চরম ডামাডোল চলছে ইস্টবেঙ্গলে। শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে স্নায়ুর লড়াই চলছে। চলতি মরশুমে ইনভেস্টর হিসাবে শ্রী সিমেন্টকে আর পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়। টার্মশিট মেনে চুক্তিপত্রে সই করতে অনীহা ইস্টবেঙ্গলের। আবার সই না করলে কোনো রকম আলোচনার বসবে না শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ক্লাবের স্পোর্টিং রাইটসও শ্রী সিমেন্টের কাছে গচ্ছিত। এমন অবস্থায় ক্ষতিপূরণ না পেলে সেই স্বত্ত্বও ছাড়বে না শ্রী সিমেন্ট।
সবমিলিয়ে প্রতিদিনই লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে সংশয় আর বিচ্ছেদের সুর প্রকট হয়ে উঠছে। প্রিয় দলের এই হাল বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে নজর রাখছেন ফিলিপ ডি রাইডারও। ইউরোয় তাঁর দেশ নামছে শনিবার রাতেই। তাঁর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানিয়ে দিলেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নেওয়া দরকার। সমস্ত কিছুর।
আরো পড়ুন: EXCLUSIVE: মারাদোনার সঙ্গে একটাও ছবি নেই! আক্ষেপ নিয়েই কফিনবন্দি দিয়েগোর ‘শিক্ষক’
হোয়াটসএপ কলে ডি রাইডার গল্পের ছলে জানাচ্ছিলেন, "যেকোনো দেশে ক্লাব চালানোর সবথেকে বড় বিষয় হল, আর্ট অফ ম্যানেজমেন্ট ঠিকমত পালন করা হচ্ছে কিনা, তা দেখা। বেলজিয়ামেই যেমন কিছুদিন আগে এক ক্লাবের শোচনীয় পারফরম্যান্সের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট। বার্সেলোনায় দেখুন, একাধিক অভিযোগ ওঠার পরে বার্তামিউকে নির্বাচনের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া হল।"
তাহলে কি তিনি ইস্টবেঙ্গলের ক্লাব কর্তাদের সরে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন? অর্থবহভাবে ইস্টবেঙ্গলকে ফেডারেশন ট্রফি দেওয়া কোচ বললেন, "দেখুন, কলকাতায় আমার অনেক বন্ধু বান্ধব রয়েছে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে পারি। আমার বক্তব্য হল, ক্লাবে সাফল্য অথবা ব্যর্থতার জন্য ফুটবলার-কোচদের যেমন দায়িত্ব নিতে হয়, তেমন ক্লাব কর্তাদেরও ভূমিকা থাকে। সঠিক পজিশনে যেমন ফুটবলার খেলাতে হয়, তেমন ক্লাব প্রশাসনেও সঠিক জায়গায় ঠিক লোক নিয়োগ করতে হয়। একেই বলে আর্ট অফ ম্যানেজমেন্ট! হয়ত, আমার ইস্টবেঙ্গল বন্ধুদের শুনতে খারাপ লাগবে, তবে মোহনবাগানের কর্তারা এই মুহূর্তে অনেক ভালোভাবে ক্লাব চালাচ্ছেন।"
আরো পড়ুন: মাদারের কলকাতা এখনও হৃদয়ে, সাক্ষাৎকারে অকপট মেসি-মারাদোনার আদরের ‘বুরু’
ইস্টবেঙ্গল প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে তিনি বেশ ফুরফুরে। ২০১৩ সালের পর থেকেই সেভাবে কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত নেই তিনি। টেকনিক্যাল এডভাইসর, স্কাউটিং সহ একাধিক ফুটবল প্রজেক্টে জড়িয়ে পড়েছেন। মাঝে এক বেলজিয়ান ম্যাগাজিনের সম্পাদনার কাজও করছিলেন। মাস তিনেক আগে গিয়েছিলেন ঘানার রাজধানী আক্রায়। সেখানে ক্রিস্টাল প্যালেসের একাডেমি তৈরির কাজে।
কলকাতা জীবন কেরিয়ারের অন্যতম সেরা, তা জানিয়ে রাইডার বলছিলেন, "২০১৩-র পর কিছুদিনের জন্য ব্রেক নিতে চেয়েছিলাম। ভারতে সেভাবে ভালো প্রজেক্ট পাচ্ছিলাম না যা আমার কোচিং সত্ত্বাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। তাছাড়া আমার কাছে জর্জিয়া, চীন থেকে অফার ছিল।"
আরো পড়ুন: EXCLUSIVE: রোনাল্ডোর হৃদয়টা পর্দার আড়ালে থাকে, বলছেন কিংবদন্তির কোচ গ্যাসপার
আপাতত এখন একমাস কেবল ইউরোয় ডুবে থাকতে চাইছেন। নিজের দেশকে নিয়ে অবশ্য বেশি আশাবাদী নন রাইডার সাব। বলছিলেন, "গত কয়েক বছর আগেও যে দল ছিল বেলজিয়ামের, এই দল তার থেকেও পরিণত। তবে সমস্যা একটাই- চোট আঘাত। ইডেন হ্যাজার্ড, কেভিন ডিব্রুইন চোটের শিকার। বাইরে উইটসলও। তাছাড়া আমাদের ডিফেন্স খুব ভালো হলেও বয়স বেড়ে গিয়েছে প্রত্যেকের। পরিবর্ত হিসাবে যাঁরা রয়েছে তাঁদেরও আবার ইউরোর মত টুর্নামেন্টে খেলার পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই।"
রাইডারের বাজি এখন ফ্রান্স। কেন? "ফ্রান্স দল এবারের টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ফেভারিট। সব পজিশনে বিশ্বমানের ফুটবলার রয়েছে। তবে ওদের ইগো সংঘাত না থাকলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একনম্বর দাবিদার। আর দলের মধ্যে পারস্পরিক সমস্যা থাকলেও অনেক দূর উঠবে, তবে সেক্ষেত্রে হয়ত চাম্পিয়ন হতে পারবে না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন