ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে উদাসীন তকমা দেগে সোমবারই নিজভূম কোস্টারিকার উদ্দেশে পাড়ি দিলেন জনি অ্যাকোস্টা।অন্যদিকে, সমাজের মনের মধ্যে যে 'মানসিকতার ভাইরাস' রয়েছে সেটিকে কোন মাস্ক দিয়ে আটকাবে দেশ? একটি চ্যাট শো-য়ে সেই প্রশ্নই তুললেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীপতি বালাজি। এদিকে, সুশান্তের আত্মহত্যা নিয়ে স্মৃতিবিজরিত মহেন্দ্র সিং ধোনির এজেন্ট এবং ধোনির বায়োপিক প্রোডিউসার অরুণ পান্ডে। জানালেন অজানা তথ্য। আজ দিনের সেরা খেলার সব খবর পড়ুন এখানে...
ইস্টবেঙ্গল 'উদাসীন', ক্ষোভ উগড়ে ক্লাব ছাড়লেন জনি অ্যাকোস্টা
কোস্টারিকার এই বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্টাকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আনতে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি লাল-হলুদ ক্লাব কর্তাদের। কিন্তু শেষ রক্ষা হল কোথায়? ক্লাবকে 'উদাসীন' তকমা দেগে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে সোমবারই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন অ্যাকোস্টা।
করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের জেরে সম্প্রতি বিদেশে প্লেয়ারদের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথে হেঁটেছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ইনভেস্টর কোয়েস কর্প। ২০১৮-১৯ সালের বিশ্বকাপে রানার আপ কোস্টারিকা দলের মিড ডিফেন্ডার খেলেছিলেন জনি অ্যাকোস্টা। ইস্টবেঙ্গলে দুটি সিজন খেলেন এই বিশ্বকাপার।
সোমবার কোস্টারিকার উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার আগে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ক্লাব, বেতন সমস্যা এবং দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা না করা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন এই তারকা-ফুটবলার। তবে লাল-হলুদ সমর্থকদের একরাশ ধন্যবাদ জানিয়েছেন অ্যাকোস্টা। তিনি লেখেন, "জীবনের একটা অধ্যায় শেষ করলাম। তবে এবার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকম। কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির প্রতি আমার অনেকখানি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ছিল। কিন্তু চুক্তি আর বেতন নিয়ে কোনও সমস্যাই মিটল না। প্রতিশ্রুতি রাখল না তারা। এমনকী আমার কোস্টারিকা ফেরার ব্যবস্থাও করে দিল না। আমার প্রতি কোনও সহানুভূতিও দেখানো হল না।”
এরপরই অনুরাগীদের প্রতি লেখেন, "এখানে খুব ভাল সময় কাটিয়েছি। আমার পাশে থাকায় সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাই। ওদের সবসময় মনে রাখব। ধন্যবাদ ইস্টবেঙ্গল এফসি"।
করোনা অতিমারী আবহে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে রিয়েল কাশ্মীর এফসি-র বিরুদ্ধে শেষবারের মতো খেলেছিলেন জনি।
খেলার অন্যান্য খবর পড়তে থাকুন এই প্রতিবেদনে,
"কোন মাস্ক মানসিক ভাইরাস আটকাবে?" বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে সরব বালাজি
অনেক কাছ থেকে দেখেছেন বর্ণবিদ্বেষ এবং বৈষম্যের মানসকিতাকে। সমাজের মনের মধ্যে যে 'মানসিকতার ভাইরাস' রয়েছে সেটিকে কোন মাস্ক দিয়ে আটকাবে দেশ? একটি চ্যাট শো-য়ে সেই প্রশ্নই তুললেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীপতি বালাজি।
'হোমরান উইথ এভি' শো-এ ধারাভাষ্যকার অরুণ বেণুগোপালের সঙ্গে কথোপকথনের সময় বালাজি বলেন, "এই বর্ণবিদ্বেষ, ভেদাভেদ এটা আমাদের বাড়ি থেকেই শুরু হয়। অনেকসময় দেখা যায় যে সব বাচ্চা স্থূলকায় হয় তাঁদের ভিন্ননামে ডাকা হয়। এটা তো বাচ্চার সমস্যা নয়। তাহলে তাঁকে সেই নাম দেওয়া হবে কেন? আমার পরিচিত মহলেও এমনটা দেখেছি। মজার জন্য করা হলেও একটা বাচ্চার মনে এর প্রভাব কিন্তু সাংঘাতিক।"
আরও পড়ুন, মেনে নেওয়া যায় না! আত্মঘাতী সুশান্তের জন্য বলছে খেলার দুনিয়া
ভারতীয় ফাস্ট বোলার বালাজি বলেন, "এটা একটা রোগের মত। ধরা যেতে পারে করোনার মতোই। যা ঠিক হওয়ার নয়। আমাদের জীবনের এই ভয়গুলি সামাজিক স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রেও প্রভাব বিস্তার করেছে। এমন কোনও মাস্ক কি আছে যা এই বর্ণবৈষম্য, ভেদাভেদের ভাইরাসকে আটকাতে পারে?"
২০০৩-০৪ সালের ঐতিহাসিক ম্যাচে বোলিংয়ের দাপটে পাকিস্তানকে দুরমুশ করা লক্ষ্মীপতি বালাজি বলেন যে মানুষ এই জাতীয় সমস্যা নিয়ে সরব হতে চাইত না। কিন্তু এখন পরিস্থিতির বদলে এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা হচ্ছে। আমি একবার ক্লাসে ফেল করেছিলাম। কিন্তু রিপিট করতে পারিনি সমাজের ভয়ে। সমাজের সেই হাসিঠাট্টা আমাকে মানসিকভাবে দূর্বল করে দিয়েছিল সেই সময়।"
Read the story in English
খেলার অন্যান্য খবর পড়তে থাকুন এই প্রতিবেদনে,
'সুশান্ত ধোনিকে বলেছিল তোমাকে সবাই আমার মধ্যে খুঁজতে চাইবে'
সুশান্তের স্বেচ্ছামৃত্যু যেন সব স্মৃতিতে ঝাঁকুনি দিয়ে গিয়েছে হঠাৎ করেই। অতর্কিতে সুশান্তের এই চলে যাওয়ায় স্মৃতিবিজরিত মহেন্দ্র সিং ধোনির এজেন্ট এবং ধোনির বায়োপিক প্রোডিউসার অরুণ পান্ডে।
সুশান্তের মৃত্যুতে এখনও 'শক' কাটিয়ে উঠতে পারেননি অরুণ। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথায় সেই স্মৃতির পাতাই ওল্টালেন। 'এম এস ধোনিঃ দ্য আনটোল্ড স্টোরি'র প্রোডিউসার অরুণের মনে দাগ কেটে রয়েছে সুশান্তের সেই হাসি। ছবির জন্য ধোনির মতো অবিকল হেলিকপ্টার শট মারলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। যা দেখে কপ্টারশট সৃষ্টিকর্তা ধোনি নিজেই বলে উঠেছিলেন, 'আরে তু তো বিলকুল ফোটোকপি কর দিয়া'। মাহির কথায় ছবির 'মাহি'র মুখে সেই পরিতৃপ্তির হাসি ভুলতে পারেন না অরুণ।
সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে অরুণের সম্পর্ক ধোনির বায়োপিক সূত্রেই। সময়ের হিসেব করলে দেড় বছরেরও বেশি। অরুণ বলেন, "আমি সেই সময় দেখেছি স্ক্রিনে নিজেকে ধোনি হিসেবে দেখাতে সুশান্ত কতটা পরিশ্রম করেছেন। এই ছবি করতে গিয়ে প্রথমে মাহিকে বোঝাতেই অনেকটা সময় লেগেছিল আমার। কে ধোনির রোল প্লে করবে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কাই পো চে- ছবিতে সুশান্তকে ক্রিকেট কোচ হিসেবে দেখার পর থেকেই ওর কথাই প্রথম মাথায় আসে। যখন ছবির কথা ওকে বলি তখন থেকেই ও দারুণ উৎসাহী। ধোনি কেমন? কীভাবে হাসে, কথা বলে, প্যানিক করে, দুঃখ পেলে কী করে, কী কী ভালোবাসে? সব খুঁটিনাটি নিয়ে কথা বলেছে আমার সঙ্গে।"
আরও পড়ুন, ধোনির জীবনের একটুকরো সুশান্তের কাছেই, স্মৃতি মন্থনে উঠছে ক্রিকেট প্রেম
শুটিংয়ের সেই সব মুহুর্তকে মনে করে অরুণ বলে চলেন, "সুশান্ত ধোনিকে খুব নিবীড়ভাবে দেখত। অনেকসময় হয়েছে মাহিকে না জানিয়েই ওর হোটেলে, টিমমেটদের সঙ্গে মিটিংয়ে উপস্থিত ছিল ধোনি ম্যানারিজমকে নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তোলার জন্য। ছবির জন্য ধোনিকেও হাজারটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করত। একবার তো সুশান্তের প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়ে মাহি ওকে বলেই ফেলল, আরে ভাই কিতনে কোয়েশ্চেন পুছতা হ্যায় তু। এর উত্তরে সুশান্ত যা বলেছিল আমার আজও সেটা মনে থেকে গিয়েছে। ও বলেছিল, ভাইসাব সবাই আমার মধ্যে তোমাকে খুঁজতে চাইবে। তাই তুমি যেটা যেভাবে করো আমাকেও সেটাই করতে হবে।"
Such perfection.#SushantSinghRajput & MS Dhoni pic.twitter.com/73UekTHdKW
— Sarang Bhalerao (@bhaleraosarang) June 14, 2020
আর ব্যাটিং? অরুণ পান্ডে বলেন, "এত নিখুঁত অভিনয়। ধোনি যা যা করে সেটাই করেছে। সেটা ব্যাটিংয়ের সময় জামার হাতা তোলা হোক কিংবা কাঁধ ঝাঁকানো। ধোনির মত ও নিজেও একটা ছোট শহর থেকে উঠে এসেছে। ধোনিকে আইডল হিসেবে দেখত।" স্মৃতিবিজরিত অরুণ পান্ডে বলেন, ও নিজেও বড় কিছু করে দেখাতে চাইত।
সুশান্ত সিং রাজপুত, বড়পর্দার অভিনেতা অনুরাগীদের মনে বড় ভালোবাসায়, বড় যত্নে থাকবেন!
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন