ভারত: ১৮৪/৬
বাংলাদেশ: ১৪৫/৬ (১৫ ওভার)
ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ল ভারতের। স্কোরবোর্ডে ১৮৪ তোলার পরেও যে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে পৌঁছে যাবে ম্যাচ, বিরাট থেকে রোহিত- কেই বা ভাবতে পেরেছিলেন। লিটন দাসের রোমহর্ষক পাওয়ার হিটিং, শেষদিকে, তাসকিন-সোহানের ১৯ বলে ৩৭ রানের পার্টনারশিপ ভারতকে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে দিয়েছিল। তবে চাপের মুখে অভিজ্ঞতারই জয় হল শেষমেশ। ভারত ১৮৪ তোলার পরে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৬ ওভারে ১৫১। সেই রান চেজ করে বাংলাদেশ নির্ধারিত ১৬ ওভারে তুলল ১৪৫। ৫ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে কার্যত ছুটি হয়ে গেল বাংলাদেশের। অন্যদিকে, গ্রুপের শীর্ষে পৌঁছে ভারত আপাতত সেমিতে যাওয়ার বিষয়ে সবথেকে বড় দাবিদার।
১৮৫ টার্গেট তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ একসময় লিটন দাসের পাওয়ার হিটিংয়ে ভর করে অঘটন ঘটানোর স্ক্রিপ্ট রেডি করে ফেলেছিল। আর্শদীপ থেকে শামি হোক বা অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর- লিটনকে থামাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিল ভারতীয় বোলাররা। মাত্র ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি করে লিটন রোহিতের কপালে চওড়া ভাঁজ ফেলে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বারবার নিষেধেও কর্ণপাত নয়! কার্তিকের ওপর মাঠেই মেজাজ হারালেন কোহলি, দেখুন আগুনে ভিডিও
তবে বৃষ্টি এসেই বাংলাদেশের দুর্ধর্ষ রান চেজ করার ছন্দে ব্যাঘাত ঘটিয়ে যায়। বৃষ্টি এসে যখন খেলা বন্ধ হয় বাংলাদেশ তখন বিনা উইকেটে ৭ ওভারে ৬৬। সেই সময় খেলা বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশই জয়ের শিরোপা পড়ত। ডার্কওয়ার্থ লুইস নিয়মে বাংলাদেশ তখন জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রানের থেকেও ১৭ রানে এগিয়ে ছিল।
তবে বৃষ্টি বন্ধ হতেই ডিএলএস নতুন সমীকরণ নিয়ে হাজির হয় বাংলাদেশের সামনে। চার ওভার কমিয়ে বাংলাদেশের জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ১৫১-এ। বৃষ্টিই যেন ভারতের কাছে ত্রাতা হিসাবে আবির্ভূত হয়।
আরও পড়ুন: টি২০ বিশ্বকাপে একনম্বরের সিংহাসনে কোহলিই! ভেঙেচুরে একাকার করলেন কিংবদন্তির রেকর্ড
হঠাৎ খেলায় বিরতিতে মনোসংযোগে যেন ছেদ পড়ে। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হতেই দুই বাংলাদেশি ওপেনার আউট হয়ে যান। প্ৰথমে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনীতে মিড উইকেট থেকে ডিরেক্ট থ্রোয়ে লিটন দাসকে (২৭ বলে ৬০) আউট করে যান কেএল রাহুল। তারপরে মহম্মদ শামি ফেরান শান্তকে।
বিনা উইকেটে ৬৮ থেকে একসময় পরপর উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ১০৮/৬ হয়ে যায়। আর্শদীপ সিং একই ওভারে ফেরান ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেনকে। ১৩তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোসাদ্দেক হোসেন এবং ইয়াসির আলি।
তবে এরপরেই ম্যাচে ট্যুইস্ট সমেত আবির্ভূত হয় তাসকিন (৭ বলে ১২)-নুরুল হাসান (১৪ বলে ২৫) জুটি। দুজনে শেষদিকে ৩৭ রান যোগ করে ম্যাচ কার্যত ভারতের মুখ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। শেষ তিন ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪৩ রান। ১৪ তম ওভারে আর্শদীপ ১২ রান খরচ করার পরে হার্দিকের হাতে ১৫ তম ওভারে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রোহিত। চার-ছক্কা হজম করে হার্দিক সেই ওভারেই ১৫ রান খরচ করে বসায়, শেষ ওভারে জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ২০ রানে।
শেষ ওভারে চার-ছক্কা হজম করলেও ২০ রান ডিফেন্ড করতে সমস্যা হয়নি তরুণ আর্শদীপ সিংয়ের।
আরও পড়ুন: কোহলিকে চোখের দেখা দেখতে বিশ্বকাপে চিনা সমর্থক! স্পষ্ট হিন্দিতে জানালেন ভালবাসা, ভিডিও দেখুন
তার আগে টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতকে বড়সড় টার্গেটে পৌঁছে দেয় বিরাট কোহলি এবং কেএল রাহুলের হাফসেঞ্চুরি। সূর্যকুমার যাদবও ১৪ বলে ৩০ রানের ইনিংসে বিনোদন দিয়ে যান। ডেথ ওভারে পরপর ভারত দীনেশ কার্তিক, অক্ষর প্যাটেল, হার্দিক পান্ডিয়ার উইকেট খুঁইয়ে চাপের মুখে পড়ে যায়। তবে অশ্বিনের ৬ বলে ১৩ রান ভারতের ইনিংস ভাল জায়গায় পৌঁছে দেয়।