Advertisment

“আজকাল ছেলেরা বাবা-মায়ের কথাই শোনে না, কোচের কথায় ন্যাড়া হয়ে যাবে?”

গত ২৪ ঘণ্টায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ঘুরছে। প্রায় ভাইরালের পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, জনা বারো যুবক মুন্ডিত মস্তকে এক ফ্রেমে। প্রথম প্রশ্ন, এরা কাঁরা? দ্বিতীয়, কেন তাঁরা ন্যাড়া হলেন?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coach Forces Players To Shave Heads

“আজকাল ছেলেরা বাব-মা’র কথাই শোনে না, কোচের কথায় ন্যাড়া হয়ে যাবে!” (ছবি-টুইটার)

গত ২৪ ঘণ্টায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ঘুরছে। ঘটনাটা প্রায় ভাইরালের পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, জনা বারো যুবক মুন্ডিত মস্তকে এক ফ্রেমে। প্রথম প্রশ্ন, এরা কাঁরা? দ্বিতীয় প্রশ্ন, কেন তাঁরা ন্যাড়া হলেন। এঁরা প্রত্যেকেই জব্বলপুরে অনুষ্ঠিত হকি ইন্ডিয়ার নবম অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় হকি প্রতিযোগিতায় বাংলার হয়ে খেলেছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালে হরিয়ানার কাছে ১-৫ গোলে হারার পরেই কোচ আনন্দ কুমারের ফরমানেই এমনটা করেছেন তাঁরা। 

Advertisment

বছর আঠাশের আনন্দ এক মাস হয়েছে রাহুল কুমার, গৌতম শর্মাদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। হাওড়ার রেল কলোনির বাসিন্দা আনন্দ রবিবার, অর্থাৎ গতকালই এই ঘটনার কথা শুনেছেন। কিন্তু স্ত্রী’র অসুস্থতার জন্য ধরেত পারেননি কারোর ফোনই। সোমবার দুুপুরে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা আনন্দবাবুকে ফোন করায় তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রী-র লিগামেন্টের সমস্যা। সম্ভবত আজই অস্ত্রোপচার হবে। তিনি সকাল থেকেই রয়েছেন হাসপাতালে। এই ঘটনায় তিনি রীতিমতো স্তম্ভিত। বলছেন, “ম্যাচের সময় খেলোয়াড়দের খারাপ পারফরম্যান্স দেখে বলেছিলাম, তোমরা কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি খেলে এভাবে হেরে গেলে? বাংলার নাম খারাপ করছ, তেমাদের মাথা মুড়িয়ে দেওয়া উচিত। আমি উত্তেজনার বশে কথাগুলো বলেছিলাম। একটা হতাশা থেকে ওদের বকাবকি করেছিলাম। কিন্তু আমি কাউকে বলিনি ন্যাড়া হতে। গত শুক্রবার আমরা জব্বলপুর থেকে হাওড়ায় নেমেছি। ওখানেই আমার দায়িত্ব শেষ। তারপর যে যার মতো ফিরে গিয়েছে।"

আরও পড়ুন: মাথা ন্যাড়া করে হারের শাস্তি! বিরল নজির বাংলা হকির

আনন্দের বিরুদ্ধে এমনও অভিযোগ, তিনি নাকি খেলোয়াড়দের বলেছেন, বাড়ি গিয়ে প্রত্যেকেই যেন হোয়াটসঅ্যাপ করে তাঁদের মুন্ডিত মস্তকের ছবি তাঁকে পাঠায়। এমনটা না-করলে ভবিষ্য়তে তাঁদের বাংলা দলে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। আনন্দ বললেন, “আমি কখনও কাউকে এরকম করতে বলিনি। আর আমি যদি ন্যাড়া করাতামই, তাহলে জব্বলপুরেই করাতাম। এখানে এসে কেন? সবচেয়ে অবাক লাগছে, গত শুক্রবার আমরা ফিরেছি। আর সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে দু’দিন পর। আমার মনে হয় এখানে কোনও রাজনীতি চলছে। আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। ক্যাপ্টেন রাহুল কুমারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ও নিজে আমাকে বলেছে, লজ্জিত হয়ে নিজেদের ইচ্ছায় এই কাজ করেছে ওরা। আজকাল ছেলেরা বাবা-মায়ের কথাই শোনে না, কোচের কথায় ন্যাড়া হয়ে যাবে? আমি খেলোয়াড়দের চাঙ্গা করতে, ওদের মধ্যে জোশ আনতে বকাবকি করি। এটা তো সব কোচই করে থাকে। আপনি খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে দেখুন, ওরা কী বলে। আমি চাই বাংলার হকির মুখ উজ্জ্বল হোক। খেলার মান আরও ভালো হোক। এরকম ছোট ব্যাপারগুলোকে ইস্যু করে সামনে আনা উচিত নয়।"

বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েনের সহকারি সচিব মহম্মদ খালিদ হোসেন ফোনে বললেন, “আমি কলকাতার বাইরে রয়েছি। আমি ওখানে ছিলাম না। কিন্তু যা ঘটেছে তা অত্য়ন্ত ন্যক্কারজনক। কোচ আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যাবে, ঠিক কী হয়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে কোচের কথা হয়েছিল, ও জানিয়েছে, এরকম কিছু করার কথাই বলেনি। শুধু উত্তেজনার বশে মাথা ন্যাড়ার কথা বলেছিল।"

যে কারণে খবরের শিরোনামে আসা উচিত, ঠিক তার উল্টোপথে হেঁটেই একের পর এক বিতর্ক ডেকে আনছে বঙ্গজ হকি। বলা ভালো বিএইচএ।  গত নভেম্বরের কথাই ধরা যাক, ডেকার্স লেনে রাজ্য হকি সংস্থার অফিসে আচমকাই ঝুলিয়ে দেওয়া হলো তালা। বরখাস্ত হলেন পাঁচজন কর্মী। যদিও ডিসেম্বরে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বেটন কাপ আয়োজন করে কিছুটা হলেও বাংলার হকি আলো দেখেছিল। ফের একবার এই ঘটনায় দেশের সামনে মুখ পুড়ল রাজ্যের।

Hockey India
Advertisment