সোমবার রাতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া উয়াড়ি ক্লাবকে সাহায্য করতে এগিয়ে এল ভারতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএফএ। ঘটনার পরেই বঙ্গ ফুটবলের বেশ কিছু প্রতিনিধিকে নিয়ে উয়াড়ি ক্লাবে যান আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। এবং সমস্তরকমভাবে পাশে থাকার বার্তা দেন।
জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা আগে। ময়দানের শতাব্দী প্রাচীন এই ক্রিকেট ও ফুটবল ক্লাব এখন কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ক্লাব তাঁবুর ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে খেলোয়াড়দের ভবিষ্যতের উপরেও প্রশ্নচিহ্ন পড়ে গিয়েছে। খেলোয়াড়ি সমস্ত সাজ সরঞ্জাম স্রেফ ছাই হয়ে গিয়েছে। কল্যাণীতে সিএবি-র প্রথম ডিভিশনের চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ রয়েছে চলতি সপ্তাহেই। প্রথম প্রতিপক্ষ বেলগাছিয়া ইন্সটিটিউট।
সেই ম্যাচ অবশ্য নির্ধারিত সময়েই হবে। উয়াড়ি ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবল সচিব ও বর্তমানে কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্য পাঁচকড়ি দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানান, "খেলোয়াড়দের যাবতীয় সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে অভাবনীয় সাড়া পাচ্ছি ময়দানের পড়শি ক্লাবের পক্ষ থেকে। অনেকেই সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।" এই প্রসঙ্গেই তিনি উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের বরাভয়ের কথা জানান। ক্রীড়াপ্রেমী উৎপলবাবু নিজে উয়াড়ি ক্লাবেই ফুটবল ও হকি খেলতেন। প্রাক্তন ক্লাবের দুরবস্থায় তিনি স্থির থাকতে পারেন নি। ছুটে গিয়েছেন পুড়ে যাওয়া চেনা ক্লাবের প্রাঙ্গণে।
সেখানেই তিনি যেকোনও ভাবে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। ফোনে ধরা হলে উৎপলবাবু জানান, "ক্লাব ভয়ানক বিপর্যয়ের সাক্ষী থেকেছে। তাই যেভাবে সম্ভব সাহায্যের হাত যাতে বাড়িয়ে দেওয়া যায়, সেই আশ্বাস দিয়ে এসেছি। যেমন ক্লাবের পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে যদি সেনাবাহিনীর অনুমতির প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি নিজে গিয়ে কথা বলব। সাধ্যমতো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।"
বাংলার ফুটবল সংস্থার প্রধান উয়াড়ির পাশে দাঁড়ালেও এখনও অবশ্য সিএবি-র তরফে কোনও কিছু জানানো হয়নি। উয়ারি কর্তা পাঁচকড়িবাবু জানালেন, "অভিষেক ডালমিয়া সবই জানেন। সিএবি-র সভাপতি (সৌরভ গাঙ্গুলি) বর্তমানে শহরে নেই। তিনি এলে নিশ্চয় কিছু বার্তা দেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও বার্তা আসেনি।"
আগুনে পুড়ে যাওয়া উয়ারি ক্লাবের পাশে থাকার বার্তা উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের pic.twitter.com/nJc0MXmCOz
— IE Bangla (@ieBangla) April 2, 2019
এদিকে, উয়াড়িতে খেলেই উত্থান কিংশুক দেবনাথের। মোহনবাগান কাঁপানোর পরে বর্তমানে ইস্টবেঙ্গলের তারকা ময়দানে নজর কেড়েছিলেন উয়াড়ির জার্সি গায়েই। উয়াড়ির পরে ইউনাইটেডে সুযোগ পান এই বঙ্গসন্তান। পুরোনো ক্লাবের বিপর্যয়ের খবরে মন খারাপ কিংশুকের। তিনি বলছিলেন, "কলকাতার ময়দানে উয়াড়িতে খেলেই প্রথম পরিচিতি আমার। সেই ক্লাবের এমন খবরে খারাপ লাগছে। ক্লাবের পাশে সবসময়েই রয়েছি।"
ঘটনাচক্রে, উয়াড়ির অগ্নিকান্ড কিন্তু ময়দানের সমস্ত ক্লাবের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার গলদ দেখিয়ে দিয়েছে। অন্য ক্লাবগুলিও কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সংশয় ক্লাবের অন্দরমহলেই। ইস্টবেঙ্গলের সচিব রাজা গুহ জানালেন, "রীতিমতো চিন্তার বিষয়। ক্লাবের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ফুলপ্রুফ এমনটা মোটেও নয়। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে ক্লাবে আলোচনা হতে পারে। ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।"