BCCI central contracts Ishan Kishan Shreyas Iyer Hardik Pandya: ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার মাপকাঠিতেই বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন শ্রেয়স আইয়ার-ঈশান কিষান। এই নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ক্রিকেট মহলে। একই মাপকাঠিতে বোর্ডের চুক্তিতে জায়গা করে নিয়েছেন আবার হার্দিক পান্ডিয়াও। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেননি তিনিও। তাহলে কীভাবে একই যাত্রায় পৃথক ফল হল?
ইরফান পাঠান তো বোর্ডের দ্বৈত নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। প্রাক্তন তারকা বিস্ফোরক টুইটে লিখেছেন, “শ্রেয়স এবং ঈশান দুজনেই প্রতিভাবান ক্রিকেটার। আশা করি, ওঁরা দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন করবে। তবে হার্দিক পান্ডিয়ার মত ক্রিকেটাররা যদি লাল বলের ক্রিকেট না খেলতে চায়, তাহলে জাতীয় দলের হয়ে খেলা না থাকলে কারা অংশগ্রহণ করবে? নিয়ম যদি সকলের জন্য সমান না হয়, তাহলে ভারতীয় ক্রিকেট কিন্তু এগোবে না।”
কেন হার্দিককে রাখা হয়েছে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্দিক নাকি বোর্ডকে আশ্বস্ত করেছেন, জাতীয় দলের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে না খেলার ব্যাপার থাকলে তিনি বরোদার হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি এবং বিজয় হাজারে ট্রফিতে অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: ঈশান-শ্রেয়সকে বাদ দিতেই মুখ খুললেন সৌরভ! জয় শাহের BCCI নিয়ে করলেন বড় মন্তব্য
বোর্ডের সাম্প্রতিক যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে ঈশান-শ্রেয়সের না খেলার পাশাপাশি হার্দিকের ঘরোয়া ক্রিকেটে অনুপস্থিত থাকা নিয়েও আলোচনা হয়। গত বিশ্বকাপে।বাংলাদেশ ম্যাচে চোট পাওয়ার পর প্রতিযোগিতা মূলক ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। চোট সারিয়ে উঠেও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেননি গত সপ্তাহ পর্যন্ত। শেষে ডিওয়াই পাতিল টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন তিনি রিল্যায়েন্স দলের হয়ে। ঈশান কিষানের মত তিনিও ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে পার্থক্য একটাই, হার্দিক নিজের ফিটনেস সংক্রান্ত বিষয়ে এনসিএ-র সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেছেন। যা করেননি ঈশান কিষান।
বিসিসিআইয়ের শীর্ষ এক কর্তা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে না খেললে হার্দিক ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবেন, সেই বিষয়ে তিনি বিসিসিআইকে আশ্বস্ত করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বোর্ডের সেই কর্তা জানিয়েছেন, "হার্দিকের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। সময় হলেই ও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবে, আমাদের জানিয়ে দিয়েছে ও। বোর্ডের মেডিক্যাল টিমের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, চোট থেকে সদ্য সেরে ওঠা হার্দিক লাল বলের ক্রিকেট খেলার মত অবস্থায় নেই। তাই হার্দিকের রঞ্জিতে খেলার প্রশ্নই নেই। তবে ওঁকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললে ঘরোয়া স্তরে সাদা বলের টুর্নামেন্ট খেলতে হবে। নাহলে ওঁকেও চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হবে।"
ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম অনুযায়ী, আসন্ন সিজনে ভারতের ঠাসা ক্রিকেট সূচি রয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি২০ সিরিজ রয়েছে একমাত্র। আর ঘরোয়া স্তরে বিজয় হাজারে, সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি যখন অনুষ্ঠিত হবে, সেই সময়ে ভারতের সীমিত ওভারের ফরম্যাটে কোনও সূচি নেই। জানা যাচ্ছে, এই দুই ঘরোয়া টুর্নামেন্টেই হার্দিককে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও জাতীয় দলের সেট আপে না থাকলে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারকে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার ঘরোয়া ক্রিকেট চলাকালীন একাধিক রাজ্যের ক্রিকেটারকে নিয়ে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর ক্যাম্প আয়োজনের দৃষ্টান্তও রয়েছে। শ্রেয়স আইয়ারই যেমন রঞ্জিতে মুম্বইয়ের হয়ে না খেলে কেকেআর ক্যাম্পে ছিলেন।
গত সিজনে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই শ্রেয়স এবং ঈশান জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও স্রেফ ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার অপরাধে কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে দুই তারকাকে। যা নিয়ে দেশের ক্রিকেট মহল আপাতত দ্বিধাবিভক্ত। এমনকি বোর্ড সচিব জয় শাহের প্রকাশ্যে বিবৃতির পরেও শ্রেয়স-ঈশান কর্ণপাত করেননি।