ভারত: ১৭১/৭
ইংল্যান্ড: ১০৩/১০
India vs England Match Report: প্রতিশোধ নম্বর দুই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্ৰথম প্রতিশোধ ভারত নিয়েছিল সুপার-৮'এ হারিয়ে। সিডনিগামী বিমানের টিকিট নিশ্চিত করে দিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। এবার সেই একই ভঙ্গিতে হিথরোর প্লেনের টিকিট কনফার্ম করে দিলেন রোহিত শর্মারা। ইংল্যান্ডকে মাটিতে শুইয়ে হারিয়ে ভারত ফাইনালে চলে গেল। অপরাজেয় দল হিসেবে ভারত ফাইনালে মোকাবিলা করবে দুর্ধর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে।
গায়ানায় ম্যাচ শুরু হতে দেরি। ম্যাচ শুরু হওয়ার পরেও ঘন্টা খানেক খেলা বন্ধ দামাল বৃষ্টিতে। সেসব সামলে ভারত স্লো থমকে আসা পিচে পিষে মারল ইংরেজদের। রোহিত-সূর্যকুমারদের বিক্রমে ভারত স্কোরবোর্ডে ১৭১ তুলে দিয়েছিল। সেই টার্গেট চেজ করতে নেমেই অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করে বসল ইংল্যান্ড।
ওভার পিছু সাড়ে ৮ রান তাড়া করার চ্যালেঞ্জ বেশ ভালোভাবে নিয়েছিলেন জস বাটলাররা। অর্শদীপ সিংয়ের দ্বিতীয় ওভারেই বাটলার তিনটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে পাওয়ার প্লের চতুর্থ ওভারেই অক্ষরকে নিয়ে এসে মাস্টারস্ট্রোক দেন ক্যাপ্টেন রোহিত। আর অক্ষর নিজের প্ৰথম বলেই ফিরিয়ে দেন ক্রমশ বিপজ্জনক হতে থাকা বাটলারকে। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বলের বাউন্সে ঠকে গিয়ে পন্থের হাতে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাটলার। সেই শুরু।
তারপর বুমরা নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই দুর্ধর্ষ অফ কাটারে বোল্ড করবেন ফিল সল্টকে। অক্ষর নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্ৰথম বলে ফের একবার বোল্ড করবেন জনি বেয়ারস্টোকে।
পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট খুঁইয়ে ফেলার পর ইংল্যান্ডের আশা বেঁচে ছিল হ্যারি ব্রুক-মঈন আলিদের ওপর। তবে মঈন আলি স্ট্যাম্প আউট হওয়ার পরই নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের ফাইনালে পা রাখা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। পাওয়ার প্লে ছিল অক্ষরের, পাওয়ার প্লের পর পুরোটাই কুলদীপ যাদবের।
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ঘূর্ণির প্রশ্নপত্র নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কুলদীপ। আর কুলদীপের স্পিনের কাছে দুমড়ে মুচড়ে যায় ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটারদের প্রতিরোধ। কুলদীপ নিজের স্পেলে পরপর ফেরান স্যাম কুরান, হ্যারি ব্রুক, ক্রিস জর্ডনকে।
এরপরে শেষমেষ ইংরেজরা ধসে গিয়েছেন ১০৩ রানে। ভারত-ও ৬৯ রানে জিতে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে।
বৃষ্টিতে খেলা শুরু হয়েছিল বেশ কিছুক্ষণ বিলম্বে। মেঘলা আবহাওয়ার সতেজ পিচে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন জস বাটলার। কোহলি আবারও ব্যর্থ হলেন। রিস টপলের লেন্থ বল মিস করে বোল্ড হন তারকা। রোহিত শুরুর জড়তা কাটিয়ে ছন্দে ফেরেন দ্রুতই। আদিল রশিদ, আর্চারদের বিপক্ষে নিজের ট্রেডমার্ক শট খেলে যান ক্যাপ্টেন। পন্থও ক্রিজে নেমেই সঙ্গেসঙ্গেই সাজঘরে ফেরেন। পাওয়ার প্লেতেও দুই উইকেট হারায় ভারত।
সূর্যকুমার ক্রিজে নেমে বেশ ভালো পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন ক্যাপ্টেন রোহিতের সঙ্গে। নিজের স্টাইলেই একের পর এক ইংরেজ বোলারকে ওড়াতে থাকেন স্কাই। ঠিক যে সময় দুজনের জুটি জমে ক্ষীর, সেই সময়েই বৃষ্টি নামে। প্রায় একঘন্টা পরে পুনরায় শুরু হওয়ার পরেও টানছিলেন দুজনে।
বাটলার বৃষ্টির পরে দুই প্রান্ত থেকে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শানাতে থাকেন। লিভিংস্টোন এবং আদিল রশিদকে লেলিয়ে দেন তিনি। রোহিত ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তবে আদিল রশিদ ম্যাচে ফেরান ইংল্যান্ডকে। রোহিতকে (৩৯ বলে ৫৭) গুগলিতে বোল্ড করে দেন। ৭৩ রানের জুটিতে ভাঙন ধরে এভাবেই। জোফরা আর্চারের স্লোয়ারে ঠকে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন সূর্যকুমারও (৩৬ বলে ৪৭)। শিভম দুবে পরের বলেই বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন।
পরপর তিন উইকেট হারিয়ে ভারত অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। তবে হার্দিক পান্ডিয়ার ১১ বলে ২৩ রানের ক্যামিও এবং ডেথ ওভারে জাদেজা (৯ বলে ১৭)-অক্ষর (৬ বলে ১০) মিলে ভারতকে ১৭০-এর গন্ডি পার করে দেন।