South Africa vs Bangladesh Match: সেই একই ভেন্যু। একই ফলাফল। লো স্কোরিং থ্রিলার আবার-ও দেখল টি২০ বিশ্বকাপ। সেই থ্রিলারে তীরে এসে তরি ডুবল বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অভাবনীয়ভাবে বিশ্বকাপের মত মঞ্চে হারানোর সুযোগ চলে এসেছিল বাংলাদেশের কাছে। প্রোটিয়াজদের মাত্র ১১৩ রানে আটকে রাখার পর ফিনিশিং পোডিয়ামে দাঁড়ানোর বিষয়ে ফেভারিট ছিল টাইগাররা। তবে মাত্র ৪ রান দূরেই থেমে যেতে হল বাংলাদেশকে।
২৪ ঘন্টা আগেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের রোমহর্ষক লড়াই টাটকা। যেখানে মাত্র ১১৯ রান ডিফেন্ড করে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই ম্যাচের যেন রিপিট টেলিকাস্ট দেখল বিশ্বকাপ। প্ৰথমে ব্যাটিং করে অল্প রানে আটকে যাওয়া। তারপর শক্তিশালী বোলিংয়ে সেই রান ডিফেন্ড করা।
সোমবার বাংলাদেশের কাছে টার্গেট ছিল আরও কম মাত্র ১১৪। সেই রান চেজ-ই বেপথু হয়ে গেল ইনিংসের গতির ক্যালকুলেশনের ভুলে। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ছিল ৮৩/৪। ৩০ বলে তখনও দরকার ছিলো ৩১ রান। বল প্রতি এক রান এমন সমীকরণ থেকেই পা হড়কে গিয়েছিল পাকিস্তানের। সেই একই কাণ্ড ঘটল বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও। তবে ১৬ তম ওভারে আনরিখ নকিয়া এবং ১৭তম ওভারে রাবাদার ওভার-ই ম্যাচের ফারাক গড়ে দিল। নকিয়া-রাবাদা মিলে দুজনে দুই ওভারে দিলেন মাত্র ৬ রান। রাবাদা সেই ওভারেই সবথেকে বড় ধাক্কা দেন ক্রিজে টিকে যাওয়া তৌহিদ হৃদয়কে ফিরিয়ে।
শেষ দুই ওভারে তাই যাবতীয় চাপ জুড়ে বসে বাংলাদেশের কাঁধে। ২ ওভারে টার্গেট দাঁড়ায় ২১ রানের। একই সিচুয়েশনে একদিন আগে একই আস্কিং রেটের চ্যালেঞ্জ ডেথ ওভারে হাজির হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। তবে প্রোটিয়াজদের সমস্যা হয়ে গিয়েছিল দলের দুই স্ট্রাইক বোলার রাবাদা এবং নকিয়ার ওভারের কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায়। তাই অনভিজ্ঞ বার্টম্যান এবং স্পিনার কেশব মহারাজের হাতেই ছিল প্রোটিয়াজদের ভরসা। বাংলাদেশের ফিনিশার মাহমুদউল্লাহ-র ওপরেই দায়িত্ব ছিল দলকে তীরে নিয়ে আসার।
বার্টম্যান ৭ রান খরচ করার পর শেষ ওভারে কেশব মহারাজকে ১৩ রান ডিফেন্ড করতে হত। শেষ ওভারের প্ৰথম দুই বলে মাত্র ৪ ওঠার পর বিগহিট নিতেই হত ক্রিজে থাকা ব্যাটারদের। মহারাজের ফ্লাইটে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন জাকের আলি। পঞ্চম বল স্ট্রাইক পেয়েই দলকে জেতানোর শেষ সুযোগ পেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। তবে মহারাজের হাত ফসকে বেরোনো লো ফুলটস সোজা গিয়ে জমা পড়ে ক্যাপ্টেন মার্করামের হাতে।
শেষ বলে টার্গেট দাঁড়ায় ৬ রানের। ক্রিজে নামা তাসকিন আর দলকে ফিনিশিং লাইন পার করতে পারেননি।
স্লো সারফেসে বাংলাদেশের পক্ষে ১১৪ রান চেজ করা যে সহজ হবে না, তা অনুমেয় ছিল। তবে বাংলাদেশ কিন্তু ভরসা জুগিয়েছিল। তানজিদ হাসান আউট হয়ে গেলেও ক্রিজে বেশ খানিকটা সময় বেঁচে ছিলেন ক্যাপ্টেন শান্ত। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৯ তুললেও বাংলাদেশ হারিয়েছিল মাত্র ১ উইকেট। তবে পাওয়ার প্লে খতম হতেই লিটন ফেরেন কেশব মহারাজের প্ৰথম ওভারে। নকিয়া নিজের প্ৰথম ওভারেই সাকিবকে তুলে দেন দেড়শো কিমির শর্ট বলের ধাক্কায়। নিজের দ্বিতীয় ওভারে সেই নকিয়াই একইভাবে হার্ড লেংথের বলে ফেরান ক্যাপ্টেন শান্তকে। ৫০/৪ হয়ে যাওয়ার পরেই আসল চাপ টের পেতে থাকে টাইগাররা।
তবে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহর ৪৪ রানের পার্টনারশিপ ম্যাচ প্রায় বের করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে সেই ডেথ ওভারে সব এলোমেলো হয়ে গেল নকিয়া রাবাদার সেই দুই ওভারে।
টসে জিতে এমন স্লো সারফেসে দক্ষিণ আফ্রিকান নেতা আইডেন মার্করাম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত তার আগে বুমেরাং হয়ে গিয়েছিল। পাওয়ার প্লের মধ্যেই ২৩/৪ হয়ে যায় তানজিদ সাকিব, মুস্তাফিজের ওপেনিং স্পেলে। এমন অবস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকা একশো পেরোতে পারবে কিনা সংশয় ছিল। সেই সংশয় দূর করে অবশ্য ডেভিড মিলার-হেনরিখ ক্ল্যাসেনের ৭৯ রানের পার্টনারশিপ প্রোটিয়াজদের মুখ রক্ষা করে গিয়েছিল। ক্ল্যাসেন ডেথ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৪৬ করে যান। মিলারের অবদান ৩৮ বলে ২৯ রান।