প্রবল আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন একসময় বিশ্ব ক্রিকেট মাতিয়ে দেওয়া বিনোদ কাম্বলি। সরাসরি তাই এবার বাল্যবন্ধু শচীনের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করলেন। কোনওরকম কোচিংয়ের সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত হন কাম্বলি। সংসার চালানোর জন্য বোর্ডের দেওয়া সামান্য কিছু পেনশনই ভরসা।
নেরুলে শচীন তেণ্ডুলকার মিডলসেক্স গ্লোবাল একাডেমিতে উঠতি ক্রিকেটারদের কোচিং করাতেন তিনি। তবে যাতায়াতের সমস্যায় তিনি সেই কোচিংও ছেড়েছেন।
মিড ডে পত্রিকায় একান্ত সাক্ষাৎকারে কাম্বলি জানিয়েছেন, "প্রতিদিন ভোর পাঁচটার সময় ঘুম থেকে উঠতাম। তারপরে ক্যাবে করে ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে যেতাম। খুব পরিশ্রমের বিষয় ছিল পুরোটা। বিকালে তারপরে বিকেসি গ্রাউন্ডে কোচিং করাতে ছুটতাম। অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে বোর্ডের পেনশনের ওপর আমি নির্ভরশীল। এই মুহূর্তে বোর্ডের আয়-ই আমার উপার্জনের একমাত্র উৎস। বোর্ডের কাছে এই জন্য আমি কৃতজ্ঞ।"
আরও পড়ুন: ভারতকে নিষিদ্ধ করে কি ঠিক করল ফিফা! মনের কথা জানিয়ে মুখ খুললেন সৌরভ
আপাতত তিনি বোর্ডের পেনশনের ওপর নির্ভর না করে ক্রিকেট কোচিংয়ে ফিরতে চান। যাতে তাঁর আর্থিক সুরাহা হয়। বছর তিন হয়ে গেল তিনি ক্রিকেট কোচিং থেকে দূরে।
প্রাক-কোভিড জমানায় ২০১৯-এ মুম্বই টি২০ লিগে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচিংয়ে যুক্ত ছিলেন। তারপরে করোনা সমস্ত কিছু ওলটপালট করে দেয়। কোচিং থেকে দূরে সরে গিয়ে আপাতত বোর্ডের দেওয়া মাসিক ৩০ হাজার টাকার পেনশন নিয়ে দিন কাটছে একসময়ের দাপুটে এই ক্রিকেটারের।
মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার কাছে আপাতত তাই তিনি হাত পাততেও দ্বিধা করছেন না। তিনি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, "এমসিএ (মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা)-র কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। ক্রিকেট উন্নয়ন কমিটিতেও (সিআইসি) আমাকে রাখা হয়। তবে এটা পুরোটাই সাম্মানিক কাজ। এরপরে এমসিএ-র কাছে ফের একবার সাহায্যের জন্য যাই। পরিবারের ভরণপোষণ করার দায়ভার রয়েছে আমার। এমসিএ-কে একাধিকবার জানিয়েছি। কখনও যদি প্রয়োজন হয়, আমি সর্বদা প্রস্তুত। ওয়াংখেড়ে হোক বা বিকেসি সব জায়গায় যেতে রাজি।"
আরও পড়ুন: বিদেশি ছেড়ে দেশীয় কোচই এবার KKR-এর হেডস্যার! ম্যাককালামের জায়গায় এলেন রঞ্জির কিংবদন্তি
"মুম্বই ক্রিকেট আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। জীবনের জন্য ক্রিকেটের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তবে অবসরের পরে ক্রিকেটের সঙ্গে কোনও সংশ্রব থাকে না। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে কাজের সুযোগ প্রয়োজন। এমসিএ-র কাছে এই জন্যই বারবার তদ্বির করছি। আমি কেবল এমসিএ প্রেসিডেন্ট (বিজয় পাতিল) অথবা সচিবের (সঞ্জয় নায়েক) কাছে অনুরোধ করতে পারি।"
শচীন তাঁর বাল্যবন্ধু। ক্রিকেটে উত্থান দুজনের হাত ধরাধরি করে। স্কুল ক্রিকেটে দুজনের রেকর্ড আজও বিশ্বক্রিকেটে অম্লান। এমন আর্থিক দুরবস্থায় প্রিয় বন্ধু শচীনের উদ্দেশ্যে ছয়টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির মালিক বলে দিয়েছেন, "শচীন সমস্ত কিছুই জানে। তবে ওঁর কাছ থেকে আমার কোনও প্রত্যাশা নেই। ও-ই আমাকে টিএমজিএ (তেন্ডুলকার মিডলসেক্স গ্লোবাল একাডেমি) এসাইনমেন্ট দিয়েছিল। আমি খুশি হয়েছিলাম। ও বরাবর আমার ভালো বন্ধু। ও সবসময় আমার জন্য থাকবে।"
মুম্বই রঞ্জি দলে কাজ করতে মুখিয়ে জাতীয় দলের হয়ে ১২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা সুপারস্টার। মিড ডে-র সেই সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছেন, "আমি কাজ করতে ভালোবাসি। যেখানে তরুণ ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হবে। জানি মুম্বই অমল মুজুমদারকে হেড কোচ হিসেবে রিটেন করেছে। তবে আমার প্রয়োজন পড়লে আমি সর্বদা প্রস্তুত। আমরা একসঙ্গে খেলেছি। দারুণ একটি দলের প্রতিনিধিত্ব করেছি। মুম্বই দল হিসেবে খেলুক, সেটাই চাই।"