বোর্ডের চিনা স্পনসরের বিরুদ্ধে সুর চড়াল সবাই। বয়স ভাঁড়ানো রুখতে নয়া উদ্যোগ বোর্ডের। বোর্ডের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন অরুণ লাল। রোহিত জবাব দিলেন রায়নাকে। ফের মুখ খুললেন আফ্রিদি।
অরুণ লালের ক্ষোভ
করোনার পরে মাঠে বল গড়ানোর আগেই শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। করোনার কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক নিয়মনীতি চালু করেছে ভারতীয় বোর্ড। তার মধ্যে একটি হল, যাঁরা ষাটোর্ধ্ব এবং অনাক্রমতা শক্তি বেশ কম তারা আর রাজ্য স্তরে কোচিং করাতে পারবেন না। যতদিন না সরকারি স্তরে নতুন কোনো নির্দেশিকা জারি হচ্ছে।
এই নিয়ম প্রযোজ্য হলেই বাংলা দলের কোচের পদ ছাড়তে হবে অরুণলালকে। এমন অবস্থাতেই বোর্ডের এমন নিয়মের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বাংলার ক্যানসারজয়ী কোচ। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ডের নিয়মের সমালোচনা করে তিনি সাফ জানালেন, "প্রধানমন্ত্রীর বয়স ৬৯ বয়স। ওঁরা কি প্রধানমন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে বলছে নাকি!"
বোর্ডের নিয়ম মেনে চললে বাংলায় আসন্ন ট্রেনিং ক্যাম্পে যোগ দিতে পারবেন না অরুণলাল। তবে তিনি বলছেন, "বাংলা দলকে কোচিং করাতে পারলাম কিনা, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে আমি আমার জীবন নিজের মত করে উপভোগ করব। ৬৫ বছর বয়স বলে নিজেকে একটি ঘরে আবদ্ধ রেখে বাকি ৩০ বছর কাটাতে পারব না।"
তাঁর যুক্তি, "সবাইয়ের মত আমিও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে সমস্ত নিয়ম- হাত ধোঁয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ববিধি, মাস্ক পড়া এসব মেনে চলছি। তবে ৬০ বছর বয়স বলেই আমি কোয়ারেন্টাইন করব নিজেকে, সেটা হবে না। কারণ ভাইরাস মোটেই জানে না কে ৫৯, কে ৬০।"
১৯৮৯-৯০ মরশুমে বাংলার রঞ্জি জয়ী দলের সদস্য ছিলেন। চার বছর আগে বিরল এক কর্কট রোগে আক্রান্ত হন। সেই রোগকে জয় করেই মাঠে ফিরে এসেছেন তিনি। অরুণলাল সাফ জানিয়েছেন, তিনি আপাতত নিজের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, "আমিই কোচের পদে থাকছি। আমাকে সরিয়ে দেওয়ার কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি। বুঝতে পারছি ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের স্বভাবিক চিন্তার কথা। তবে আমি কিন্তু বেশ ফিট। কোনো টিকা বেরোনোর আগেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমে যাবে।"
সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া অবশ্য আশাবাদী এই নিয়মের বদল হওয়ার বিষয়ে। তিনি বলেছেন, বিসিসিআইয়ের এই নিয়ম হয়ত সাময়িকভাবে পালন করা হবে। এবং এই নিয়মের সংশোধনও ঘটবে।
Read the full article in ENGLISH
বয়স জালিয়াতি রুখতে নয়া পদক্ষেপ
বয়সে জালিয়াতি থাকলে তা প্রকাশ্যে ঘোষণা করুক সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার, নাহলে ধরা পড়লেই দু-বছরের নির্বাসন। সোমবার এমনই নীতি ঘোষণা করে দিল বিসিইসিআই। বয়সে কারচুপি রুখতে এবার আরও কড়া হওয়ার ইঙ্গিত দিল বোর্ড।
সোমবার বোর্ডের প্রকাশ করা প্রেস রিলিজে দ্রাবিড়ও জানিয়েছেন, "বয়স জালিয়াতি একটা বড় ইস্যু। খেলার স্বাস্থ্যের পক্ষে তা মোটেই ভালো নয়। অনেক তরুণ ক্রিকেটার, যাদের নির্দিষ্ট বয়সের গ্রুপেই খেলার কথা তাঁরা সেটা করতে পারেন না। বিসিসিআই এখন এই বিষয়ে যথেষ্ট কড়া। তাই বোর্ডের নীতি মেনে সেই ক্রিকেটাররা নিজেদের চিহ্নিত করুক।"
২০২০-২০২১ মরশুম শুরুর আগে তাই বোর্ডের সাফ বার্তা চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের কেউ বয়স জালিয়াতি করে থাকলে নিজেদের দোষ স্বীকার করুক। বোর্ড তাদের কোনোরকম শাস্তি দেবে না। কিন্তু বয়স কারচুপি ধরা পড়লেই অপেক্ষা করবে কঠিন শাস্তি। গত বছর বোর্ডের পক্ষ থেকে ২৫০ জন ক্রিকেটারকে বয়স জালিয়াতির জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। যা কোনো এক বছরে সর্বোচ্চ। তারপরেই এমন 'অফার'-এর ভাবনা পুরোটাই রাহুল দ্রাবিড়ের মস্তিষ্কপ্রসূত।
এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বোর্ডের বয়সভিত্তিক বিভাগে নিজের বয়সের আসল প্রমাণপত্র নিয়ে চিঠি অথবা ইমেল পাঠাতে হবে।
বিসিসিআইয়ের চিকিৎসক অভিজিৎ সালভি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "এতদিন ধরে আমি, সাবা করিম, রাহুল দ্রাবিড় বয়স জালিয়াতি কীভাবে রোখা যায় তা নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। অনেক আলাপ আলোচনার পরেই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনমত আরো দু-একটি বিষয় যোগ করে নেওয়া যাবে।"
বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, "বয়স ভিত্তিক খেলায় সাম্যতা ফিরিয়ে আনতে বোর্ড বদ্ধপরিকর। আগামী ঘরোয়া ক্রিকেটে মরশুমে তাই কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে বয়স ভাড়িয়ে যাঁরা খেলবে, তাদের। ধরা পড়লে দু-বছর নির্বাসিত করা হবে।"
Read the full article in ENGLISH
রোহিত আর ধোনি
রোহিত শর্মাকে পরবর্তী ধোনি বলে দেগে দিয়েছিলেন সুরেশ রায়না। সেই মন্তব্যের পরেই এবার মুখ খুললেন রোহিত শর্মা। টুইটারে এক ভিডিও পোস্ট করে রোহিত শর্মা জানান, "রায়না আমাকে নিয়ে কী বলেছে, তা শুনেছি। তবে ধোনি একমেবাদ্বিতীয়ম। ওর মত কেউ হতে পারবে না। আর আমার বিশ্বাস এমনভাবে তুলনা করাও উচিত নয়। প্রত্যেক ব্যক্তিই আলাদা এবং তাঁদের শক্তি, দুর্বলতার অন্যদের থেকে পৃথক।"
সুপার ওভার পডকাস্টে রায়না এর আগে বলেছিলেন, "রোহিত ভারতীয় ক্রিকেটের পরবর্তী ধোনি। খুব সামনে থেকে ওকে নেতৃত্ব দিতে দেখেছি। রোহিত খুব শান্ত স্বভাবের এবং সকলের কথা শুনতে পছন্দ করে। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস জোগায়। আর সবচেয়ে বড় কথা সে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। ধোনি ও রায়না দুজনেই প্রায় একই রকম ক্যাপ্টেন।"
Q: Will we see a six-hitting competition between @hardikpandya7, @KieronPollard55, @lynny50 and you?#AskRo @ImRo45
- @mipaltan— Rohit Sharma (@ImRo45) August 2, 2020
প্রসঙ্গত, রায়না দুজনের নেতৃত্বেই খেলেছেন। জাতীয় দল ও সিএসকেতে ধোনির অধিনায়কত্বেই রায়না বছরের পর বছর খেলেছেন। আবার ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে রায়না খেলেছেন রোহিতের ক্যাপ্টেনশীপে।
আরও পড়ুন
পরিচয়পত্র নিয়ে কলকাতার হুন্ডাই শোরুমে ‘চাকরি’ কুকুরের, প্রকাশ্যে আনলেন স্বস্তিকা
আইপিএলে সাফল্যের বিচারে ধোনির থেকেও সফলতম নেতা রোহিত। ধোনির সিএসকে যেখানে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেখানে রোহিতের মুম্বইয়ের নামের পাশে চার বার ট্রফি জয় লেখা রয়েছে। পাশাপাশি, দশটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে জাতীয় দলের নেতৃত্ব সামলেছেন রোহিত। সাফল্যের হার শতকরা ৮০ শতাংশ।
Read the full article in ENGLISH
আইপিএলের চিনা স্পনসর
রবিবার গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল চিনা স্পনসরদের রেখেই আইপিএল আয়োজন করা হবে। তারপরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সংস্থা, ব্যবসায়িক কমিটির চরম তোপের মুখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত বোর্ড।
লাদাখে চীনা আগ্রাসনের সময় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে জানানো হয়, চিনা স্পনসরদের সঙ্গে চুক্তি খতিয়ে দেখা হবে। তারপরেই বিসিসিআইয়ের এমন স্ট্যান্সে ক্ষুব্ধ অনেকেই। কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লা যেমন রবিবারই টুইটারে লিখলেন, "দেশের মানুষকে চিনা দ্রব্য বর্জন করতে বলা হচ্ছে। এদিকে, চিনা মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা আইপিএলের টাইটেল স্পনসর হচ্ছে। আমরা নিজেরাই চিনা অর্থ, ইনভেস্টমেন্ট, স্পন্সরশিপ, বিজ্ঞাপন কীভাবে পরিচালনা করব সেই বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্থ। এই কারণেই চিন আমাদের এলাকায় নাক গলাচ্ছে।"
আরও পড়ুন
ভারতে আইপিএল দেখা যাবে কখন? ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে খেলা, জানুন সব খুঁটিনাটি
অন্য এক টুইটে জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল্লা আরও বলেন, "বিসিসিআইয়ের আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল চিনা স্পনসর ধরে রাখার বার্তা দিয়েছে। যে সকল মূর্খরা চিনা টিভি ভেঙে ফেলেছে এসব দেখার জন্য তাদের জন্য আমার সমবেদনা রইল।"
Chinese cellphone makers will continue as title sponsors of the IPL while people are told to boycott Chinese products. It’s no wonder China is thumbing it’s nose at us when we are so confused about how to handle Chinese money/investment/sponsorship/advertising.
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) August 2, 2020
প্রিন্ট-এ প্রকাশিত এক সংবাদ অনুযায়ী, আরো একধাপ এগিয়ে দেশের ব্যবসায়ীদের অন্যতম বড় সংগঠন কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছেন।
বিসিসিআইয়ের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে আরএসএস সহযোগী শাখা স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ। সংস্থার জাতীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন সরাসরি যুবসমাজকে বার্তা দিয়েছেন আইপিএল বয়কট করার জন্য।
Indian Premier League (IPL) is a business & those running this biz are insensitive towards the nation and it’s security concerns. Whole world is boycotting China, IPL is sheltering them. They should understand that nothing is above nation, not even cricket. Ppl may #BoycottIPL https://t.co/6nyjJ1nCSE
— ASHWANI MAHAJAN (@ashwani_mahajan) August 2, 2020
পিটিআইকে তিনি বলেছেন, "চিনা স্পনসর ধরে রেখে আসলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সীমান্তে শহিদ হওয়া জওয়ানদের প্রতি অশ্রদ্ধা ব্যক্ত করেছে। যখন দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ন চিনা-মুক্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, চিনা দ্রব্য বর্জন করার দিকে এগোচ্ছে দেশ, সেই সময় বিসিসিআইয়ের আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের এই কাজ সম্পূর্ন দেশের মুডের বিপরীতধর্মী।"
প্রসঙ্গত, বিসিসিআইয়ের টাইটেল স্পনসর চিনা সংস্থা ভিভো। এছাড়া পেটিএম, সুইগি, ড্রিম ইলেভেন-এর স্পন্সরশিপ রয়েছে আইপিএলে।
Read the full article in ENGLISH
আফ্রিদির মন্তব্য
বিশ্বের যে প্রান্তেই অন্যায় দেখবেন সেখানেই মুখ খুলবেন তিনি। কাশ্মীর প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্যে বারবার যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এমনটাই বললেন শাহিদ আফ্রিদি।
ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারকা ক্রিকেটার ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়ে জানালেন, "সবসময়েই সত্যি কথা বলা উচিত। মানবতা সবকিছুর উপরে। তাই কখনো নিজের মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধাবোধ করি না, তা ভারতকে নিয়ে হলেও।"
এর আগে সাম্প্রতিককালে একাধিকবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে আফ্রিদির মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। তিনি এদিন বলছেন সর্বশক্তিমানের কাছে অনুগত হিসাবে তাঁর দায়বদ্ধতা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলা।
মে মাসেই পিসিবিকে আফ্রিদি অনুরোধ করেছিলেন, পিএসএলে কাশ্মীর থেকে যেন একটা দল খেলানো হয়। সেই সঙ্গে ভারতের প্ৰধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চূড়ান্ত সমালোচনা করেন।
টুইটারে কাশ্মীরের হয়ে আওয়াজ তুলতে গিয়ে আফ্রিদি জানান, "সমর্থনে মুখ খোলার জন্য কোনো ধর্মবিশ্বাসের প্রয়োজন নেই। শুধু হৃদয় ঠিক জায়গায় থাকলেই হল। সেভ কাশ্মীর।"
কাশ্মীর আর মোদি মন্তব্যের পরে একাধিক ভারতীয় ক্রিকেটার পাক তারকাকে তোপ দেগেছিলেন। গম্ভীর সরাসরি জানিয়েছিলেন, ইমরান, আফ্রিদি, বাজওয়ার মত জোকাররা পাকিস্তানের জনগণকে বোকা বানাতে মোদি আর ভারতের বিরুদ্ধে বিষ ছড়িয়েই যাবে। তবে শেষ দিন পর্যন্ত কাশ্মীর দখল করতে পারবে না। সুরেশ রায়না, শিখর ধাওয়ান, হরভজন সিং, যুবরাজ সিংরাও ব্যাপক সমালোচনা করেন আফ্রিদির।
Read the full article in ENGLISH