বুধবার ৪৩তম জন্মদিনে পা দিলেন বীরেন্দ্র শেওয়াগ। তর্কাতীতভাবে শেওয়াগ সর্বকালের অন্যতম সেরা ওপেনার। টেস্টে ওপেনিংয়ের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছিলেন প্রথাভাঙা ছকে। 'বল দেখো, উড়িয়ে দাও'- এই নিজস্ব নীতিতেই শেওয়াগ রেকর্ডের পরে রেকর্ড বন্যা বইয়ে দিয়েছেন মাঠে।
অজয় জাদেজার নেতৃত্বে জাতীয় দলে অভিষেক ঘটলেও, শেওয়াগ বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। মহারাজের নেতৃত্বে শেওয়াগ তিন ফরম্যাটে ভারতের অপরিহার্য অংশ হয়ে ওঠেন। টেস্টে ভারতের প্ৰথম ত্রিশতরানের মালিক শেওয়াগ সাদা বলের ক্রিকেটে সৌরভের সঙ্গেও অনেক স্মরণীয় পার্টনারশিপ উপহার দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ৪ বলে ৪ উইকেট! আয়ারল্যান্ড বোলারের রেকর্ডে তছনছ যাবতীয় কীর্তি, দেখুন ভিডিও
ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে শেওয়াগ এবং সৌরভ ধুন্ধুমার সূচনা করে যান ব্যাট হাতে। সেই পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়েই ভারতকে চিরস্মরণীয় জয় এনে দেন মহম্মদ কাইফ এবং যুবরাজ সিং। লর্ডসের সেই ঐতিহাসিক ম্যাচেই সৌরভকে নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়ে যান স্বয়ং শেওয়াগ।
ক্লাস প্লাসের শেয়ার করা 'এক্সট্রা ক্লাস উইথ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়' শীর্ষক ইউটিউব ভিডিওয় সৌরভ জানিয়েছেন কীভাবে লর্ডসের সেই ম্যাচে শেওয়াগ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। "আমরা ফাইনালে ৩২৫ তাড়া করছিলাম। ব্যাট করতে নামার সময় আমি বেজায় হতাশ এবং সেই সঙ্গে অসন্তুষ্ট ছিলাম। তবে শেওয়াগের বিশ্বাস ছিল, সেই ম্যাচে আমরা জিতব। শুরুটা আমরা দারুণ করেছিলাম (১২ ওভারে ৮২)। তারপরে শেওয়াগকে বলি, নতুন বলে বোলারদের দেখে নিয়েছি। এখন উইকেট না হারিয়ে সিঙ্গলসে ফোকাস করতে হবে।" বলছিলেন সৌরভ।
আরও পড়ুন: কোহলি কি হিন্দু বিদ্বেষী! দিওয়ালির বার্তা দিতেই ক্ষেপে গেলেন অনেকে
"এরপরে যখন রনি ইরানি বল করতে এল, শেওয়াগ প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকাল। আমি তখন ওঁর কাছে গিয়ে বলি, ওভারে একটা বাউন্ডারি হয়ে গিয়েছে। এবার সিঙ্গলস নিতে হবে। তবে শেওয়াগ আমার কথায় কর্ণপাত না করে দ্বিতীয় বলেও বাউন্ডারি হাঁকাল। এরপরে তৃতীয় বলেও বাউন্ডারি এল।" স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছেন সৌরভ।
তবে শেওয়াগের এই কীর্তিতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ করে তোলে সৌরভকে। বোর্ডের বর্তমান সভাপতি শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করেন, শেওয়াগকে আটকে রাখার কোনও অর্থই নেই।
সৌরভ শেই ঘটনা স্মরণ করতে গিয়ে বলেছেন, "প্রথমে আমি ব্যাপক রেগে গিয়েছিলাম। এরপরে শেওয়াগ পঞ্চম বলেও বাউন্ডারি হাঁকায়। সেই সময় আমি বুঝতে পারি শেওয়াগকে দমিয়ে রাখার কোনও অর্থ নেই। কারণ ও স্বভাবজাত আক্রমণাত্মক ক্রিকেটার। ক্রিকেটারের মানসিকতা অনুযায়ী ক্যাপ্টেনকে মানিয়ে নিতে হয়।"
নজফগড়ের নবাব শেওয়াগ ১০৪ টেস্টে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট উপহার দিয়েই ৮৫৮৬ রান করেছেন। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তাঁর নামের পাশে ৮২৭৩ রান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন