আফগানিস্তান: ১১৫/৫ (২০ ওভার)
বাংলাদেশ: ১০৫/১০ (১৭.৫/১৯)
CC Men's T20 World Cup 2024 Match Report super 8 Afghanistan vs Bangladesh: ঠিক যেন হিচককের থ্রিলার। পরতে পরতে রোমাঞ্চ। আর মোড় বদল, টুইস্ট। বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান সুপার ৮-এর শেষ ম্যাচ নাটকীয়তার চরমে পৌঁছল। এই ম্যাচের ফলাফলের ওপর ভাগ্য ঝুলে ছিল তিন-তিন দলের। আর ব্লকবাস্টার থ্রিলার জিতে ইতিহাস গড়ে সেমিতে পৌঁছে গেল আফগানিস্তান। রশিদ খানের ম্যাজিকে ভর করে আফগানরা বাংলাদেশকে হারাল ৮ রানে।
ম্যাচের অর্ধেক খতম হতে না হতেই বাংলাদেশের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। আফগানিস্তান স্কোরবোর্ডে ১১৫ তোলার পর বাংলাদেশকে সেমিতে পৌঁছতে হলে সেই টার্গেট চেজ করতে হত ১২.১ বলে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হারাতে ‘জোচ্চুরি’র পন্থা আফগানিস্তানের! বিতর্কের ঝড়ে উত্তাল সেমির লড়াই, দেখুন ভিডিও
লিটন দাস একা কুম্ভ হয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের হাল ধরে গেলেন। ওপেন করতে নেমে দলের অলআউট হয়ে যাওয়া ম্যাচে তিনি অপরাজিত থাকলেন ৪৯ বলে ৫৪ করে। তবে তিনিও আফগানিস্তানের রূপকথার থামাতে ব্যর্থ।
একরা সময় ম্যাচ হয়ে দাঁড়িয়েছিল লিটন দাস বনাম গোটা আফগানিস্তান দলের। ৭৩ বলে লক্ষ্যে পৌঁছতে হত টাইগারদের। বৃষ্টিতে বারবার ব্যাঘাত ঘটায় ডার্ক ওয়ার্থ লুইস নিয়মে ম্যাচে সংশোধিত টার্গেট দাঁড়ায় ১১৪-এ।
সেই টার্গেট নির্দিষ্ট ওভারে চেজ করতে না পারায় আগেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এর সম্মান রক্ষার জন্য বাংলাদেশ জিতলে অস্ট্রেলিয়া সরাসরি ত্রিনিদাদের বিমানে চাপত সেমিতে খেলার জন্য। তা হয়নি। উইকেট পতন অব্যাহত ঠেকেছে। এবং একসময় বাংলাদেশ ১০৫ রানে অলআউট হয়ে অস্ট্রেলিয়াকে আর সেমিতে পাঠাতে পারেনি।
১১৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে হিসেব কষেই নেমেছিল বাংলাদেশ। প্ৰথম ওভারেই নভিন উল হকের ওপর চড়াও হন লিটন। চার-ছক্কা হাঁকান শুরুর ওভারেই। দ্বিতীয় ওভারে ফারুখি এসে ফেরান তানজিদ হাসানকে। এরপরে নভিন উল হকের একটা স্পেলে নাজমুল শান্ত, সাকিবকে হারিয়ে পাওয়ার প্লের মধ্যেই বাংলাদেশ ২৩/৩ হয়ে যায়।
ফারুখি-নভিন যে সূচনা এনে দিয়েছিল আফগানদের, তা রশিদের ম্যাজিকে উথলে ওঠে। লিটন দাস অন্যপ্রান্তে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গিতে ব্যাটিং করে গেলেও রশিদ নিজের প্ৰথম ৩ ওভারেই ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন। সৌম্য সরকার, তৌহিদ হৃদয়কে পরপর দুই ওভারে ফেরানোর পর তৃতীয় ওভারের শেষ দুই বলে রশিদের শিকার মাহমুদউল্লাহ এবং রিশাদ হোসেন। এরপরে তানজিম সাকিব এবং তাসকিন আহমেদ দুজনে ১৯ বল কাটিয়ে লিটনকে সঙ্গ দিয়ে ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়েছিলেন। তবে গুলবাদিন তানজিমকে ফেরানোর পর নভিন উল হক ডেথ ওভারে তাসকিন, মুস্তাফিজুরকে আউট করে ইতিহাস গড়া নিশ্চিত করেন।
তার আগে আফগানিস্তান বুকে বল পেয়েছিল বাংলাদেশ মাত্র ১১৫ রানে আফগানিস্তানকে আটকে দেওয়ায়। কিংসটাউনের স্লো পিচে আরও একবার ব্যাটিং ব্যর্থতার সঙ্গী হল আফগানিস্তান। আর আরও একবার আফগানদের মুখ রক্ষা করে গিয়েছিল রহমনুল্লাহ গুরবাজের ম্যাচ বাঁচানো ৫৫ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। অন্য ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান (১৮), আজমাতুল্লা অমরজাই (১০) বাদে একমাত্র রশিদ খান (১৯) দুই অঙ্কের রানে পৌঁছন। শেষ বলে রশিদ ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ১১৫-এর স্টেশনে এনে ফেলেছিলেন। রিশাদ হোসেন নজর কাড়লেন আবার-ও। তুললেন ৩ উইকেট।
তবে এত অল্প রানে বেঁধে রেখেও কাজের কাজ হল না। ইতিহাস গড়া থেকে আফগানদের রুখতে পারল না টাইগার শিবির।