২০০৮ এ মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার শিকার হয়েছিলেন নৌ বাহিনীর কমান্ডো প্রবীণ তেওটিয়া। তিনি করোনা মোকাবিলায় অনন্য নজির গড়ছেন নিজের ম্যারাথন পদক নিলামে তুলে। ইতিমধ্যেই ২লক্ষ টাকা দান করেছেন তিনি।
২০০৮ এ সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় ভারতীয় নৌ বাহিনীর মার্কোস মেরিন কমান্ডোরা অভিযানে নেমেছিল। সেই সময় প্রবীণ তেওটিয়া নিজে তাজ হোটেল জঙ্গিদের থেকে পুনরুদ্ধার অভিযান 'অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডো'-য় ছিলেন। বুলেটবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। এখনো বাঁ কানে কম শোনেন এই সৈনিক। তারপরে শৌর্য চক্র পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তাঁকে।
আপাতত তিনি গোটা বিশ্ব জুড়ে ম্যারাথনে অংশ নিয়ে থাকেন। করোনা মোকাবিলায় নিজের ম্যারাথনের পদকও নিলামে তুলছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানাচ্ছিলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনা ত্রাণে সাহায্যের কথা বলার পরেই সিদ্ধান্ত নিই অনলাইনে নিজের ৪০টা পদক নিলামে তুলব। ইতিমধ্যেই ২টো পদক নিলাম করে ২ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছি। প্রধানমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ডে সেই টাকা জমা করেছি।"
তিনি বলেছিলেন, "২৬/১১ হামলায় বুলেটের ক্ষত সামলে দৌঁড়ে ঘাম রক্ত ঝরিয়ে এই পদক আমাকে অর্জন করতে হয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে অন্যদেরও সাধ্যমত দেওয়ার কাজে অনুপ্রাণিত করতে চাই। এই লড়াইয়ে আমরা সকলেই একসঙ্গে। এই মুহূর্তে সমস্ত বিবাদ মিটিয়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে হবে।"
যিনি সামনে থেকে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা জোগাছেন, তার অনুপ্রেরণা কে? তেওটিয়া বলছিলেন, "সেনা হিসাবে সবসময় শিখেছি দেশের স্বার্থে কাজ করতে। যে গ্রাম থেকে আমি এসেছি তা ৩৯জন শহিদ, ৮জন সেনা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংয়েরও গ্রাম। আমি চিকিৎসক কিংবা চিকিৎসা শাস্ত্রের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত থাকতে না পারায় এভাবেই দেশের কাজে নিয়োজিত থাকতে চেয়েছি।"
উত্তরপ্রদেশের ভাতোনা গ্রামে বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে থাকেন তিনি। ২০০৮ সালে আহত হওয়ার পর ৫টি অস্ত্রোপচার হয় তার। তারপর রিলিজ করে দেওয়া হয় প্রবীণ তেওটিয়াকে।
ভারতীয় নৌ সেনা থেকে অবসরের পর আপাতত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ম্যারাথনে অংশ নিয়ে থাকেন। দু ডজনের কাছাকাছি পদকও জিতেছেন।
লকডাউনের সময়েও নিজেকে ফিট রাখছেন তিনি। বলেছিলেন, "বাড়ির ভিতরেই দৌড়াদৌড়ি, অনুশীলন করি। পাশাপাশি বাড়ির মধ্যে আখের মেশিন চালিয়েও নিজেকে ব্যস্ত রাখি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন