অবশেষে সেরার স্বীকৃতি দ্রাবিড়কে। গম্ভীরকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেন শাহরুখ খান। একাধিক ক্রিকেটার সংক্রমিত হওয়ার পরেও সফর নিয়ে আশাবাদী পাক বোর্ড। চাকরি নেই শচীন সদৃশের। বরিস জনসন ক্রিকেট নিয়ে সাফ জানালেন তাঁর অবস্থান। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে নাম তুললেন গেইল।
সেরা দ্রাবিড়
উইজডেনের আয়োজিত সোশাল মিডিয়া ভোটে সামান্য ব্যবধানে শচীনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন রাহুল শরদ দ্রাবিড়। দর্শকদের বিচারে সেরা মিস্টার ডিপেন্ডবল। তিনিই ভারতের সর্বকালের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান। উইজডেনের সেই সোশ্যাল মিডিয়া ভোটিংয়ে ৫২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন কর্ণাটকী কিংবদন্তি। শচীন পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ। ১১৪০০ জন ক্রিকেট সমর্থক এই ভোটিং প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন।
উইজডেন ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, "খেলোয়াড়ি জীবনে যেভাবে ক্রিজ আঁকড়ে লড়াই চালাতেন, পাল্টা দিতেন, সেভাবেই পোলিংয়ে লড়াই চালিয়ে ভালো ব্যবধানে জিতলেন দ্রাবিড়।" ভারতের সর্বকালের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান কে, এই প্রশ্নে ছিলেন সুনীল গাভাস্কার, বিরাট কোহলির মত মহাতারাদের নাম-ও। দুজনেই সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলেন। তবে ফাইনালের লড়াইয়ে গাভাস্কার, কোহলিদের পেরিয়ে মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন দুই সতীর্থ। সেখানেই শচীনের কাছ থেকে শিরোপার তাজ ছিনিয়ে নেন দ্রাবিড়। কোহলিকে হারিয়ে তৃতীয় সেরা গাভাস্কার।
গম্ভীর ও কেকেআর
"এটা তোমার দল। তুমি যাই কর, আমি হস্তক্ষেপ করব না।"
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে নাইট ম্যানেজমেন্ট যেবার গম্ভীরকে দায়িত্ব দিয়েছিল, সেবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে গম্ভীরকে এমন ভাষাতেই অভয়বাণী দিয়েছিলেন স্বয়ং শাহরুখ খান।
স্টার স্পোর্টসের ক্রিকেট কানেক্টেড অনুষ্ঠানে এসে গম্ভীর পুরোনো সেই দিনের কথা শোনালেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বনাম শাহরুখ খান। আইপিএলে এমন সমীকরণ বহুল চর্চিত।শাহরুখের কেকেআরে অনেক আশা জাগিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মহারাজকে। তবে তিনবার সৌরভের নেতৃত্বে একবারও সেমিফাইনালে পৌঁছতে পারছিল না বেগুনি জার্সির ক্রিকেটাররা। তারপরেই দলের হাল তুলে দেওয়া হয় গম্ভীরকে। বাঁ হাতি তারকা বলছিলেন, "শাহরুখের বক্তব্য ছিলো একটাই, তিন বছর হোক বা ছয় বছর- আমি যখন দল ছাড়বো, সেই সময় যেন দল আগের থেকে ভালো পজিশনে থাকে।"
কিং খানের আস্থার মর্যাদা দেন গম্ভীর। তিনি দলকে ২০১২ ও ২০১৪ দুবার চ্যাম্পিয়ন করেন। সেই সময় আইপিএলের তর্কাতীতভাবে অন্যতম সেরা দল ছিল কেকেআর।
কেমন নেতা ছিলেন গম্ভীর? কেকেআরের টিম ম্যানেজমেন্ট এর অন্যতম অংশ থাকা জয় ভট্টাচার্য জানাচ্ছিলেন, "গম্ভীর মোটেও ক্যাপ্টেন কুল নন। ও এমন একজন নেতা যে দলের প্রয়োজনে মাথায় বুলেট নিতেও দ্বিধা করবে না। এ দারুন প্যাশনেট ক্যাপ্টেন। যদি আপনি গম্ভীরের নেতৃত্বে খেলেন, তাহলে বুঝবেন বাইশ গজে তুমি কখনই একা নও। এটাই ও কেকেআরের সঙ্গে করেছিল।"
১১ পাক ক্রিকেটার সংক্রমিত:
২৪ ঘণ্টা আগেই ৩ জনের শরীরে ভাইরাস সংক্রমণের হদিশ মিলেছিল। একদিন পেরোতে না পেরোতেই জানানো হল আরো আট জন পাক ক্রিকেটার করোনা আক্রান্ত। এরপরেও ইংল্যান্ড সিরিজের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
পিসিবি-র প্রধান কার্যনির্বাহী কর্তা ওয়াসিম খান জানিয়ে দিলেন, "ইংল্যান্ড সফর নির্দিষ্ট সময়েই হবে। সূচি মেনে ২৮ তারিখে দল রওয়ানা দিচ্ছে। সৌভাগ্যবশত, মহম্মদ রিজওয়ান বাদে সকলেই নেগেটিভ। এর অর্থ ইংল্যান্ডে আর একবার পরীক্ষায় ক্লিন চিট পাওয়ার পরে ট্রেনিং শুরু করতে পারবে ওরা।"
ঘটনা হল, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড যতই আত্মবিশ্বাস দেখাক না কেন, এই সিরিজ নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে। হায়দার আলি, সাদাব খান এবং হ্যারিস রউফের পর এদিন আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন, ফখর জামান, ইমরান খান, কাশিফ ভাট্টি, মহম্মদ হাফিজ, মহম্মদ হাসনাইন, মহম্মদ রিজওয়ান, ওয়াহাব রিয়াজের মত তারকা ক্রিকেটার। দলের ম্যাসিউর মালং আলিও পজিটিভ। করাচি, লাহোর, পেশোয়ারে ৩৫ জনের মধ্যে এই টেস্টে ১১ জনের শরীরেই আপাতত ভাইরাস সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। আক্রান্ত দশ জনকেই সেল্ফ আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
ইংল্যান্ডে গিয়ে পাক ক্রিকেট দল তিনটে করে টেস্ট ও টি২০ খেলবে। অগাস্ট মাসের ৫ তারিখ থেকেই এই সিরিজ শুরু হওয়ার কথা। ওল্ড ট্রাফোর্ড এবং এজিয়াস বোলের বায়ো সিকিয়র পরিবেশে দুই দলের খেলার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে সূচি এখনও চূড়ান্ত নয়।
কাজ নেই শচীনের বলবীরের
ভয়ঙ্কর রকমের সাদৃশ্য। সেই মিল খুঁজেই রাস্তা হোক বা বাজার- গোটা দেশে দ্বিতীয় শচীন নামেই বিখ্যাত বলবীর চাঁদ। শেষ তিন বছর তাঁকে নিয়ে হাজার হাজার কালি, প্রিন্ট খরচ হয়েছে। স্রেফ কিংবদন্তি ক্রিকেটারের সঙ্গে সাদৃশ্যের কারণে। সেই জনপ্রিয় বলবীর চাঁদ অবশ্য এখন একদমই ভাল নেই। করোনা অতিমারীর আবহে কার্যত দুবেলা দু মুঠো খাওয়াই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর কাছে।
বুধবার হিন্দুস্তান টাইমস এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তাঁকে নিয়ে। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, "ওদের (গোলি বড়া পাও, চাঁদ যে দোকানে কাজ করেন তার মালিক) ব্যবসা ক্ষতি হওয়ার পর অনেক কর্মীকেই ছাড়িয়ে দিয়েছে। আমাকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে পরিস্থিতি উন্নতি হলে আমাকে ফের ডেকে নেবে।"
৫০ বছরের এই বলবীর জুন মাসের ১০ তারিখে পাঞ্জাবের সহলোন গ্রামে যান। তারপরেই বলবীর সহ তার পরিবারের সদস্যদের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সবাইকে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে বেরোনোর নির্দেশ পেয়েছেন তিনি।
১৯৯৯ সালে সুনীল গাভাস্কার যখন কমেন্ট্রি বক্সে আমন্ত্রণ জানান শচীনের এই লুক এলাইককে, তারপর গোটা দেশেরই পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। সেই ঘটনা স্মরণ করে বলবীর বলছিলেন, "সেদিন তাজ হোটেলে শচীনের সঙ্গে আমাকে সাক্ষাৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমি সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া ছটা ছবিতে অটোগ্রাফের জন্য আবদার করি। সেই ছবিতে স্বাক্ষর করার সময় আমি শচীনকে বলি এগুলো আমার ছবি, আপনার নয়। তা শুনে চমকে যায় শচীন।"
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ক্রিকেট-উবাচ
অপেশাদার ক্রিকেট নিয়ে বেশ আপত্তি আছে ব্রিটিশ সরকারের। সেই ইঙ্গিত দিয়েই গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়ে দিলেন, ক্রিকেট বল সংক্রমণের বাহক। তিনি সাফ জানিয়েই দেন, কোনো অবস্থাতেই অপেশাদার ক্রিকেট খেলার প্রশ্নই নেই।
হাউস অফ কমন্স এ কনজারভেটিভ পার্টির এমপি গ্রেগরি ক্লার্কের একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জনসন জানান, আমোদমূলক ক্রিকেটের জন্য এখনই বিধি নিষেধ তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় সরকার। তবে জানানো হয়েছে, তার এই মন্তব্য জুলাইয়ের ৮ তারিখ থেকে শুরু হতে চলা ক্যারিবিয়ান সিরিজের জন্য নয়। গ্রেগরি ক্লার্ক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, গ্রীষ্মের ক্রিকেট তো পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন কি ক্রিকেট খেলা পুনরায় চালু করা হবে!
জনসন বলেন, "ক্রিকেটের যেতা সমস্যা সেটা সবাই জানে। বল হল ভাইরাস সংক্রমণের একটি স্বাভাবিক বাহক। যে কোনো রেটে তা ভাইরাস ছড়াতে পারে। আমাদের বহু বিজ্ঞানী বন্ধুর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই মুহূর্তে করোনা-মুক্ত পরিবেশে কীভাবে খেলা যায়, সেই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। তবে এর জন্য নির্দেশিকা বদলানো যাবে না।"
জনসন জানান, ধীরে ধীরে নিয়ম শিথিল করা হবে। তবে এখনই আমোদমূলক ক্রিকেটের জন্য কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এরপরেই ইংল্যান্ডের অপেশাদার ক্রিকেট লিগ আয়োজক কর্তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।
সিপিএলে নেই গেইল
একদিন পরেই ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ড্রাফট ঘোষণা হওয়ার কথা। ঠিক ২৪ ঘন্টা আগেই সেই ড্রাফট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন সুপারস্টার ক্রিস গেইল। এবছর সিপিএলে অংশ নেবেন না তারকা ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র পেলে অগাস্টের ১৮ সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত ট্রিনব্যাগো এন্ড টোব্যাগোয় বসছে সিপিএলের আসর।
কেন খেলবেন না গেইল! ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লকডাউনের সময় পরিবারের কাছে থাকতে পারেননি গেইল। তিনি জামাইকায় থাকলেও গেইলের স্ত্রী এবং পুত্র ছিল সেন্ট কিটসে। তাই পরিবারের সঙ্গেই আপাতত তিনি সময় কাটাতে চাইছেন। সেই কারণেই এই বিরতির সিদ্ধান্ত।
ড্রাফটের আগেই ৪০ বছরের তারকা ক্রিকেটারকে কিনে নিয়েছিল সেন্ট লুসিয়া জুকস। গেইলের দরের মূল্য ১ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। অতীতে সিপিএলে জামাইকা তাহলোয়াস এবং সেন্ট কিটস এন্ড নেভিল প্যাট্রিওটস এর হয়ে খেলেছেন। জ্যামাইকার হয়ে দুবার চ্যাম্পিয়নও হন ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং দৈত্য। সেন্ট কিটসের হয়ে ২০১৭ সিপিএলের ফাইনালে খেলেছেন।