Advertisment

কেন ইস্টবেঙ্গলের জার্সির রং লাল-হলুদ?

ইস্টবেঙ্গল আজ সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে। স্মৃতির সরণী বেয়ে উঠে আসছে অনেক কথা। কিন্তু এই প্রজন্মের অনেকেরই হয়তো জানা নেই, ক্লাবের জার্সির রঙ কেন লাল-হলুদ হয়েছিল। কী তার ইতিহাস?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Eastnbengal red and yellow jersey history

কেন ইস্টবেঙ্গলের জার্সির রং লাল-হলুদ?

শতবর্ষে পা রাখছে ইস্টবেঙ্গল। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে লাল-হলুদ। ময়দানের বটবৃক্ষ আজ সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে। স্বাভাবিক ভাবেই স্মৃতির সরণী বেয়ে উঠে আসছে অনেক কথা। কিন্তু এই প্রজন্মের অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে, একটা বিদ্রোহের থেকে জন্ম নেওয়া ক্লাবের জার্সির রঙ কেন লাল-হলুদ হয়েছিল। কী তার ইতিহাস? ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পুরনো দিনের সমর্থকরা জানেন কেন ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে এই দু'টি রংই দেখা যায়। আবেগের গল্পটা এখনও বর্তমান প্রজন্মের ফ্য়ানেদের কাছে অজানা।

Advertisment

সালটা ১৯২০। অগাস্ট মাস। তখন ময়দানে লিগ ফুটবলের আসর চলছে। ছোটখাটো ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে কিম্বা শেষের পথে। অথচ সদ্য় জন্ম নেওয়া ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে তো ফুটবল খেলতেই হবে। সে সময় উত্তর কলকাতার শ্য়াম পার্কে শুরু হচ্ছিল হারকিউলিস কাপ। তৎকালীন ইস্টবেঙ্গলের যুগ্ম-সম্পাদক রায়বাহাদুর তড়িৎভূষণ রায় ছ'জনের দল করে ওই প্রতিযোগিতায় ইস্টবেঙ্গলের নাম দেন। ঘটনাচক্রে তড়িৎবাবুর কুমোরটুলির বাড়িতেই এক সভায় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্ম হয়েছিল।

আরও পড়ুন: কোথায় আর কত টাকায় পাওয়া যাবে শতবর্ষের বিশেষ লাল-হলুদ জার্সি?

হারকিউলিস কাপের আগে ইস্টবেঙ্গলের কোনও জার্সি ছিল না। টুর্নামেন্টে নামার আগেই তড়িৎবাবু ঠিক করেন, এবার জার্সি লাগবেই। কোনও এক বিকেলে তিনি ক্লাবের অপর যুগ্ম-সম্পাদক সুরেশচন্দ্র চৌধুরিকে নিয়ে চৌরঙ্গী চত্বরে জার্সির খোঁজে বেরোন। কিন্তু কিছুতেই তাঁদের জার্সি পছন্দ হচ্ছিল না। চৌরঙ্গী এলাকার সাহেবদের প্রায় সব দোকান তাঁরা চষে ফেলেছিলেন। সুরেশবাবু চেয়েছিলেন এমন একটা জার্সি, যা চোখ ধাঁধিয়ে দেবে এবং দেখলেই ভাল লাগবে।

শেষপর্যন্ত সেকালের সুবিখ্যাত মণিহারী দোকান হোয়াইটওয়ে লেইডল-তে তাঁদের এক সেট জার্সি পছন্দ হয়ে যায়। ধর্মতলার ঠিক মোড়ে অবস্থিত মেট্রোপলিটান বিল্ডিংই ব্রিটিশ ভারতে হোয়াইটওয়ে লেইডল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর নামে পরিচিত ছিল। তৎকালীন ব্রিটিশদের মধ্যে অত্য়ন্ত জনপ্রিয় ছিল বিশাল এই দোকান।

publive-image অতীতের লেইডল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও বর্তমানের মেট্রোপলিটান বিল্ডিং (বাঁদিক থেকে)

জার্সি দেখেই পছন্দ হয়ে যায় ক্লাবের দুই যুগ্ম-সম্পাদকের। সেসময় জার্সির দাম ছিল ৮০ টাকা। অথচ তার অর্ধেক দামেই তখন এক সেট বিদেশি জার্সি পাওয়া যেত এই শহরে। কিন্তু সুরেশবাবুরা দরদাম করে জিনিস কেনার মতো মানুষ ছিলেন না। ওই চড়া দামেই সেই জার্সি কিনে নেন। আর এই জার্সিতেই ইস্টবেঙ্গল প্রথম হারকিউলিস কাপ খেলে ও জয়ী হয়। আজ এতগুলো বছর পেরিয়েও ইস্টবেঙ্গলের জার্সির রং একই রয়ে গিয়েছে। লাল-হলুদ শুধুই আজ আর জার্সির রঙ নয়। দেশ-বিদেশের কোটি কোটি সমর্থকের কাছে তা গর্বের, আবেগের রং।

তথ্য়সূত্র: 'ক্লাবের নাম ইস্টবেঙ্গল', শান্তিপ্রিয় বন্দ্য়োপাধ্য়ায়

East Bengal
Advertisment