East Bengal FC Ranti Martins: ভারতীয় ফুটবলে বহু বিদেশি ফুটবলার এসেছেন। খেলে গিয়েছেন নামী-দামি ক্লাবে। ভারতীয় ফুটবলের মক্কা কলকাতায় এরকম অনেক বিদেশি তারকা এসে খেলে গিয়েছেন। কলকাতার তিন প্রধান মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান স্পোর্টিং ছাড়াও ময়দানের অনেক ছোট ক্লাবে খেলেও তারকা বিদেশিরা নাম করেছেন। সেরকমই একজন ছিলেন ব়্যান্টি মার্টিন্স। কলকাতা ময়দানে তিনি আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় ভারতে দাপটের সঙ্গে খেললেও আচমকা হারিয়ে যান ব়্যান্টি। বর্তমান তিনি কোথায়, সেই প্রশ্নের উত্তর অনেকেরই অজানা। আজ জানব তাঁর সম্পর্কে।
আইএসএল শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় ফুটবলের ১ নম্বর পেশাদার লিগ ছিল আই লিগ। এক দশক আগেও আই লিগ ছিল দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লিগ। সেসময় ভারতীয় ফুটবলে নাইজেরিয়ান ফুটবলারদের দাপট ছিল দেখার মতো। অনেক নাইজেরিয়ান ফুটবলার খেলেছেন ভারতে। ২০০৪ সালে গোয়ার ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাব থেকে ভারতীয় ফুটবলে পা রাখেন নাইজেরিয়ার ব়্যান্টি মার্টিন্স। তার পর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আরও পড়ুন দলবদলে বিরাট চমক ইস্টবেঙ্গলের, লাল-হলুদে সই ৩ 'বাঘা' বঙ্গসন্তানের
কেরিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন ডেম্পোতে। ২০০৪ সালে প্রথম বছরই ডেম্পোর হয়ে জেতেন ফেডারেশন কাপ। গোয়ার ক্লাব ৫ বার ভারতসেরা ট্রফি জিতেছেন ব়্যান্টি। ২ বার জাতীয় লিগ এবং ৩ বার আই লিগ জেতেন। ডেম্পোর হয়ে ডুরান্ড কাপও জেতেন। ডেম্পোর হয়ে ১৬৪ ম্যাচে ১৪৬টি গোল করেছিলেন নাইজেরিয়ার ফুটবলার।
২০১২ সালে প্রথমবার কলকাতার ফুটবলে পা রাখেন ব়্যান্টি। কলকাতার বড় ক্লাবে খেলার স্বপ্ন ছিল অনেকদিনের। প্রথমবার প্রয়াগ ইউনাইটেডে খেলেছিলেন। তার পর একটা মরশুম রাংদাজিদ ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন। সেখান থেকে যোগ দেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। ২০১৪ সালে ইস্টবেঙ্গলে সই করার পর কলকাতা ময়দান মাতিয়ে দেন তিনি। তাঁর গোলখিদে ছিল মারাত্মক। লাল-হলুদ জার্সিতে সেরার সেরা ফর্মে ছিলেন। সেইসময় ডুডু এবং ব়্যান্টি ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন বিপক্ষ ক্লাবের ত্রাস। লাল-হলুদ জার্সিতে ব়্যান্টি ৬০টি ম্যাচ খেলে করেন ৪৩ গোল। ২ বার সোনার বুট জেতেন আই লিগে। তবে আই লিগ জিততে পারেননি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে।
আরও পড়ুন দলবদলের বাজারে বাম্পার চমক ইস্টবেঙ্গলের, এই দুর্ধর্ষ ফুটবলার লাল-হলুদের পথে
ট্রেভর জেমস মরগ্যান দ্বিতীয়বার ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়ে আসার পর ব়্যান্টি বাদ পড়েন দল থেকে। তার পরই ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। যোগ দেন মালয়েশিয়ার পেনাং এফসি-তে। ২০১৬ সালে পেনাংয়ের হয়ে ১০টি ম্যাচে করেন ৪টি গোল। বয়স বাড়ছিল, কমছিল গতি। এর পর আমেরিকার সকার লিগে মেরিল্যান্ড এসজি এফসি ইগলসে খেলেন ব়্যান্টি। ফর্ম না থাকায় ২০২০ সালে ফুটবলকে বিদায় জানান ব়্যান্টি। বর্তমানে নিজের দেশে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করছেন বলে জানা গিয়েছে। নতুন ব্যবসায় সাফল্যও পেয়েছেন। তবে কলকাতার ময়দানি ফুটবল ভোলেনি ব়্যান্টিকে, কোনওদিন ভুলবেও না।