David Johnson dies: জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা ডেভিড জনসন চরম দুঃখজনক অধ্যায়ের সাক্ষী থাকলেন। বেঙ্গালুরুর এক এপার্টমেন্টের চার তলার ব্যালকনি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের তরফে জানা গিয়েছে সঙ্গেসঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাঁচানো যায়নি।
কোঠানুর থানার পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, জনসন হেননুরে নিজের এপার্টমেন্টের চার তলা থেকে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। শামপুরা মেইন রোডে আম্বেদকর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে জনসনের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পুলিশের তরফে আরও বলা হয়েছে, এলকোহল আসক্তির জন্য তিনি মোটেই ভালো ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী এবং তিন সন্তান রয়েছে।
তাঁর ঘনিষ্টবৃত্তের তরফে বলা হয়েছে, জনসন গত কয়েক বছর ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হতে হত তাঁকে। গত সপ্তাহে টানা হাসপাতালে কাটাতে হয় তাঁকে। মাত্র দিন তিনেক আগেই ছাড়া পেয়েছিলেন হাসপাতাল থেকে।
জনসনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন অনিল কুম্বলে। টুইটারে জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং কোচ লিখেছেন, "ক্রিকেটীয় সতীর্থ জনসনের মৃত্যুর খবরে আমি মর্মাহত। পরিবারের জন্য আন্তরিক সমবেদনা রইল। খুব দ্রুত চলে গেলে 'বেনি'.."
জানা গিয়েছে আর্থিকভাবে মোটেও স্বচ্ছল ছিলেন না জনসন। তাঁর পরিবারের তরফে প্রায়ই হাত পাততে হত বন্ধু-বান্ধবদের কাছে।
কর্ণাটকের হয়ে ধারাবাহিকভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলার পর ১৯৯৬-এর বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে ফিরোজ শাহ কোটলায় জনসন সর্বপ্রথম টেস্ট অভিষেক ঘটান জাতীয় দলের জার্সিতে। এরপরে ভারতের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও গিয়েছিলেন। দারবান টেস্টের প্ৰথম একাদশে জায়গাও করে নিয়েছিলেন। সেটাই তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ খেলা।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেও জনসন কর্ণাটকের হয়ে ২০০১/০২ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যান। নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে কর্ণাটকের পেস আক্রমণ ছিল ভারত সেরা। ডোড্ডা গণেশ, ভেঙ্কটেশ প্রসাদ, জাভাগল শ্রীনাথের সঙ্গে এই পেস ব্যাটারির অংশ ছিলেন জনসন-ও।
২০০৯-এ কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার তরফে কর্ণাটক প্রিমিয়ার লিগ চালু করা হয়। তখন জনসন অবসর ভেঙে ফিরে আসেন। খেলেন বেলাগাভি প্যান্থার্স-এর হয়ে।
এরপরে টানা ছয় বছর ব্রেক নেন। এই সময়ে বিসিসিআইয়ের ম্যাচ অফিসিয়ালসদের অংশও ছিলেন। ২০১৫-য় ফের একবার কর্ণাটক প্রিমিয়ার লিগে অংশ নিয়ে পাঁচটি ম্যাচ খেলেন। প্ৰথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর অদ্ভুত অদ্ভুত সমস্ত কাজে লিপ্ত থাকতেন বেঁচে থাকার তাগিদে। চেন্নাইয়ে পাড়ি দিয়ে পরে কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার সচিব ব্রিজেশ প্যাটেলের ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে আসেন কর্ণাটকে।
এরপরে আর্থিক অনটন তাঁকে পিছু ছাড়েনি। বর্তমানে যে ফ্ল্যাটে তিনি থাকেন, সেই ফ্ল্যাট কিনে দেওয়া হয়েছিল চ্যারিটি ম্যাচের আয়োজন করে। গত কয়েকবছর ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন জায়গায় কোচিংও করাতেন তিনি। তবে বিভিন্ন কারণে তাঁর কোচিং কেরিয়ার-ও দীর্ঘায়িত হয়নি।