চিনা স্পনসরে এখনই নয় বিচ্ছেদ। প্রয়াত ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি এভার্টন উইকস। ইডেনে সম্মানিত হবেন তিনি। মনোহরকে কটাক্ষ শ্রীনির। একটাই শহরে হতে পারে আইপিএল। পাক ক্রিকেট নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ।
বিসিসিআই-ভিভো চুক্তি অটুট
আপাতত প্রধান স্পনসর ভিভো-র সঙ্গে চুক্তি ভাঙার পথে হাঁটবে না বিসিসিআই। বিসিসিআইয়ের এক কর্তা জানিয়ে দেন, এক্সিট ক্লজ নিয়ে খতিয়ে দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জুন মাসের ১৫ তারিখে লাদাখের গালোয়ান ভ্যালিতে ইন্দো-চিন সেনাদের মুষ্টিযুদ্ধে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা। তারপরেই সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি।
দাবি উঠে গিয়েছিল, ভারতীয় বোর্ডও চিনা স্পনসর বাতিলের পথে হাঁটুক। তবে, সেই পথে আপাতত এগোবে না ক্রিকেট বোর্ড। বোর্ডের এক শীর্ষ আধিকারিক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, "টি২০ বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না। তাই বোর্ডের জেনারেল কমিটির মিটিং ডেকে কি হবে! হ্যা, আমরা স্পনসরদের নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তবে সেখানে চুক্তি বাতিল কিংবা বিচ্ছেদ এমন শব্দ ব্যবহার করবো না।"
স্পনসরদের নিয়ে কী আলোচনা হবে তা-ও জানিয়েছেন সেই কর্তা, "আমরা স্পন্সরদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে দেখব। পর্যালোচনার অর্থ চুক্তির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা। যদি ভিভো-র একজিট ক্লজ ওদের সাহায্য করে তাহলে আমরা কেন বার্ষিক ৪০০ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল করব? আমরা তখনই বিচ্ছেদের পথে হাঁটব যখন পরিস্থিতি আমাদের জন্য অনুকূল।"
জানা গিয়েছে, ভিভো যদি নিজে থেকে চুক্তি বাতিল না করে তাহলে বোর্ড সেই পথে যাবে না। ২০২২ পর্যন্ত চুক্তি টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। কারণ, হঠাৎ চুক্তি বাতিল করলে বোর্ডকেও বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।"
প্রয়াত উইকস
ক্যারিবীয় ক্রিকেটের বিখ্যাত তিন ডব্লিউ-য়ের মধ্যে একজন ছিলেন। শেষ জীবিত সদস্য ছিলেন তিনিই। সেই এভার্টন উইকস বুধবার রাতেই চলে গেলেন না দেখার দেশে। ৯৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত বছরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে তাঁর। তিন 'ডব্লিউ' ক্লায়েড ওয়ালকট এবং ফ্রাঙ্ক ওরেল আগেই চলে গিয়েছিলেন। এবার মৃত্যু শেষ কিংবদন্তিরও। ওয়ালকট, ওরেল এবং উইকস- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বক্রিকেট শাসন করেছিলেন। ত্রিমূর্তির মধ্যে উইকস-ই ছিলেন সেরা ব্যাটসম্যান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে ৪৮ টি টেস্ট খেলেছেন। অবিশ্বাস্য ৫৮.৬২ গড় নিয়ে ৪৪৫৫ রান করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮- দশ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫টি শতরান হাঁকিয়েছেন তিনি। সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রোক প্লেয়ার হিসাবে মানা হয় তাঁকে।
তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্রিকেট দুনিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট রিকি স্কেরিট জানান, "ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি। একজন অসম্ভব ভালো মানুষ ছিলেন। প্রকৃত অর্থেই তিনি আমাদের দেশের ক্রিকেটের পিতা। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।" ক্যারিবীয় কিংবদন্তির প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ, বিষেন বেদিরা।
ইডেনে সম্মানিত হবেন উইকস
ইডেনের ক্রিকেট মিউজিয়ামে এবার ঠাঁই পেতে চলেছে এভার্টন উইকসের মূর্তি। এমনটাই জানানো হলে সিএবির তরফ থেকে।
সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া এদিন জানান, "আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এভার্টন উইকস একজন কিংবদন্তি। ক্রিকেট বিশ্বে ওঁর অভাব অনুভূত হবে। উনি কলকাতায় বিশেষভাবে স্মরণীয়। কারণ ইডেনে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি তিনিই হাকিয়েছিলেন।"
এর পরেই তিনি জানান, "আমরা ঠিক করেছি আমাদের মিউজিয়ামে ওঁর নাম সুস্পষ্টভাবে লেখা হবে। অতিমারীর ধাক্কা কেটে গেলেই এই কাজ শুরু হবে।"
সিএবি সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, "এভার্টন উইকসের মত প্রতিভা খুব কম আসেন। কলকাতার মানুষ ভাগ্যবান যে ওঁর মত একজন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এর খেলা স্বচক্ষে দেখেছে। আমার দাদুর থেকে ওঁর অনেক নাম শুনেছি। আমাদের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী সভায় ওঁর অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হবে। আমরা মন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানও স্মরণ করব, যিনি ওই ম্যাচে পাঁচ উইকেই নিয়েছিলেন।"
শ্রীনির কটাক্ষ মনোহরকে
বুধবারই আইপিএল চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরকারিভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর। তারপরেই মনোহরের দিকে তোপ দাগলেন বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি এন শ্রীনিবাসন। সাফ জানিয়ে দিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষতি করে বিশ্বের কাছে বিসিসিআইয়ের প্রাসঙ্গিকতা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন তিনি।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকারে শ্রীনি জানান, "বিসিসিআই-য়ে যখনই নতুন প্রজন্মের কোনো নেতা উঠে এসেছে, মনোহর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত। ও জানত, এখানে ওর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত নয়। তাই ও পালিয়ে গেল।"
আইসিসির প্ৰথম স্বাধীন চেয়ারম্যান হিসাবে ২০১৫ সালে দায়িত্ব নেন শশাঙ্ক মনোহর। এর পর টানা দুই টার্মে ক্ষমতায় ছিলেন। তবে নিজের বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিলই ভারতীয় এই ক্রিকেট প্রশাসকের কাছে। আইসিসির রুল বুক-ই বলছে, স্বাধীন চেয়ারম্যানরা তিনটে টার্ম পদে থাকতে পারেন। তবে মনোহর দুই টার্মের পরেই সরে দাঁড়ালেন সুযোগ থাকা সত্ত্বেও। তাঁর পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান হয়েছেন হংকংয়ের ইমরান খোয়াজা।
তবে শ্রীনির দাবি, বিসিসিআইয়ের প্রশাসক হিসাবে সৌরভ গাঙ্গুলী, জয় শাহ এর আসার পরই পালিয়ে যেতে একপ্রকার বাধ্য হলেন মনোহর।
মুম্বইয়ে আইপিএল?
আইপিএলে কি এবার এক শহরেই সব ম্যাচ আয়োজিত হতে চলেছে। এমন দাবি আগেই তুলেছিলেন কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইশোর। সূত্রের খবর এক ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে এমন প্রস্তাব পেয়ে রীতিমত ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে বোর্ড। অক্টোবরে মুম্বইতেই আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শহরে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
বোর্ডের এক আধিকারিক পিটিআইকে সেই ব্যাপারে জানাতে গিয়ে বলেন, "এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করা ভীষন তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। যদি অক্টোবরে মুম্বইতেই আয়োজন করা হয়, তাহলে ওখানে পরিস্থিতি কিন্তু অনেকটাই স্বাভাবিক। মুম্বাইতেই চারটে ফ্লাডলাইট মাঠ রয়েছে। বোর্ডের লজিস্টিক পরিকাঠামো, বায়ো সিকিওর পরিবেশ এবং সম্প্রচারকারী সংস্থার সুবিধে সবই করা সম্ভব।"
মুম্বইতেই তিনটে আইপিএল খেলার উপযুক্ত মাঠ রয়েছে-ওয়াংখেড়ে, ডিওয়াই পাতিল এবং ব্রেবোর্ন স্টেডিয়াম। এর পাশাপাশি রিলায়েন্সের ঘাসউলি-তে নিজস্ব মাঠ রয়েছে।
ইউনিস খান ও গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার
ছুরি নিয়ে গলায় ধরেছিল পাক ক্রিকেটার। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ব্যাটিং কোচ গ্রান্ট ফ্লাওয়ার। ২০১৪-২০১৯ পাঁচ বছর ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
জিম্বাবোয়ের সেই কোচই জানিয়েছেন, পাক ড্রেসিংরুমে কয়েকজন বেপরোয়া ছিলেন। তাদের মধ্যেই একজন ইউনিস খান। এক ক্রিকেট পডকাস্ট এ গ্রান্ট ফ্লাওয়ার বলছিলেন, একবার তাঁর দল নির্বাচনে এতটাই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন ইউনিস খান যে ছুরি নিয়ে তেড়ে এসেছিলেন। পরে মীমাংসা করে দেন কোচ মিকি আর্থার।
"ইউনিস খান একজন কঠিন চরিত্রেই ব্যক্তি। ব্রিলিয়ান্ট কেরিয়ারের অধিকারী। ব্রিসবেনের একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। সেই সময়ে ব্রেকফাস্ট টেবিলে ব্যাটিং নিয়ে কিছু একটা পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করি। হয়ত ওর কেরিয়ারের কাছে আমার আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান কিছুই নয়। ও পাকিস্তানের টেস্টে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী।" এমনটি জানিয়ে ফ্লাওয়ার আরো জানালেন, "তবে ও আমার পরামর্শ ভালোভাবে নেয়নি। ছুরি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে। গলায় চেপে ধরে। মিকি আর্থার আমার পাশেই বসে ছিলেন। উনি শেষ পর্যন্ত থামান। কোচিং জিনিসটাই ইন্টারেস্টিং। অনেক অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছি। শিখেছিও অনেক বিষয়। আমি আজ যে জায়গায় এসেছি তার জন্য আমি বেশ ভাগ্যবান।"