পুরোনো হয়ে গিয়েছে। কার্যক্ষমতা আগেই হারিয়েছে। তবুও এখনো মহম্মদ সিরাজ সযত্নে রেখে দিয়েছেন তাঁর বাজাজ প্ল্যাটিনা বাইক। কারণ দুঃসময়ে, তাঁর বেড়ে ওঠার সমস্তটাই যে সাক্ষী এই বাজাজ প্ল্যাটিনা। এমনটাই জানালেন মহম্মদ সিরাজ।
এক সাক্ষাৎকারে মহম্মদ সিরাজ জানিয়েছেন, "এখনো আমার কাছে ভেঙে যাওয়া সেই বাজাজ প্ল্যাটিনা বাইক আছে। ক্রিকেটীয় কেরিয়ারের শুরুর দিকেই এটা একদম লজঝরে ছিল। সেলফ স্টার্ট তো বটেই কিক-ও নিত না। কিছুটা দৌড়ে গিয়ে স্টার্ট করতে হত। প্রত্যেকবারেই এই বাইক আমাকে সময় মত মাঠে পৌঁছে দিয়েছে। তবে মাঝেমাঝে এই যান আমাকে চূড়ান্ত লজ্জায় ফেলে দিত।"
আরো পড়ুন: জাতীয় দলে টানা বাদ! কেকেআরের ‘বুড়ো’ তারকা আগুন ঝরিয়ে বিতর্ক বাড়ালেন শেষমেষ
গত বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে রূপকথার উত্থান চলছে হায়দরাবাদি পেসারের। ঐতিহাসিক সিরিজে তিন টেস্ট খেলেই ১৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হয়েছিলেন তিনি। আসন্ন ইংল্যান্ড সফরেও তাঁকে তুরুপের তাস ধরা হচ্ছে।
মুম্বইয়ে কিছুদিন হার্ড কোয়ারেন্টাইন কাটিয়ে মহম্মদ সিরাজ জাতীয় দলের হয়ে বুধবারই খেলতে পৌঁছে গিয়েছেন ইংল্যান্ডে। আর সাউদাম্পটনে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে নামার আগে সিরাজের গলায় পুরোনো বাইক।
তিনি বলছিলেন, "হায়দরাবাদে স্টেডিয়ামে অনুশীলন হোক বা ম্যাচ খেলার পরে মাঠেই অপেক্ষা করতাম সমস্ত বন্ধুরা তাদের দামি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। তারপরেই নিজের বাইক নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করতাম যথারীতি। এখন আমার কাছে দামি গাড়ির অভাব নেই। তবে সেই ভাঙাচোরা বাইক এখনো রেখে দিয়েছি। কারণ ওই বাইকই আমার সংগ্রাম, লড়াইয়ের প্রতীক। নিজের সেরাটা বের করে আনে আমার ওই বাইক।"
সিরাজের সাক্ষাৎকারে বিরাট কোহলির জন্য প্রত্যেকবার প্রশংসা বরাদ্দ রাখেন। এদিনও সিরাজ বলে গেলেন, "বিরাট ভাই সবসময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। দু-বছর আগে যখন আইপিএলে পারফর্ম করতে পারছিলাম না, তখনও ও আমার ওপর ভরসা রেখেছিল। ও আমাকে আরসিবিতে রিটেনও করেছে। এরজন্য ওঁর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।"
২০১৭ সালে রাজকোটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০ এবং ২০১৯-এ এডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে অভিষেক ঘটে সিরাজের। এখনো পর্যন্ত কেরিয়ারে পাঁচটি টেস্ট খেলে উইকেটসংখ্যা ১৬টি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭৩/৫ উইকেট তাঁর সেরা বোলিং হিসাব।
আন্তর্জাতিক স্তরের মত ঘরোয়া ক্রিকেটেও সিরাজের পারফরম্যান্স বাঁধিয়ে রাখার মত। ৩৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সিরাজের উইকেটসংখ্যা ১৫২টি। ২৩-এর একটু ওপরে গড়। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন চারবার। ২০১৬ সালে একাই ৪১ উইকেট দখল করে হায়দরাবাদকে পাঁচ বছরে প্রথমবার রঞ্জির নকআউটে তুলতে সাহায্য করেন। তারপর থেকেই ইন্ডিয়া-এ দলের জার্সিতে নিয়মিত হয়ে যান। সেখান থেকে উত্তোরন ঘটে সিনিয়র দলে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন