প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। সেখান থেকে যে জেতা সম্ভব, তা ভাবতেই পারেননি কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত। টিম ইন্ডিয়া শুধু অসাধ্য সাধনও করেননি, দেশের বাইশ গজে বিপ্লব এনে দেয়। ঠিক ৩৭ বছর আগে এমন একটা দিনেই ক্রিকেট বিশ্বের সিংহাসনে বসেছিল ভারত। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা উত্তাল হয়ে যায় সেই জয়ে। বর্ষপূর্তির ঠিক আগেই অতীতের স্মৃতিরোমন্থন করতে গিয়ে শ্রীকান্ত বলছিলেন, এই ম্যাচ যে ইন্ডিয়া জিতবে, তা দূরতম কল্পনাতেও কেউ আনেনি।
স্টার স্পোর্টসের তামিল শোয়ে এসে শ্রীকান্ত বলছিলেন, "ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওই দুর্ধর্ষ ব্যাটিং লাইন আপ দেখে আমরা আশাই করিনি সেই ম্যাচে আমরা জিতব।"
কিন্তু খেলা ঘোরে কপিল দেবের পেপ টকে। কীভাবে! জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা জানাচ্ছিলেন, "কপিল কখনই বলেনি আমরা জিততে পারি। তবে ও একটাই কথা বলেছিল যে আমরা মাত্র ১৮৩ রানে আউট হয়ে গিয়েছি। তবে আমাদের সামর্থ্যের অনুযায়ী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই ম্যাচ আমরা সহজে ছাড়বো না।" তারপরে পুরোটাই ইতিহাস।
১৮৩ রান বোর্ডে তুলেও ভারত প্রবল শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৩ রানে পরাজিত করে। ১৪০ রানে শেষ হয়ে যায় ক্যারিবিয়ান দের যাবতীয় প্রতিরোধ।
শ্রীকান্ত বলছিলেন, সেই জয় দেশের ক্রিকেটের জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিল। "সেই সময় বিশ্বক্রিকেট শাসন করত ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও অন্যান্যরা। আন্ডারডগ থেকেই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।"
খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর শ্রীকান্ত নির্বাচকমণ্ডলীর চেয়ারম্যানও হন। তিনি বিশ্বকাপ জয়ের প্রসঙ্গে বলেন, ফাইনালে জয় হোক বা হার, সেই সময়ে বিসিসিআই প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। "ফাইনালের আগের দিন বোর্ডের সমস্ত শীর্ষ কর্তাদের এক বৈঠক হয়। সেই মিটিংয়ে জয়েন্ট সেক্রেটারি থেকে সকলেই ছিলেন। ওরা বলেছিল, ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করো না। তোমরা যে এতদূর এসেছ, এটাই দারুণ কৃতিত্বের বিষয়। আগামীকাল তোমরা জেত অথবা হার, প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।" জানাচ্ছিলেন শ্রীকান্ত।
ফাইনালে প্রথমবার খেলতে নেমে ভারত একদমই চাপে ছিল না। প্রাক্তন তারকা জানালেন, "আমরা কোনো চাপই অনুভব করিনি। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফেভারিট ছিল। ওরা ১৯৭৫, ১৯৭৯ এর চ্যাম্পিয়ন দল। বিশ্বক্রিকেটের একচ্ছত্র শাসক ছিল। তাই আমরা ভেবেছিলাম, ফাইনালে উঠেছি, এটাই ঢের!"