'বোবা পালোয়ান' নামে তিনি পরিচিত। বাকশক্তি না থাকলেও মুষ্টির জোর যথেষ্ট। সেই বীরেন্দ্র সিং যে এমন কীর্তি করবেন, ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কেউ। ২৪ ঘন্টা আগেই বীরেন্দ্র সিংয়ের কীর্তিকে সম্মান জানিয়ে পদ্মশ্রী তুলে দেওয়া হয়েছিল কুস্তিগিরের হাতে। আর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই হরিয়ানা ভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্ণায় বসলেন তিনি। তাঁর দাবি, বোবা এবং কালা ক্রীড়াবিদদের জন্য প্যারা স্ট্যাটাস দেওয়া হোক।
বোবাদের অলিম্পিকে বীরেন্দ্র ২০০৫, ২০১৩ এবং ২০১৭-য় সোনা জিতেছেন। ২০০৯-এ জিতেছেন ব্রোঞ্জ পদকও। অলিম্পিকের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপেও তাঁর সাফল্য নজরকাড়া। ২০১৬-য় বোবাদের কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা, ২০০৮ এবং ২০১২-য় জেতেন যথাক্রমে রুপো এবং ব্রোঞ্জ।
আরও পড়ুন: ভাগ্য সঙ্গ দিল না ইন্ডিয়ার এই পাঁচ তারকাকে! জাতীয় দল থেকে সটান বাদ
তাঁর সাফল্যকে সম্মান জানাতেই ২০১৫-য় অর্জুন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় তাঁর হাতে। তার আগে রাজীব গান্ধী রাজ্য ক্রীড়া খেতাবও পেয়েছেন। মঙ্গলবার পদ্মশ্রী পাওয়ার পরে বীরেন্দ্র সিং লিখে জানান, "মহামান্য প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোভিন্দের কাছ থেকে পদ্মশ্রী পাওয়ায় আমি অভিভূত। এই সম্মানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।"
বীরেন্দ্র সিংয়ের সম্মান পাওয়ার মুহূর্ত গর্বের উল্লেখ করে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার জানান, "হরিয়ানার প্যারা কুস্তিগির এবং ফ্রি স্টাইলে চ্যাম্পিয়ন বীরেন্দ্র সিংয়ের পদ্মশ্রী পাওয়া গোটা রাজ্যের কাছেই রীতিমত সম্মানের বিষয়। ওঁর প্রতি অনেক অভিনন্দন রইল।"
তবে মনোহরলাল খাট্টারের এমন বক্তব্যের পরেই ক্ষুব্ধ হন বীরেন্দ্র সিং। তিনি জানান, "মুখ্যমন্ত্রী আপনি যদি আমাকে প্যারা এথলিট মনে করেন, তাহলে আমাদের প্যারা এথলিটদের মত অধিকার দেন না কেন! গত চার বছর ধরে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে চলেছি। এখনও আমি একজন জুনিয়র কোচ। প্যারা এথলিটদের মত আর্থিক সাহায্যও পাইনি। গতকাল এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এবার আপনি সিদ্ধান্ত নিন।"
এরপরে রাজধানী দিল্লিতে হরিয়ানা ভবনের সামনে নিজের ধর্ণারত এক ছবি পোস্ট করে টুইটারে লেখেন, "মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়, দিল্লির হরিয়ানা ভবনের সামনে ফুটপাথে বসে রয়েছি। যতদিন না আপনি বোবা ক্রীড়াবিদদের প্যারা স্ট্যাটাস দেবেন, ততদিন আমি এখান থেকে নড়ব না। কেন্দ্র যদি আমাদের সম মর্যাদা দেয়, তাহলে আপনি দেবেন না কেন?"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন