Advertisment

টিম ইন্ডিয়ায় বাতিলের পথে একের পর এক পেসার! বাংলার সিমার এবার হয়ত টেস্ট দলে

পুরো বোলিং বিভাগ ঢেলে সাজাতে চাইছে টিম ইন্ডিয়া

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

আইপিএল ২০২২-এ শ্রেয়স আইয়ারকে ক্রিজে দাঁড় করিয়ে বোল্ড করেছিলেন উমরান মালিক। ভয়ানক পেসে ধেয়ে আসা ইয়র্কার ছিটকে দিয়েছিল কেকেআর ক্যাপ্টেনের স্ট্যাম্প। অবশ্য সেই বলেই কেবলমাত্র নয়। গোটা সেট আপ-ই বিল্ড করার কাজ করেছিল শ্রেয়স আইয়ার ক্রিজে নামা মাত্র। আইয়ার ক্রিজে আসতেই বিদ্যুৎ গতিতে বল করে চলেছিলেন উমরান। শ্রেয়সের বিশ্বাস করিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর দিকে শর্ট বলের বৃষ্টি করা হবে। তবে আচমকা ইয়র্কারে কেঁপে যান তারকা।

Advertisment

নিজের দিনে ঠিক মত ছন্দে থাকলে উমরান মৃত্যুর শমন নিয়ে হাজির হতে পারেন ব্যাটসম্যানদের কাছে। সদ্য সমাপ্ত আইপিএল-এ হায়দরাবাদ অবশ্য উমরানকে মোটেই ব্যাক করেনি। কোনও অদ্ভুত এক কারণে। তবে এর অর্থ এমনটা নয় যে উমরানকে দীর্ঘদিন উপেক্ষার বাক্সে ফেলে রাখা হবে। গতি রয়েছে, লাইন-লেন্থ মোটামুটি সম্ভ্রম জাগানোর মত। স্রেফ একজন ভালো কোচ এবং ক্যাপ্টেনের গাইডেন্স দরকার জম্মু এক্সপ্রেসের জন্য। আইপিএলে শ্রেয়স আইয়ারকে যেভাবে আউট করেছিলেন ব্যাটারের মনে বিভ্রান্তির জাল বুনে, তাতেই স্পষ্ট, উমরান নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি মেনে বল করতে পারেন। টেস্ট ক্রিকেটের যা অবিশ্যিক শর্ত।

ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপর্যয় ঘটেছে। ব্যাটিং তো বটেই ভারতের মাথা নিচু করে দিয়েছে পেসারদের পারফরম্যান্স। শামি-সিরাজ বাদে কেউই ভরসা জাগানোর মত বল করতে পারেননি। বুনরার অনুপস্থিতিতে নেওয়া হয়েছিল অভিজ্ঞ উমেশ যাদবকে। তিনি তো বটেই শার্দূল ঠাকুরের মিলিটারি পেস-ও কাজে আসেনি ওভালের পিচে। পরের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল লর্ডসে। জসপ্রীত বুমরা চোট প্ৰবণ। আর উমেশ যাদবের বয়স হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে।

এমন অবস্থায় টিম ম্যানেজমেন্ট বোলিং ডিপার্টমেন্ট ঢেলে সাজাতে চাইছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকেই টেস্ট দলে যাত্রা শুরু হয়ে যেতে পারে উমরান মালিকের। যাঁকে লম্বা রেসের ঘোড়া হিসাবেই ধরা হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে।

প্ৰথম শ্রেণির ক্রিকেটে উমরান খেলেছেন মাত্র ৭ ম্যাচ। ৪.৪৬ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন মাত্র ১২ উইকেট। তবে অল্প ম্যাচের এই স্বল্প পরিসংখ্যান মোটেই তাঁর প্রতিভার যথার্থ পরিচায়ক নয়। হার্ড লেন্থে নিয়মিত বোলিং করতে পারেন উমরান। আইপিএলেই দেখা গিয়েছে। আর বিদেশে পেস সহায়ক কন্ডিশনে স্রেফ গতি দিয়ে ভারতের বোলিং বিভাগে নতুন অস্ত্র আমদানি করতে পারবেন তিনি। বিশেষ করে পুরোনো বলে।

তবে টেস্টের মত লম্বা ফরম্যাটে তিনি উপযুক্ত কিনা, তা প্রমাণ সাপেক্ষ। বিশেষ করে যখন লম্বা স্পেল করতে হয়। টি২০-র মত চার ওভারের স্পেল নয়। দিনে ২০ ওভার হাত ঘোরাতে হবে। তিনি পারবেন কিনা, সেটা সময় বলবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল অনেকটাই দুর্বল। বিশেষ করে টেস্টে। এমন দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে উমরানকে খেলিয়ে দেখে নেওয়া মোটেই অযৌক্তিক হবে না।

মুকেশ কুমার- নির্ভরযোগ্য অপশন:
ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অজি সিমার স্কট বোল্যান্ড-এর বলে পর্যুদস্ত হয়েছিল। নির্দিষ্ট লাইন-লেন্থে টানা বল করে বোল্যান্ড নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন ভারতীয় ব্যাটারদের। বিরাট কোহলিও বোল্যান্ডের বলের শিকার হন। ঈশান্ত শর্মাকে একসময় স্টক বোলার হিসাবে ব্যবহার করা হত। এমন অবস্থায় ভারত এমন একজন বোলারের সন্ধানে রয়েছে যিনি লম্বা স্পেলে নির্দিষ্ট লাইন-লেন্থ মেনে বল করে যেতে পারবেন। আর বাংলার মুকেশ কুমার এই ভূমিকার জন্য একদম আদর্শ চয়েস হতে পারেন।

গত কয়েক সিজন ধরেই ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটের পর উইকেট নিয়ে চলেছেন মুকেশ। মাত্র ৩৩ ম্যাচে মুকেশ ২১.৪৯ গড়ে ১২৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের স্কোয়াডে রিজার্ভ হিসাবেও রাখা হয়েছিল তারকাকে। বিদেশে পেস সহায়ক কন্ডিশনে যখন লম্বা স্পেলে বোলিং করতে হয়, তখন বাকি স্ট্রাইক বোলারদের বিশ্রাম দিয়ে মুকেশ লম্বা সময় ধরে স্পেল করে যেতে পারবেন। বিদেশে ভারতীয় বোলারদের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, প্রতিপক্ষ দলের পার্টনারশিপ বিল্ড আপের সময় ভারতীয়রা রানের গতি থামাতে পারছেন না।

উনাদকাতের তুলনায় ভালো বিনিয়োগ অর্শদীপ সিং:
জাহির খান পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় দল একজন কোয়ালিটি বার হাতি সিমার খুঁজছে। গত কয়েকটি সিরিজ ধরেই বয়ে বেড়ানো হচ্ছে জয়দেব উনাদকাটকে। তবে ম্যানেজমেন্টের কাছে রিজার্ভ বোলার ব্যতীত নিয়মিত তারকা হিসাবে মোটেই দেখা হয় না সৌরাষ্ট্রের সিমারকে। অন্যদিকে কাউন্টি ক্রিকেট খেলে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া অর্শদীপ সিং এক্ষেত্রে দারুণ পরিবর্ত হতে পারেন।

উমরান মালিকের মতই ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই। সাত ম্যাচে অর্শদীপ ২১ উইকেট নিয়েছেন ৩৫.১৯ গড়ে। তবে নতুন বলে সুইং করানোয় বেশ দক্ষ তিনি। কেন্টের হয়ে প্ৰথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলায় বিদেশের কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা যেমন বাড়বে, তেমন ডিউক বলে বোলিং-শৈলীও রপ্ত করতে পারবেন তিনি।

Read the full article in ENGLISH

BCCI
Advertisment