Australian media response: ক্রিকেট বিশ্বটা যেন তাদের গোলাম। বহুবার বিশ্বক্রিকেটে ভালো ফলাফল করা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার এবং মিডিয়ার একাংশের হাবভাবটা তেমনই। এবারে টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার ৮ পর্বে ভারতের কাছে হার তাই সহজে মেনে নিতে পারছে না অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া। অবশ্য তারা আগেই আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল। তবে, এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠলেও আফগানিস্তান ক্রিকেট দুনিয়ায় এখনও ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। সেই কারণে, অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ার যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়েছে ভারতের ওপর। টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিয়ে তারা এখন ভারতকে যা খুশি তাই বলা শুরু করেছে। এমনকী, নাচতে না জানলে উঠোন বেঁকা কায়দায় ভারতের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে আইসিসিকেও দোষারোপ করছে।
ছয়টি বিশ্বকাপ, একটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, একটি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, দ্বিদলীয় টুর্নামেন্টে বারবার প্রায় সব দলের ওপর অতুলনীয় আধিপত্য, ক্রিকেট দুনিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার মত সাফল্য গত তিন দশকে কারও নেই। বহুদলীয় টুর্নামেন্টে তারা যে গ্রুপে থাকে, সেখানেই ফেভারিট ধরা হয়। তবে, সব হিসেব এবার গোলমাল হয়ে গিয়েছে। আফগানিস্তানের দৃঢ়তা, দৃঢ় সংকল্প এবং কৌশল- অনুকূলে থাকা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পতন ঘটিয়েছে। রশিদ খানের দল ক্যাঙ্গারু বাহিনীকে ২১ রানে হারিয়ে গ্রুপ ১-তে অস্ট্রেলিয়ার হারের সূচনা ঘটিয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া অবশ্য তখনও ভাবতে পারেনি যে তাদের সেমিফাইনালের আগেই টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে হবে। ভেবেছিল, ভারতকে অনায়াসে হারিয়ে দেবে। যেমনটা, কয়েক মাস আগে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে করেছিল। কিন্তু, রোহিত শর্মার ব্যাটিং তাণ্ডব অস্ট্রেলিয়ার সেই স্বপ্নের আগুনে জল ঢেলে দিয়েছে। বাকি আগুনটা নিভিয়ে দিয়েছে কুলদীপ যাদবের স্পিন আর কবজির জাদু। এই হারের পর, পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়ায় যে অস্ট্রেলিয়ার মরণ-বাঁচন আফগানিস্তান আর বাংলাদেশ ম্যাচের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ম্যাচে আফগানিস্তানকে বাংলাদেশ হারাতে পারলে অস্ট্রেলিয়ার একটা আশা ছিল। সেসব মাথায় রেখে অজিদের অধিনায়ক মিচেল মার্শ খোলাখুলি ‘কাম অন বাংলাদেশ’ বলতেও পিছপা হননি।
আরও পড়ুন- সেমিতে না খেলেই ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা পোঁছতে পারে বিশ্বকাপ ফাইনালে! ICC-র নিয়ম ঘিরে হৈচৈ
কিন্তু, সেই খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টা শেষপর্যন্ত কাজ দেয়নি। আফগানিস্তান ডিএলএস পদ্ধতিতে আট রানে বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে প্রবেশ করেছে। এই হার সহ্য করতে না পেরে অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার যাবতীয় আলোচনার বিষয়বস্ত এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে- বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন আফগানিস্তানের চোট্টামি, আর আইসিসির সময়সূচি। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম রীতিমতো গল্পের আকারে বোঝানোর চেষ্টা করছে, আইসিসির সময়সূচি কীভাবে ভারতকে সুবিধা দিয়েছে। আর, অস্ট্রেলিয়াকে বিপাকে ফেলেছে। গুলবাদিনের নাটক বা আফগানিস্তানের প্রহসনের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে বলেও লেখার মধ্যে দিয়ে চোখের জল ফেলছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রগুলো। যেন ম্যাচটা বাংলাদেশের নয়, অস্ট্রেলিয়ারই ছিল!