আইপিএলে কমেন্ট্রি নিয়ে অভিনব ভাবনা এবার বোর্ডের। ঘরে বসেই হবে ধারাভাষ্য। দক্ষিণ আফ্রিকার থ্রি টি ম্যাচের ধারাভাষ্য দেওয়া হল বাড়ি থেকেই।
ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্রডকাস্ট! কেমন হতে পারে বিষয়টা। সেই বিষয়েরই ট্রায়াল রান দিয়ে দিল সম্প্রচারকারী স্টার স্পোর্টস সংস্থা। দক্ষিণ আফ্রিকায় 3টিসি ম্যাচ খেলা হচ্ছে। আর তারই ধারাভাষ্য দেওয়া হল বাড়ি থেকে, ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর ভঙ্গিতে। ইরফান পাঠান বদোদরা, দীপ দাশগুপ্ত কলকাতা, সঞ্জয় মঞ্জরেকর মুম্বই থেকে সরাসরি কমেন্ট্রি করলেন। যতীন সাপ্রু আবার দিল্লি থেকেই যোগ দিলেন এই দলের সঙ্গে। আর ভার্চুয়াল কমেন্ট্রির ট্রায়াল রান শুরুতেই সফল।
তিন প্রাক্তন ক্রিকেটারই নিজেদের বাড়িতে বসে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যোগ দিলেন ধারাভাষ্য দেওয়ার কাজে। হিন্দিতে যে ম্যাচের কমেন্ট্রি করলেন সেই ম্যাচে খেলা হচ্ছে অন্য মহাদেশে।
পাঠান নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলছিলেন, “ব্রেকের সময় রুমের বেরোতেই আমার বাচ্চা বলে উঠল, বাবা আজ বাইরে যায়নি, ঘরেই রয়েছে। বারবারই আমার রুম নক করছিল। স্ত্রী কে বলেছিলাম, ওকে সমালাতে। আশা করি, দরজায় ওর নক করার শব্দ ধারাভাষ্যে শোনা যায়নি।”
দীপ দাশগুপ্ত আবার নিজের বাড়ির একটা আলাদা রুমেই সমস্ত ইকুপমেন্ট কিনে ফেলেছেন। পুরো রুমটাই কমেন্ট্রি বক্স বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। যাতে টিভিতে দেখে মনে হয় তিনি কমেন্ট্রি বক্সেই রয়েছেন।
এমন ধারাভাষ্য দেওয়ার কাজ যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। কীভাবে, দীপ দাশগুপ্ত বলছিলেন, বক্সে থাকলে স্কোরিংয়ের সমস্ত টেকনোলজক্যাল সাপোর্ট পাওয়া যায়। এখানে কিন্তু নিজেকেই হিসাব রাখতে হয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে।
পাঠান আবার তুলে ধরলেন অন্য সমস্যার কথা। “মাঠে হোক বা স্টুডিও ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় আমরা বুঝতে পারতাম কখন কে কোথায় থামবে। সেই বোঝাপড়া সামনাসামনি থাকলে তৈরি হয়ে যায়। এখানে কিন্তু অনেকটাই অন্ধকারে থাকতে হয়। পাশাপাশি, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ঠিক মত স্ট্রীম করবে কিনা, তা নিয়েও চিন্তা রয়ে যায়।”
দীপ দাশগুপ্ত আরো জানাচ্ছিলেন, স্টুডিওয় বসে বাউন্ডারি হোক বা সূক্ষ্ম আউট- নিজেরাই দেখে জানিয়ে দিতে পারি নিজেদের মতামত। তবে বাড়িতে বসে ক্যামেরা রিভিউ না দেখা পর্য্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। তবুও নিজেদের অনুমান ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা নিজেদের সিদ্ধান্ত আগাম জানানোর চেষ্টা করছি। ব্যান্ডউইথ স্পিড এবং ডেটা ব্যাক আপ নিয়েও দীপ চিন্তায় রয়েছেন।
আইপিএলে এভাবেই নতুন অবতারে দেখা যাবে ধারাভাষ্যকরদের। অতিমারীর সময়ে আর কোনো কোনো উপায়ও নেই আয়োজকদের কাছে। সবমিলিয়ে এই ‘নিউ নরম্যালে’ ধাতস্থ হতে সময় লাগবে ক্রিকেট দুনিয়ার।
মাঠেই হবে আইপিএল। তবে ধারাভাষ্যকারদের সেই জন্য মাঠে আসতে হবে। বসতে হবে না কমেন্ট্রি বক্সে। ঘরে বসেই সংশ্লিষ্ট কমেন্টেটররা এবার ধারাভাষ্য দিতে পারবেন। এমনই চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ।
করোনা পরিস্থিতিতে এখন ম্যাচ আয়োজন করাই চ্যালেঞ্জ বোর্ডের। মাঠে সীমিত সংখ্যক লোক এনে আইপিএল খেলানোর বিষয়ে বদ্ধপরিকর বিসিসিআই। এমন অবস্থায় ভার্চুয়াল কমেন্ট্রি আসন্ন আইপিএলে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
সম্প্রতি সেঞ্চুরিয়ন পার্কের একটি লাইভ ম্যাচে কমেন্ট্রি করছিলেন সঞ্জয় মঞ্জরেকর, ইরফান পাঠান। ঘরে বসেই নিজেদের দায়িত্ব নিপুণভাবে সামলেছেন পাঠান, মঞ্জরেকররা। নিজেদের অভিজ্ঞতা জানিয়ে পাঠান বলেছেন, “ম্যাজিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স”।
করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই ধারাভাষ্য দেওয়া এখন বর্তমান সময়ের দাবি। অতিমারীর কারণে, শুধু সবাইকে সুরক্ষিত রাখাই নয়, স্বল্প খরচের বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। পাঠান যেমন বলছিলেন, মাঠে বসে সেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কমেন্ট্রি করার কোনো বিকল্প নেই, তবে বর্তমান সময়ে এমন পরিকল্পনা যথেষ্ট কার্যকরী।
অবশ্য মাঠে না গিয়ে অন্য একটি স্থানে থেকে আইপিএলে কমেন্ট্রি করার বিষয় এবারই নতুন নয়। গতবারেই মুম্বইয়ের সম্প্রচারকারী চ্যানেলের স্টুডিও থেকে ধারাভাষ্যকাররা নিয়মিত কমেন্ট্রি করে গিয়েছেন। ১০ টি বিভিন্ন ভাষায়।
সম্প্রচারকারী স্টার স্পোর্টসের তরফে বলা হচ্ছে, আগামী দিনের ‘কমেন্ট্রি ফ্রম হোম’ বিষয়টাই হতে চলেছে নিউ নরম্যাল। সবমিলিয়ে এবারের আইপিএল যে সব অর্থেই নতুন জিনিসের সাক্ষ্য রাখতে চলেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
Get all the Latest Bengali News and West Bengal News at Indian Express Bangla. You can also catch all the Sports News in Bangla by following us on Twitter and Facebook
Web Title:
রাগ, অভিমান ভুলে রাজীব-লক্ষ্মীরতন-বৈশালীকে একসঙ্গে লড়াইয়ের বার্তা প্রসূনের
টিকা নিয়েও রাজনীতি! বর্ধমানে ভ্যাকসিন নিলেন তৃণমূল বিধায়করা, তুঙ্গে বিতর্ক
শ্রাবন্তীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ, তার মাঝেই 'মনের বান্ধবী'র সঙ্গে ছবি পোস্ট রোশনের
"স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য ইতিহাস রাহুল গান্ধীকে স্মরণ করবে"
ফাইজারের করোনা টিকা নেওয়ার পর ২৩ জনের মৃত্যু, চাঞ্চল্য নরওয়েতে