টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপে স্কটল্যান্ডকে দুরমুশ করে জিতেছে আফগানিস্তান। তারপরেই তালিবান নেতৃত্ব সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করল। যদিও রাজধানী কাবুলে সেরকম উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি।
তালিবান আফগান ভূমে ক্ষমতা দখলের পরে এই প্ৰথমবার ক্রিকেট মাঠে নেমে বিশাল হয়। এর আগে একাধিকবার তালিবানদের তরফে জানানো হয়েছিল, বিনোদনমূলক ক্ষেত্রে সেন্সরশিপ চালু হলেও, ক্রিকেট বরাবর ব্যতিক্রম। ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কোনওরকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না, এমনটা নিশ্চিত করেছিল তালিবান।
সোমবার রাতে আফগানিস্তানের জয়ের পরে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ টুইট করেন, "দলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের জন্য শুভকামনা রইল।" তালিবানদের কাতার অফিসের মুখপাত্র লিখেছেন, "এমনই সাফল্য রাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান বিষয়ক ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পড়ুক।"
আরও পড়ুন: ৭০০০ কোটিতে আইপিএলে দল গোয়েঙ্কার! দুই নয়া শহরের নাম-ও চূড়ান্ত
এছাড়াও রাষ্ট্রসঙ্ঘে নিযুক্ত তালিবান প্রতিনিধি সুহেল শাহিন টুইট করেন, "দারুণ খেলেছে ছেলেরা।" তবে সবথেকে বড় বার্তা এসেছে আনাস হাক্কানির কাছ থেকে। যিনি আবার হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান এবং আফগানিস্তানের বর্তমান গৃহমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির ভাই। তাঁর উচ্ছ্বাস মাখা টুইট, "আফগানিস্তান জিতে গিয়েছে।"
তালিবান নেতাদের উল্লসিত হওয়ার এই প্রতিচ্ছবি অবশ্য কাবুলের রাস্তায় ধরা পড়েনি। অতীতেও রশিদ খানদের জয়ে আনন্দের শোভাযাত্রা দেখেছে কাবুল। তবে রাজনৈতিক পালাবদলের আতঙ্কে সেই ছবি এবার অনুপস্থিত। অল্পবিস্তর আতশবাজি ফাটলেও চেনা কাবুলকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের জয়ে ভারতে কেন বাজি ফাটানো হচ্ছে! মেজাজ হারিয়ে বিস্ফোরণ শেওয়াগের
তালিবান বিরোধীরা অবশ্য বিশ্বকাপে আফগানদের জয়ে অন্য মাত্রা খুঁজে পেয়েছেন। আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তালিবান বিরোধী শক্তির অন্যতম মুখ আমেরুল্লা সালেহর বক্তব্য, রশিদ খানরা বিশ্বকাপের মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েই মাঠে নেমেছে। এমনকি মাঠে আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকাও নিয়ে খেলতে নেমেছেন আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা।
দেশ থেকে বিতাড়িত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেছেন, "আফগানিস্তান ক্রিকেট দলকে দেশবাসীর হৃদয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ওঁরা বুঝিয়ে দিয়েছে দেশ এখনও বেঁচে আছে। কারোর পরাধীন হয়ে নেই।"
ঘানি সরকারের পতন এবং আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থানে গোটা বিশ্বই হচকচিয়ে গিয়েছিল কয়েক মাস। এই ডামাডোলের মধ্যেও।আফগানিস্তানিদের মধ্যে যে এখনও ক্রিকেট প্রেম অটুট, বোঝা গিয়েছে সোমবার। আফগানিস্তানে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী নভেম্বরে বৈঠকে বসছেন আইসিসি কর্তারা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন