সবুজ-মেরুন জার্সি নিয়েই খেলবে মোহনবাগান-এটিকে। ভুয়ো টি২০ লিগের তদন্তে উঠল স্পন্সরের নাম। বিশ্বকাপ হারের এক বছর পূর্ণ হল এদিন।
সবুজ-মেরুন জার্সি এটিকে-মোহনবাগানের
মোহনবাগানের ঐতিহ্যের সঙ্গে এক হয়ে যাওয়া সবুজ-মেরুন জার্সির কোনো বদল হচ্ছে না। এটিকে-মোহনবাগান জার্সি সেই অতীতের কথা ভেবেই বদলানো হচ্ছে না। শুক্রবার প্রথম বোর্ড ডিরেক্টরদের মিটিংয়ে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এটিকে মোহনবাগানের ডিরেক্টর দেবাশিষ দত্ত জানালেন, "এটিকে-মোহনবাগান আমাদের প্রতিশ্রুতি মেনে সবুজ মেরুন রঙ এবং পালতোলা নৌকা প্রতীক অপরিবর্তিত রেখেছে দেখে ভালো লাগছে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন এই প্রতীক। এক কথায় বলতে গেলে, এই অবতার অতীতের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই।"
শুক্রবারের বোর্ড মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। এটিকের অন্যতম অংশীদার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কোম্পানির অন্যতম ডিরেক্টর হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবেন। মহারাজ জানান, "মোহনবাগান ও এটিকের এই মেলবন্ধনকে স্বাগত জানাই।।মোহনবাগান এবং এটিকে এই ব্র্যান্ড ইতিহাস তৈরী করবে।" এটিকে-মোহনবাগান আসন্ন কলকাতা ফুটবল লিগ এবং আইএসএলে অংশ নেবে। পাশাপাশি আইলিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্যায়েও খেলতে দেখা যাবে।
বৈঠকের পর সঞ্জীব গোয়েঙ্কা জানান, "ক্লাবের ঐতিহ্যের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে জার্সিকে নিয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে, ভালোবেসেছে সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই আমরা জার্সি অপরিবর্তিত রাখছি।" মোহনবাগানের ৮০ শতাংশ শেয়ারই কিনেছে এটিকে। হোম শার্টে লাল-সাদা জার্সির পরিবর্তে সবুজ-মেরুণই রাখা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে মোহনবাগান সমর্থকরা খুশিই।
নজরে স্পনসর ড্রিম ১১
ম্যাচ গড়াপেটা কাণ্ডে এবার নাম জড়াল বিসিসিআইয়ের অন্যতম প্রধান স্পনসর ড্রিম ইলেভেনের। শ্রীলঙ্কার ভুয়ো টি২০ লিগ খেলা হচ্ছিল মোহালিতে। এমন ঘটনার তদন্তে নেমেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা মোহালি পুলিশকে ইনপুটস দিয়েছে। পাশাপাশি, এসিইউ (দুর্নীতি দমন শাখা)-র তরফে স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম ফ্যানকোডের ভূমিকাও খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ফ্যানকোড এবং ড্রিম ইলেভেন দুটোই স্পোর্টস টেক কোম্পানি ড্রিম স্পোর্টসের অংশ।
এসিইউ-এর তরফে মোহালি পুলিশকে সরকারিভাবে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংগ্রহ করতে পেরেছে। সেখানেই লেখা রয়েছে, "ড্রিম ইলেভেন জড়িত থাকতেই পারে। টুর্নামেন্টে যে কিটস ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আগের কোনো টুর্নামেন্টের। এটা নকল হতেই পারে। তবে ড্রিম ইলেভেনের লোগোর উপর টেপ মারা ছিল। এটাই অদ্ভুত। যদি কেউ ডিসপ্লে না-ই করতে চায়, তাহলে প্রথম বক্তব্য হল, তারা জার্সিতে ড্রিম ইলেভেনের লোগো লাগাবে কেন!"
সেই সঙ্গে তদন্তকারী আধিকারিকদের বক্তব্য, "ফ্যানকোডকেও পুরো বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কারণ ভুয়ো টুর্নামেন্টের লাইভ স্ট্রিমিং করা অপরাধ।"
বিসিসিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান অজিত সিং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন, "আমরা বলছি না যে ড্রিম ইলেভেনই জড়িত। তবে যেহেতু ফ্যানকোড জড়িত, তাই আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে কিভাবে ম্যাচ আয়োজন করা হল, কে কভার করল প্রমুখ বিষয়। কিছু ভুয়ো নথি তো থাকবেই যেখানে দাবি করা হবে, শ্রীলঙ্কা বোর্ডের তরফে নাকি টুর্নামেন্টে কোনোরকম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। ফ্যান কোড আমাদের তদন্তে সাহায্য করতে পারে।"
ফ্যানকোডের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা তদন্তে যেকোনো প্রকার সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত। বলা হয়েছে, প্রথম দিনের পরেই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের তরফে যোগাযোগ করে বলা হয় এটা লঙ্কান বোর্ডের অনুমোদিত নয়। তার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় সম্প্রচার।
বিশ্বকাপ হারের এক বছর
ঠিক একবছর হয়ে গিয়েছিল। জুলাই মাসের ১০ তারিখেই ভারতের তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় ম্যানচেস্টারে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টানটান ম্যাচে ভারত হেরে বসে সেমি ফাইনালে। শেষ ৯ বলে ভারতের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান।
শুরুতে পরপর উইকেট হারানোর পরে ভারত ম্যাচে ফিরে আসে জাদেজা-ধোনির ১১৬ রান পার্টনারশিপে ভর করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ইংল্যান্ডে প্রতিপক্ষদের দুরমুশ করেই এগোচ্ছিল ভারত। তুখোড় ফর্মে থাকা ভারতকেই কাপ জয়ের ফেভারিট মনে হচ্ছিল। তবে সেমিতেই পতন।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শুরুতেই ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। তারপরে ধোনি-জাদেজার পার্টনারশিপে ভারতের ম্যাচে প্রত্যাবর্তন। ধোনির মঞ্চ প্রস্তুত ই ছিল। কতবার যে এরকম পরিস্থিতিতে আগে ধোনি দলকে জয়ের মঞ্চে পৌঁছে দিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই।।তবে সেদিনই মিস্টার ফিনিশার পারেননি। কেন উইলিয়ামসনও পরে বলছিলেন, "ধোনির রান আউট আমাদের জয়ের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। এর আগে কতবার ধোনি এই পরিস্থিতি থেকে দলকে জিতিয়েছেন!"
জয়ের জন্য ২২ রান প্রয়োজন এমন অবস্থায় দু-রান ছুটে নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান ধোনি।
ক্রিজের নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর মাত্র ২ ইঞ্চি আগে উইকেট ভেঙে দেন মার্টিন গাপটিল। পরে ধোনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, "মাত্র দু-ইঞ্চি... আমি এখনো আমাকে বলি ডাইভ দেওয়া উচিত ছিল আমার।" ভারতকে জয়ের আশা জাগানোর নায়ক জাদেজা আবার বলছিলেন, "আমরা সেরাটা দিয়েছি। তবে শেষমেশ কিছুটা দূরে থেমে যেতে হয়েছিল। অন্যতম দুঃখের দিন আমাদের।"
সেই হারের আর এক বছর পূর্ন হল। মাঝের এক বছরে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই দেখা যায়নি ধোনিকে। একাধিকবার অবসরের কথা উঠলেও ধোনি সেপথে হাঁটেননি। দেশ ও বিদেশের মাটিতে পরপর সিরিজে অনুপস্থিত থেকেছেন তিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে ৬ মাস না খেলায় কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি। নির্বাচকরা একাধিকবার ভবিষ্যতের কথা বললেও ধোনি জাতীয় দলে ফিরতে চান। আইপিএলে পারফর্ম করেই ফের টিম ইন্ডিয়ায় ফিরতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। আসন্ন বিশ্বকাপে খেলার মানসিক প্রস্তুতিও সারা ছিল। এর পরে অতিমারীর জন্য ধোনির ফেরাই আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।