বিদেশেই হবে আইপিএল। করোনায় আক্রান্ত হাকিম। ধোনি বনাম সৌরভের জোর লড়াই। নেটওয়ার্ক সমস্যায় ত্রাতা আম্পায়ার।
আইপিএল সংবাদ
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুবাইতেই বসছে আইপিএলের আসর। সরকারিভাবে ঘোষণা না করা হলেও টি২০ বিশ্বকাপ কার্যত হচ্ছে না। তা জলের মতোই পরিষ্কার। সেই স্লটে যে বোর্ড আইপিএল আয়োজন করতে চায়, তাও একপ্রকার সকলের জানা।
প্রথমে মুম্বইকে ধরেই আইপিএলের সম্ভাব্য পরিকল্পনা সেরে রাখা হলেও, ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতি বোর্ডের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। তাই এবার বোর্ড বিকল্প ভেন্যু হিসাবেই দুবাইকে নিয়ে এগোতে চায়। প্রসঙ্গত আগেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহি বোর্ড আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব রেখেছিল ভারতীয় বোর্ডের কাছে। বিসিসিআই চাইছে, দেশের ক্রিকেটাররা কোনো সিরিজে খেলতে নামার আগে অন্তত ছয় সপ্তাহের একটি ট্রেনিং ক্যাম্পে থাকুক। এতে ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা যাবে। আইপিএলে সরাসরি ক্রিকেটাররা খেলতে নামার জন্য দুবাইয়েই সেই ক্যাম্প ব্যবস্থা করবে বিসিসিআই।
দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বোর্ডের এক সূত্র জানিয়েছেন, "নাটকীয়ভাবে মুম্বইয়ের পরিস্থিতি উন্নতি না হলে দুবাইয়ে আইপিএল আয়োজন করা হতে চলেছে। তাই খুব সম্ভবত দুবাইয়েই এই ক্যাম্প আয়োজন করা হবে। একবার আইপিএল ভেন্যু চূড়ান্ত হয়ে গেলেই বাকি বিষয়ের দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটবে।" তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে সংঘাত। আইপিএলের প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইছে অন্তত তিন সপ্তাহ তাদের ট্রেনিং ক্যাম্পে যোগ দিক ক্রিকেটাররা। সেক্ষেত্রে বোর্ড ক্রিকেটারদের ট্রেনিং ক্যাম্পের মেয়াদ কমাবে নাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে সংঘাতের আবহ রাখে, সেটাই দেখার।
করোনায় অলিম্পিয়ান
সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি। করোনার হাত থেকে রেহাই নেই কারোর। এবার করোনা টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়লেন ১৯৬০ সালে দেশের জার্সিতে অলিম্পিক খেলা তারকা ফুটবলার সৈয়দ শাহিদ হাকিম। মিলিটারি হাসপাতালে বেড না পেয়ে তিনি আপাতত হায়দরাবাদের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইন পর্ব সারছেন। প্রথমে করোনা চিকিৎসার জন্য সরকারি এক হাসপাতালে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন হাকিম সাব। তবে সেখানের ব্যবস্থাপনায় খুশি হতে না পেরে আপাতত হোটেলের দ্বারস্থ তিনি। ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে দেশের জার্সিতে খেলেছিলেন তিনি। সেই সময় ভারত ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন, গোটা কেরিয়ার জুড়ে খেলার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করলেও, সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা পাননি।
তিনি জানান, "কয়েকদিন আগেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। তারপরেই সরকারি এক হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে ওখানকার ব্যবস্থাপনা আমার মোটেও পছন্দ হয়নি। মিলিটারি হাসপাতালেও বেড ছিল না। আমার ভাইপো আমাকে হোটেলে নিয়ে আসে। এখন একটু সুস্থ রয়েছি।" এরপরে তিনি আরো ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন, "এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনোরকম সহায়তা পাইনি। আমেরিকায় থাকে আমার বোন। ও সমস্ত খরচ বহন করছে। ভারত সরকারের অন্তত নিজেদের অলিম্পিয়ানের দেখভাল করা উচিত।"
ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও তিনি তুলনা টেনে এনেছেন। জানান, "ভারতের একমাত্র জীবিত অলিম্পিয়ান ফুটবলার আমিই। আমি ক্রীড়া প্রশাসক হওয়া ছাড়াও জাতীয় দলের কোচ হয়েছি। ক্রীড়া মন্ত্রককে এর আগে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম, সরকারি ঔদাসীন্য র কারণে একের পর এক অলিম্পিয়ান মারা গিয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের দেখভাল করে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার কেন আমাদের নূন্যতম ভাতা চিকিৎসার খরচ যোগায় না।"
একদশক ধরে সাইয়ের প্রধান প্রজেক্ট ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৭ সালে দেশের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসাবে ধ্যান চাঁদ পুরস্কারও জিতেছেন।
ধোনি বনাম সৌরভ
ধোনি না সৌরভ! ভারতীয় ক্রিকেট গড়ে তোলার জন্য কার অবদান সবথেকে বেশি, তা নিয়ে বিতর্ক প্রতিদিন। তবে সমীক্ষায় সৌরভকে হারিয়ে দিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক কে, এই বিষয়েই একটি ক্রিকেটীয় ওয়েবসাইট ভোটাভুটির ব্যবস্থা করে। সেখানেই মহারাজকে অল্প ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন ধোনি।
সেরা ক্যাপ্টেনের ক্যাটাগরিতে আটটা প্যারামিটার রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে চারটেতে ধোনি সৌরভের থেকে পয়েন্ট বেশি পেয়েছেন। ধোনি যে বিভাগে বেশি পয়েন্ট অর্জন করেছেন তা হল- ঘরের মাঠে ক্যাপ্টেন্সি, একদিনের ম্যাচে অধিনায়কত্ব, খেতাব জয়ের সংখ্যা এবং নেতৃত্বের সময় ব্যাটসম্যান হিসেবে পারফরম্যান্স।
সৌরভ বাকি যে চারটে বিভাগে ভাল ফল করেছেন তা হল বিদেশের মাটিতে ক্যাপ্টেন্সি, দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া, দলের উপর প্রভাব এবং দলকে অধিনায়কত্বের পর্বান্তরের সময় ধরে রাখা।
একাধিক বিভাগে খুঁটিয়ে নেতৃত্বের পর্যালোচনা করার পরেই স্টার স্পোর্টসের ক্রিকেট কানেক্টেড অনুষ্ঠানে এই ফলাফল জানানো হয়। সব বিভাগে প্রাপ্ত পয়েন্ট যোগ করেই দেখা যায় ধোনি সৌরভের থেকে দেড় পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
আম্পায়ারের কীর্তি
গ্রামে দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক। সেই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এখন বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলের ভারতীয় আম্পায়ার অনিল চৌধুরী।
মার্চে ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজ আয়োজনের কথা ছিল। সেই সিরিজেই ম্যাচ পরিচালনার দ্বায়িত্বে ছিলেন তিনি। তবে বিশ্বজোড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই সিরিজ বাতিল হয়ে যায়। সেই সময়েই আম্পায়ার অনিল চৌধুরী সামলি জেলায় নিজের পৈতৃক গ্রাম ডাঙরলে যান। তারওর তড়িঘড়ি লকডাউনের ফলে সেখানেই আটকে পড়েন তিনি।
নেটওয়ার্ক সমস্যার কারনে সেই সময় গাছে উঠে রাত কাটাতে হচ্ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা ভারতীয় আম্পায়ারকে। উত্তরপ্রদেশে নিজের পৈতৃক গ্রাম আটকে পড়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতার কারণে বাকি বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অবস্থায় কয়েক মাস কাটাতে হয় তাঁকে। সেই সময়েই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মুখে পড়েন তিনি।
তার এই খবর জাতীয় প্রচারমাধ্যমে লেখালেখি হতেই গ্রামবাসীর সমস্যা মেটে। একটি টেলিফোন নেটওয়ার্ক সংস্থার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রামে মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে।
ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানান, "কখনই ভাবতে পারিনি এই উদ্যোগ এত প্রশংসিত হবে। এই গ্রামে একজন জলন্ধরের অধ্যাপক থাকেন। যিনি এখন অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। ছাত্ররাও এতে খুশি। মাঠে মশার কামড় সহ্য না করে তাঁরা এখন অনলাইন ক্লাস এটেন্ড করতে পারছে।"
রাজকুমার নামের এক গ্রামবাসী জানালেন, আগে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কয়েক দিন লেগে যেত। এখন মাত্র কয়েক ঘন্টাতেই এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, "আম্পায়ার অনিল চৌধুরীর উদ্যোগের জন্য ওঁকে ধন্যবাদ জানাই। এখন উনি আমাদের কাছে হিরো। এই অতিমারীর সময়ে এটা হয়ত ছোট ইস্যু। তবে এটা দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে আমাদের সাহায্য করবে। আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য মনীশ চৌহান এবং স্থানীয় বিধায়ক তেজিন্দর নারওয়াল জিও নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর আমাদের পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।"
আপাতত গ্রামবাসীদের আশীর্বাদ ঝরে পড়ছে আম্পায়ার অনিল চৌধুরীর উপর। এই বিষয় তিনি বেশ উপভোগও করছেন। তবে এর কিছু বিপত্তিও রয়েছে। আন্তর্জাতিক আম্পায়ার বলছিলেন, "এখন অনেক গ্রামবাসীই অন্যান্য সমস্যা মেটানোর আবদার করছেন।আমি বলেছি, আমি কেবল একজন আম্পায়ার।"