২০০২ এশিয়ান গেমসে ভারতের পদক সংখ্যা ছিল ৩৬। ২০১৪ সালে, সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৫৭। ২০২৩-এ সেটাই সেঞ্চুরি করেছে। যেন একটা বিরাট লাফ। কীভাবে এই লাফ সম্ভব হল? তার উত্তর রয়েছে হ্যাংজুতে পদকপ্রাপ্ত ২৫৬ জন ভারতীয় ক্রীড়াবিদের অকথিত কাহিনিতে। যা খুঁজে বের করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। রীতিমতো সিরিজ আকারে তা প্রকাশ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, ৬৫ শতাংশ পদকজয়ীর পরিবারের বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকার কম। পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের ৩৩ শতাংশ গ্রামীণ ভারতে বেড়ে উঠেছেন। তার পরও স্পোর্টিং ইকোসিস্টেমের কারণে তহবিল এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা এই সব ক্রীড়াবিদদের কাছে সময়মত এবং দক্ষতার সঙ্গে পৌঁছেছে। যার পিছনে অন্যতম কারণ হল, টার্গেট অলিম্পিক পডিয়াম স্কিম (TOPS)-এর মত সরকারি নীতি। আর, প্রধান অলাভজনক সংস্থাগুলোর সময়োপযোগী হস্তক্ষেপ।
এবছর বরাদ্দ ছিল ৩৩৯৭ কোটি টাকা। শুধু এবছরই নয়, ২০১৪-১৫ থেকেই কেন্দ্রের খেলাধুলার জন্য বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তহবিল বৃদ্ধি করা হয়েছে বাজেট অনুসারে এবং প্রয়োজন অনুসারে। যার ফলে পদকজয়ী ক্রীড়াবিদরা বিশ্বের যে কোনও জায়গায় শীর্ষস্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে অ্যাক্সেস পেয়েছেন। বিদেশি কোচদের দক্ষতায় উপকৃত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য স্বাধীনতা পেয়েছেন।
এশিয়ান গেমস কোনওভাবেই অলিম্পিকে সাফল্যের মাপকাঠি নয়। আর তাই, হ্যাংজুর মত একগুচ্ছ পদক প্যারিস অলিম্পিক থেকেও আসবে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। প্যারিসে এবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে অলিম্পিকের আসর বসবে। তবে, আশার কথা হল যে, হ্যাংজুতে পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮৮ ভারতীয় ক্রীড়াবিদের বয়স এখনও ২৩ বছরের কম। সংখ্যাটা মোট পদকপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদের ৩৪ শতাশ। ফলে, ভবিষ্যতেও অলিম্পিকে ভারতের পদক জয়ের আশা থাকছে।
আরও পড়ুন- এশিয়াডে এনেছেন পদক, জানেন এই খেলোয়াড়দের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ঠিক কেমন?
সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, স্থানীয় কোচরা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের তুলে ধরতে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন। তাঁরাই উচ্চস্তরে প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের পৌঁছে দিয়েছেন। যার ফলে, এই দেশ বহু প্রতিভাবান খেলোয়াড় পাচ্ছে, আর ভবিষ্যতেও পাবে। যেমন, প্রাক্তন আন্তর্জাতিক হকি খেলোয়াড় প্রীতম সিওয়াচ ২০০৪ সালে তাঁর স্বামীর সঙ্গে একটি একাডেমি শুরু করেছিলেন। তাঁর একাডেমি থেকে উঠে এসে হ্যাংজুতে পদক জিতেছেন নিশা ওয়ার্সি ও নেহা গয়াল। রোয়িং কোচ ইসমাইল বেগ বক্স রাজস্থানে রোয়িং প্রশিক্ষণ দেন। হ্যাংজু এশিয়াডে রাজস্থানের আট সেনা জওয়ান পদক পেয়েছেন। একইভাবে তিরন্দাজিও এভাবে খেলোয়াড়দের উঠে আসার সাক্ষী হয়েছে।