বোর্ডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, রোহিতই টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের নেতা হবেন।
হার্দিক পান্ডিয়াকে টি২০-র নেতা হিসেবে ধরে এগোনো হচ্ছিল বোর্ডের তরফে। তবে হার্দিকের অফ ফর্ম এবং ধারাবাহিকতার অভাব নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে টিম ম্যানেজমেন্টকে। রোহিতকে নিয়েও দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন নির্বাচকরা। গত চার আইপিএল সিজনে রোহিত একবার-ও মরশুমে ৪০০ প্লাস রান খাড়া করতে পারেননি। এই সিজনে রোহিত ৯ ম্যাচে ৩১১ করেছেন। তবে এর মধ্যে ১০৫ রানের অপরাজিত স্কোর-ও রয়েছে। তবে রোহিত নিজেকে উন্নত করেছেন স্ট্রাইক রেটের বিচারে। ১২০ থেকে ১৩২ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাট করা রোহিত চলতি সিজনে খেলছেন ১৬০.৩১ স্ট্রাইক রেট নিয়ে।
একইভাবে কোহলির ফর্ম নিয়ে কোনও সংশয়ই নেই। এবারেও ৫০০ প্লাস স্কোর করে কোহলির মুকুটে রয়েছে কমলা টুপি। তবে স্ট্রাইক রেট নিয়ে নিরন্তর আলোচনা ছিল। কোহলি যত আইপিএল মরশুমে খেলেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪৭.৪৯।
কোহলি-রোহিতকে নিয়ে কিছুটা বিশ্বাসের ওপরেই ভরসা রাখলেন নির্বাচকরা। এমন নয় যে কোহলি-রোহিতদের পাওয়ার প্লেতে দেখলে প্রতিপক্ষ বোলাররা দরদর করে ঘামবেন। মিডল অভারেও স্পিনাররা ভয় পাবেন না দুজনকে। সূর্যকুমার, শিবম দুবে, সঞ্জু স্যামসনদের বদলে বোলাররা বরং কোহলি-রোহিতদেরই ক্রিজে চাইবেন।
তবে সদিচ্ছা দুজনকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছে। এটা হয়ত দলে নির্বাচিত হওয়ার মূল মাপকাঠি নয়, তবে পুরোপুরি উপেক্ষাও করা যাবে না।প্রশ্ন হল, কোহলি-রোহিত কি টি২০ বিশ্বকাপে সত্যি সত্যি নিজেদের যোগ্যতায় জায়গা অর্জন করেছেন?