ভারতীয় ক্রিকেট প্রথম করোনার শিকার সঞ্জয় দোবাল। ওয়ার্নারকে নিয়ে মজা করলেন অশ্বিন। সোনাজয়ী এবার সবজি বিক্রেতা। বিশ্বকাপ নিয়ে তদন্ত শ্রীলঙ্কার। জিম্বাবোয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ স্থগিত।
করোনায় মৃত্যু দোবালের
বিশ্ব ক্রিকেটে করোনার থাবা আগেই আছড়ে পড়েছিল। এবার সেই ভাইরাস হানা দিল ভারতীয় ক্রিকেটেও। দিল্লির জনপ্রিয় ক্লাব ক্রিকেটার সঞ্জয় দোবাল করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণ হারালেন। জনপ্রিয় ক্লাব ক্রিকেটার খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর ক্রিকেট প্রশিক্ষণের কাজে যুক্ত ছিলেন। ২০১২ সালে অনুর্দ্ধ-১৬ দিল্লি দল জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই দলের কোচিং স্কোয়াডের অংশ ছিলেন সঞ্জয় দোবাল। রাজধানীর ভেঙ্কটেশ্বর হাসপাতালে করোনা জনিত জটিলতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় স্ত্রী ছাড়াও দুই সন্তান রেখে গেলেন তিনি। তাদের মধ্যে একজন সিধান্ত দোবাল, যিনি রাজস্থানের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন। কনিষ্ঠ পুত্র একাংশ আবার দিল্লির অনুর্দ্ধ-২৩ ক্রিকেটে গত বছরের অভিষেক ঘটিয়েছিলেন।
সঞ্জয় দোবাল এয়ার ইন্ডিয়ার ক্রিকেট দলের কোচ নিযুক্ত হয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩ নং টার্মিনার্সে নিজের ডিউটিতে কর্মরত ছিলেন। সেখানেই ১২ জুন জ্বরের লক্ষণ দেখা যায় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের তরফে হরিয়ানার বাহাদুরগড়ে জীবনজ্যোতি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা শুরু হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসক জানালেন, তিন দিন আগে করোনা পজিটিভ আসার পর ভাইরাসের জন্য প্রেসক্রাইবড ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চালানো হয়। ক্রীড়াবিদ হওয়ায় রিকভারির বিষয়েও আশাবাদী ছিলেন তাঁরা। সোমবার সকালেই করোনা জটিলতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটে তাঁর। দোবালের মৃত্যুর খবরে দিল্লির ক্রিকেট মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ওয়ার্নারকে ট্রোল অশ্বিনের
চিনকে বাণিজ্যিকভাবে আঘাত হানার জন্য সোমবার রাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ৫৯ টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপর থেকেই আপাতত ট্রেন্ডিং এই খবর। নিষিদ্ধ হওয়া অ্যাপের তালিকায় রয়েছে চিনা ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকও। তা নিয়েই এবার ডেভিড ওয়ার্নারকে খোঁচা দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
লকডাউনে ভারতীয় ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য নিজের টিকটক একাউন্ট থেকে একাধিক ভিডিও শেয়ার করেছেন বাঁ হাতি তারকা ব্যাটসম্যান। হিন্দি হোক বা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় গানের সঙ্গে ওয়ার্নার তো বটেই তাঁর পুচকি মেয়েকেও দেখা গিয়েছে কোমর দোলাতে।
সেই ভিডিও পোস্ট করতেই এতদিন ভাইরাল হত। যাইহোক, টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ার পরেই অশ্বিন টুইটারেই স্লেজ করা শুরু করে দেন ওয়ার্নারকে। টুইটারে খবর শেয়ার করে তারকা স্পিনার লেখেন, "অপ্পো আনোয়ার।" সুপারস্টার রজনীকান্তের সুপারহিট সিনেমা 'বাশা'-র একটি জনপ্রিয় সংলাপ এটি। যাঁর অর্থ, "এখন ডেভিড ওয়ার্নার কি করবেন!"
সোনাজয়ীর সবজি বিক্রি
রাস্তায় নেমে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন আটটা সোনার পদকজয়ী এথলিট গীতা কুমারী। খেলা ধুলা বন্ধ। রোজগার নেই তাই তারকা এথলিট ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলায় সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। এমন খবর মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কাছে পৌঁছতেই ব্যবস্থা নেন তিনি।
রামগড় জেলা প্রশাসনকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা গীতা কুমারীর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে আপাতত, মাসিক ৩০০০ টাকা তাঁকে দেওয়া হবে অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
সোশাল মিডিয়া মারফত মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন খবর পান গীতা কুমারী অর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রাস্তার ধারে সবজি বিক্রি করছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি রামগড় জেলার ডেপুটি কমিশনারকে নির্দেশ দেন গীতা কুমারীকে সাহায্য করার জন্য। যাতে তাঁর এথলেটিক্স কেরিয়ার বাধাপ্রাপ্ত না হয়।
সোমবারই ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সন্দীপ সিং এথলিটের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। মাসিক ৩০০০ টাকা ভাতার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যের একটি স্পোর্টস সেন্টারে অনুশীলনের বন্দোবস্তও করে দেওয়া হয়।
গীতা কুমারীর খুড়তুতো দাদা ধনঞ্জয় প্রজাপতি বলেন, "পাশের জেলা হাজারিবাগের আনন্দ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ও। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। নিজের কেরিয়ারের জন্য রাস্তায় সবজি বিক্রি করছিল। প্রশাসন ওকে সাহায্য করায় ও আপাতত খুশি।"
হাঁটা প্রতিযোগিতায় গীতা কুমারী রাজ্য স্তরে আটটা সোনা জিতেছেন। কলকাতায় অনুষ্ঠিত হওয়া এক প্রতিযোগিতায় একটি রুপো এবং ব্রোঞ্জ পদকও জেতেন।
ভারতের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে তদন্ত
বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ গড়াপেটা হয়েছিল কিনা, তা সরকারিভাবে তদন্ত শুরু করল শ্রীলঙ্কা সরকার। আগেই জানানো হয়, তদন্ত শুরু করতে চলেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। সেই কথাই মঙ্গলবার সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হল। শ্রীলঙ্কা ক্রীড়া মন্ত্রকের স্পোর্টস সচিব কেডিএস রুয়ানাচন্দ্রা এদিন সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানান, "ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন শুরু করা হয়েছে। ক্রীড়া সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে স্ব-শাসিত তদন্তকারী দল এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।"
চলতি মাসের শুরুতেই গত ২০ বছরে সেরা ক্রীড়া মুহূর্ত হিসাবে নির্বাচিত হয় ভারতের বিশ্বকাপ জয়। ফাইনালে হারের জ্বালা এখনো হজম করতে পারেনি ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের বাসিন্দারা। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় প্রচারমাধ্যমে জানানো হয়েছে, সেই সময়ে প্রধান নির্বাচক অরবিন্দ ডিসিলভাকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে মঙ্গলবার।
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে গড়াপেটা করে হেরেছে লঙ্কা বাহিনী। এমনটা দাবি করে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিলেন তৎকালীন শ্রীলঙ্কান ক্রীড়ামন্ত্রী মহিন্দ্রানন্দ আলুথগাম্যাগে। যার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার বর্তমান সরকার তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। গত সপ্তাহের বুধবারই প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রীর বয়ান নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
তিনি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনে বলেছিলেন, “২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে গড়াপেটা হয়েছিল। দায়িত্ব নিয়ে একথা জানাচ্ছি। কেউ আমাকে তর্ক-বিতর্ক আলোচনায় ডাকতেই পারে। সব ক্রিকেটাররা এতে জড়িত ছিল না। তবে দলের একটা অংশ এই কাজে যুক্ত ছিল।”
স্থগিত অস্ট্রেলিয়া-জিম্বাবোয়ে সিরিজ
করোনার সংক্রমণ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এরমধ্যেই তাই জিম্বাবোয়ে সফর স্থগিত করতে বাধ্য হল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। মঙ্গলবার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার তরফে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হল, অতিমারী এখনও নিয়ন্ত্রণে না আসায় দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডই অগাস্টে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ স্থগিত রাখায় সম্মত হয়েছে।
৯ অগাস্ট উত্তর অস্ট্রেলিয়ার কোনো একটি ভেন্যুতে জিম্বাবোয়ের সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলার কথা ছিল। ১২ ও ১৫ তারিখে পরের দুটি ম্যাচ সূচি অনুযায়ী। প্রথম দুই ম্যাচের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত না হলেও শেষ ম্যাচটি খেলার কথা টাউন্সভিলেতে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে আরো জানানো হয়, দুই দেশের বোর্ডই এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। ভবিষ্যৎ এ বিকল্প কোনো একটি সময়ে এই সিরিজ আয়োজন করা হবে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিক হকলে জানান, "এই সিরিজ স্থগিত করতে হওয়ায় আমরা রীতিমত হতাশ। ক্রিকেটার, ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক, স্বেচ্ছাসেবক, দর্শকদের স্বার্থের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম আমরা। এটাই এই মুহূর্তের বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত।"