কার্গিল যুদ্ধে ছিলেন শোয়েব। মহিলা ক্রিকেটারদের স্বস্তি দিলেন সৌরভ। দ্রাবিড়কে কৃতিত্ব পিটারসেনের। বেতন ছাড়াই দশ মাস জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা। ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কার্গিল যুদ্ধে শোয়েব
কার্গিলের যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের বিশাল অঙ্কের আর্থিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। চাঞ্চল্যকর এমন দাবিতে এবার সোশাল মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দিলেন শোয়েব আখতার।
১৯৯৯-এর মে জুলাইয়ে কার্গিল যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে দুই দেশেরই অসংখ্য সৈনিক প্রাণ হারান। সেই যুদ্ধের দুই দশক পরে শোয়েব আখতার জানালেন, সেইসময় সবকিছু ছেড়ে দেশের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি।
পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমকে শোয়েব আখতার জানান, "সেই গল্পটা অনেকেই জানেন না। নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে খেলার জন্য আমার কাছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার পাউন্ডের বিপুল অঙ্কের প্রস্তাব ছিল। তার পাশাপাশি আরও একটা বড়সড় চুক্তি ছিল। আমি যুদ্ধের জন্য সমস্ত কিছুই ছেড়ে দিয়েছিলাম।"
শোয়েব আরো বলেছেন, "লাহোরের কাছে শহরতলিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেই সময় একজন জেনারেল এসে বলেন, আমি কি করছি। আমার জবাব ছিল, যুদ্ধ শুরু হতে চলেছে। সবাই একসঙ্গেই মরব। আমি দুবার এমনভাবে কাউন্টি ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছিলাম। ওরা ভীষণ শকড হয়। আমি আমার কাশ্মীরের বন্ধুদের ফোন করে বলি, আমি লড়াই করতে প্রস্তুত।"
শোয়েবের আরো সংযোজন, "ইন্ডিয়ার বেশ কিছু ফাইটার প্লেন এখানে ৬-৭টা ট্রি বোম ফেলে। সেখানে আহত হয়েছিলাম আমিও। সেদিন যখন ঘোর কাটিয়ে উঠি সেই সময়ও বেশ তন্দ্রাছন্ন ভাব ছিল। আমার স্ত্রী আমাকে শান্ত হতে বলে। পরের দিন খবর দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হই। আমি রাওয়ালপিন্ডিতে থাকি। আমি জানি যুদ্ধ কী জিনিস!"
একদশকের বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারে শোয়েব আখতার ৪০০টিরও বেশি উইকেট নিয়েছেন। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম দ্রুততম বোলার হিসাবে পরিগণিত হন তিনি।
Read the full article in ENGLISH
মহিলাদের আইপিএল
আইপিএলে আয়োজনে বদ্ধপরিকর বিসিইসিআই। তাহলে মহিলাদের আইপিএলের কী হবে, এমন প্রশ্ন ওঠে গিয়েছিল। তবে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আশ্বস্ত করে জানালেন, মহিলাদের আইপিএলও আয়োজন করবে বোর্ড।
সরকারিভাবে ঘোষণা না করলেও জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরের ১৯ থেকে নভেম্বরের ৮ তারিখ পর্যন্ত চলবে আইপিএল। এই উইন্ডোতে ই মহিলাদের আইপিএলও আয়োজন করে ফেলা হবে। জানালেন সৌরভ।
এদিন সংবাদসংস্থা পিটিআইকে মহারাজ জানিয়ে দেন, "মহিলাদের আইপিএলের চিন্তা আমাদের মাথায় ভালোভাবেই রয়েছে। জাতীয় দল নিয়েও আমরা ভাবছি।" বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলাদের এই চ্যালেঞ্জার সিরিজ ১-১০ নভেম্বর হতে পারে। তার আগে জাতীয় দল নিয়ে একটি ক্যাম্পের পরিকল্পনাও রয়েছে বোর্ডের।
বর্তমানে ভাইরাস সংক্রমণের কারণেই যে মহিলাদের ক্রিকেট শিবির পিছিয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "পুরুষ হোক বা মহিলা কোনো ক্রিকেটারদেরই আমরা প্রকাশ্যে বেরোতে দিতে পারিনা। এটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। কোভিডের কারণে এনসিএ-ও বন্ধ থাকবে। তবে মহিলাদের ক্যাম্পের বিষয়ে আমাদের অন্য পরিকল্পনা রয়েছে।"
বিসিসিআইয়ের ক্রিকেট অপারেশনস গ্রুপ আপাতত ব্যস্ত মহিলাদের ক্রিকেট সূচি চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। নিউজিল্যান্ডে ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে দুটো সিরিজ খেলতে পারেন হরমনপ্রীত কৌররা।
Read the full article in ENGLISH
দ্রাবিড় ও পিটারসেন
কীভাবে স্পিন বোলিংয়ের মোকাবিলা করতে হয়, তার টোটকা দিয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। সেই পরামর্শ আজও ভুলতে পারেন না, কেভিন পিটারসেন।
দ্রাবিড়ের কথা উঠলেই এক সাক্ষাৎকারে পিটারসেন জানিয়ে দেন, "স্পিন কীভাবে খেলতে হয় তা জানিয়ে দ্রাবিড় আমাকে একটা ইমেল করেছিলেন। আমার কাছে যেন একটা নতুন জগৎই খুলে যায়। মোদ্দা কথা হল, বোলারের হাত থেকে বল ছাড়া মাত্রই লেংথের দিকে ফোকাস করা। তারপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শট নির্বাচন।"
আইপিএলে দ্রাবিড়, বীরেন্দ্র শেওয়াগের সান্নিধ্যে থাকায় তাঁর শটের পরিধি যে অনেক বেড়ে গিয়েছিল, তা-ও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, আরসিবি, ডেকান চারজার্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জার্সিতে খেলেছেন তিনি। পিটারসেন জানিয়েছেন, শৈশবে স্কোয়াশ খেলে তিনি সুইচ হিট শট রপ্ত করেছিলেন।
২০০৪ থেকে ২০১৪ একদশক ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলার সময় বিশ্ব ক্রিকেট মাতিয়েছেন পিটারসেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১০৪ টি টেস্ট এবং ১১৪টি ওডিআই থেকে পিটারসেনের সংগ্রহে যথাক্রমে ৮১৮১ (৪৭.২৮ গড়ে) এবং ৪৪৪০ (৪০.৭৩ গড়ে)।
Read the full article in ENGLISH
বেতনহীন তারকা ক্রিকেটাররা
লকডাউনে আর্থিক ক্ষতির শিকার কেবল আমজনতাই হয়নি। বিশ্বের ধনীতম ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের তরফে তারকা ক্রিকেটারদের বেতনও আটকে রয়েছে। জানা গিয়েছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে বেতনহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন কোহলি-রোহিত শর্মা সহ বোর্ডের ২৭ জন চুক্তিভিত্তিক ক্রিকেটার। চার মাস অন্তর ক্রিকেটাররা প্রাপ্য বেতন পেয়ে থাকেন। সেই হিসাবে ডিসেম্বর থেকে জাতীয় ক্রিকেট দল যে দুটো টেস্ট, আটটা টি২০ এবং নটা ওডিআই ম্যাচ খেলেছে, সেই টাকা এখনও বকেয়া রয়ে গিয়েছে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন দিতে বার্ষিক বিসিসিআইয়ের খরচ হয় ৯৯ কোটি টাকা। বোর্ডের কমপক্ষে আটজন ক্রিকেটার ইন্ডিশন এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন গত দশ মাস বেতন পাননি তারা। এই বিষয়ে অরুণ ধূমলকে ফোন করা হলে তার জবাব মেলেনি।
আরও পড়ুন
কামড়ালেও বোঝা যাবে না, মৃত্যু ঘটবে নিঃশব্দে, গ্রামে-গঞ্জের এই সাপ চিনুন
বিসিসিআইয়ের তরফে শেষবার ব্যালান্স শিট প্রকাশ করা হয়েছিল ২০১৮-র মার্চে। সেখানে বলা হয়েছে বোর্ডের নগদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স এর পরিমাণ ৫৫২৬ কোটি টাকা। ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ ২৯৯২ কোটি টাকা। ২০১৮ র এপ্রিলে বোর্ডের সঙ্গে স্টার টিভির সম্প্রচার স্বত্ব অনুযায়ী চুক্তির পরিমাণ ৬১৩৮ কোটি টাকা।
ঘটনাচক্রে, গত ডিসেম্বর থেকে বোর্ডের কোনো ফিনান্সিয়াল অফিসার নেই। গত মাস থেকে ফাঁকা হয়েছে জেনারেল ম্যানেজার এবং সিইও পোস্ট-ও। বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী, সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিব জয় শাহের মেয়াদ ফুরিয়েছে। সব মিলিয়ে বেশ টালমাটাল অবস্থায় বিসিসিআই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জাতীয় দলের এক তারকা জানালেন, বোর্ডের তরফে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারদের জানানো হয়েছে, তিন মাস অন্তর বেতনের জন্য ইনভয়েস সংগ্রহ করতে। কিন্তু এবার কিছুই জানানো হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ক্রিকেটার জানালেন, "বেতনের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই আমাদের। শেষবার ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য বেতনের ইনভয়েস সংগ্রহ করতে বলা হয়। সেই টাকাও জমা পড়েনি।"
শুধু জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররাই নন। বয়সভিত্তিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদেরও বেতন নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদিও বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে প্রত্যেক রাজ্য সংস্থাকে বেতন বাবদ ১০ কোটি করে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Read the full article in ENGLISH
মোদি-মমতার শুভেচ্ছা ইস্টবেঙ্গলকে
শতবর্ষে অনেকটাই জৌলুসহীন ইস্টবেঙ্গল। কোয়েসের সঙ্গে টানাপোড়েন, নতুন ইনভেস্টর এখনও চূড়ান্ত না করতে পারা এবং দেশের সেরা লিগ আইএসএলে খেলা নিশ্চিত না করতে পারা। সবমিলিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোলে শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব। এর মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মন ভালো করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইস্টবেঙ্গল দিবসেই মোদির টুইটে ইস্টবেঙ্গল। নিজের টুইটে ইস্টবেঙ্গলের ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে তিনি লিখলেন, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ভিন্ন প্রজন্মের ফুটবলার, সদস্য এবং সমর্থকদের শতবর্ষের অভিনন্দন। ভারতের খেলাধূলার জগতে, পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে এটা একটা মাইলস্টোন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মশাল ময়দানকে আজীবন প্রজ্জ্বলিত করে রাখুক।"
Best wishes to generations of footballers, members and of course supporters on the centenary of @eastbengalfc. This is a milestone for Indian sport, and for the football traditions and sports-loving culture of West Bengal. May the East Bengal Mashal forever illuminate the Maidan!
— Narendra Modi (@narendramodi) August 1, 2020
শতবর্ষের লাল হলুদ ক্লাবকে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি নিজের টুইটে লেখেন, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এবং তার সমর্থকদের একশো বছরের শুভেচ্ছা জানাই। ইস্টবেঙ্গলের ঐতিহ্য বিশ্বের যে কোনো ক্লাবের কাছে ঈর্ষার বিষয়।"
Congratulations to @eastbengalfc & its fans for completing 100 years today. Your glorious legacy is an envy for football clubs around the world.
"১০০ বছর ধরে, মাঠ কাঁপাচ্ছে যে দল,
লাল-হলুদের ঝড়ের নাম ইস্ট বেঙ্গল"#EastBengalClub https://t.co/vAAmcGmMqo— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 1, 2020
অগাস্ট মাসের ১ তারিখ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবস। কীভাবে জন্ম হল ইস্টবেঙ্গলের? ইতিহাস বলছে, ১৯২০ সালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলা ছিল জোড়াবাগানের। সেই ম্যাচ থেকে বাদ দেওয়া হয় শৈলেশ বোস এবং নাসা সিংকে। জোড়াবাগানের সহ সভাপতি এবং চেয়ারম্যান সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী মোহনবাগানের কাছে অনুরোধ করেন যাতে বাতিল দুই ফুটবলারকে তারা নিজেদের একাদশে খেলাতে পারে। তবে সেই কথায় কর্ণপাত করেনি মোহনবাগান। তারপর সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী মোহনবাগানের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
আরও পড়ুন
কামড়ালেও বোঝা যাবে না, মৃত্যু ঘটবে নিঃশব্দে, গ্রামে-গঞ্জের এই সাপ চিনুন
বাদ পড়া দুই ফুটবলার ছিলেন পূর্ববঙ্গের। সুরেশ চন্দ্র চৌধুরীও ছিলেন সেখানকার। তারপরেই তাঁরা নতুন ক্লাব গড়তে উদ্যোগী হন।
১৯২০ সালে শৈলেশ বোস, নাসা সিং, তড়িৎ ভূষন রায়, মন্মথ নাথ রায়চৌধুরী, অরবিন্দ ঘোষ একসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের গোড়াপত্তন করেন। ভারতীয় ইতিহাসেই নতুন এক যুগের সূচনা হয়।