Metaverse New World: কী এই মেটাভার্সের দুনিয়া ?
পুরোপুরি না হলেও ইতিমধ্যেই মেটাভার্সের স্বাদ পেয়েছে বিশ্ব। অনেকেই ভিডিও গেমের সময় বুঝেছেন এই অসাধারণ প্রযুক্তির কারিগরি। যেখানে চোখে ভিআর(ভার্চুয়াল রিয়েলিটি)কিট লাগিয়ে গেমাররা পৌঁছে যান অন্য দুনিয়ায়। একবার এই চশমা লাগালে শত্রুপক্ষের ডেরায় পৌঁছে যাবেন আপনি। চোখের সামনে দেখতে পাবেন বিপক্ষের গোলাগুলি। ঘরে বসেই যুদ্ধক্ষেত্রের অনুভূতি দেবে এই প্রযুক্তি। অতীতে থ্রিডি চশমার মাধ্যমে বিভিন্ন সিনেমায় এই টেকনোলজির বাস্তবায়ন দেখেছি আমরা। তবে এবার বিনোদনের পাশাপাশি মানুষের প্রয়োজনে লাগানো হবে এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রযুক্তিকে। টেকনোলজিস্টরা এক কথায় যার নাম দিয়েছে মেটাভার্স ওয়ার্ল্ড।
কোন কাজে লাগবে মেটাভার্স ?
মেটাভার্স হল একটি ডিজিটাল দুনিয়া। যেখানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটির পাশাপাশি ভিডিও ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাস্তব দুনিয়ার মতোই একটি জগৎ বানানো হবে। যাতে কাজে লাগবে ব্লক চেইন প্রযুক্তিও। সেখানে সরাসরি শপিং মলে না গিয়েও ট্রায়াল দিতে পারবেন জামা কাপড়ের। এখানেই থেমে থাকে না এই অবাক করা প্রযুক্তি।শোরুমে যেতে হবে না, গাড়ির টেস্ট ড্রাইভও নিতে পারবেন ঘরে বসেই।সব থেকে বড় বিষয়, কাশ্মীরের বরফ হোক বা রাজস্থানের মরুভূমি সব চলে আসবে মেটাভার্সের দুনিয়ায়।
ফেসবুকের মেটা নামকরণ
আগে থেকেই এই মেটাভার্সের পরিকল্পনায় নেমে পড়েছে ফেসবুক। সেই অনুযায়ী রাতারাতি বদলে গিয়েছে কোম্পানির নাম। ফেসবুক এখন মেটা। মূলত, মেটাভার্সের প্রচারকে গুরুত্ব দিতেই মেটা নামকরণ করা হয়েছে ফেসবুকে। যাতে মোটভার্সের জগৎ বলতেই সবার আগে ফেসবুকের নাম আসে।
কেমন হবে মেটাভার্সের জগৎ ?
দাবি করা হচ্ছে, মেটাভার্সের জগতে বদলে যাবে অর্থনীতির সংজ্ঞা। যেখানে নগদের পরিবর্তে সম্পদ তৈরির নতুন ধারণা তৈরি করবে মেটাভার্স। যা হবে এই সাধারণ টাকার থেকে পুরোপুরি আলাদা। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ।
একই সময়ে প্রয়োজনে নানা জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারবেন আপনি। মেটাভার্সের দুনিয়ায় থাকবে Digital me অথবা Digital twin-এর মতো বিষয়।কল্পবিজ্ঞান মনে হলেও আগামী প্রজন্মের হাতেখড়ি হতে চলেছে এই দুনিয়ায়।
বর্তমান বিশ্বে তথ্যর গোপনীয়তা বা তার সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত সব মহল। মেটাভার্সের দুনিয়ায় বদলে যেতে পারে এই সবকিছু। এই প্রযুক্তিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে থ্রিডি কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ডিজাইনারদের।কারণ আপনার মডেল তৈরির দায়িত্ব বর্তাবে এদের ওপর।
মেটাভার্স রেস্তোরাঁ-
এবার Metaverse-এ রেস্তরাঁ খুলতে চলছে McDonald। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল রেস্টুরেন্টের অভিজ্ঞতা পাবেন। শুধু তাই নয় সেখান থেকে খাবার অর্ডারও করতে পারবেন তাঁরা। সেই অর্ডার করা খাবার সংস্থার তরফেই হোম ডেলিভারি করে দেওয়া হবে। সম্প্রতি এই বিষয়ে বেশ কিছু নথি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখান থেকেই জানা গেছে, মেটাভার্সে রেস্টুরেস্ট খোলার জন্য ইতিমধ্যে সংস্থার তরফে ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
প্রথমত অনলাইন অর্ডার করতে পারবেন যে কেউ। অর্থাৎ Metaverse এর মাধ্যমে যে কেউ অর্ডার করা খাবার বাড়িতে পাবেন। দ্বিতীয়ত, খাবার, পানীয় মাল্টিমিডিয়া ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবেন। এর সঙ্গে থাকবে আর্টওয়ার্ক, টেক্সট, অডিয়ো, ভিডিয়ো এবং NFT। Gerben এর তরফে জানানো হয়েছে, "ভার্চুয়াল রেস্তরাঁয় আসল এবং ভার্চুয়াল সামগ্রী পাওয়া যাবে। হোম ডেলিভারির সুবিধা থাকবে।"
যদিও Metaverse এ অর্ডার করা খাবার কীভাবে হোম ডেলিভারি করা হবে সেবিষয়ে জানা যায়নি। এবং পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট তথ্য জানা যায়নি। শুধু এটাই নয়, Metaverse এর মাধ্যমে McCafe প্রজেক্টও নিয়ে আসছে McDonald। Metaverse-এর কোনও পরিকল্পনার বিষয়ে McDonald এর তরফে কিছু জানানো হয়নি।
মেটাভার্স মল-
সেখানে সরাসরি শপিং মলে না গিয়েও ট্রায়াল দিতে পারবেন জামা কাপড়ের। ভাবুন আপনি সপ্তাহের কোন এক ছুটির দিনে বাড়িতে বসেই পাবেন মলের অভিজ্ঞতা। পছন্দ করছেন আপনার মনের মত জামা কাপড় জুতো, অর্ডার করছেন সেই সঙ্গে আড্ডা মারছেন সময় কাটাচ্ছেন বন্ধুদের সঙ্গে। স্বপ্ন মনে হলেও সত্যি। এমনই মল আসতে চলেছে মেটাভার্সের দৌলতে। মেটামলের সৌজন্যে। বিষয়টি আরও সহজে বুঝিয়েছেন সার্জ গিয়ানচান্দানি । গিয়ানচান্দানি বলেন যে 'ধারণাটি হল আপনি একটি ই-কমার্স শপিং সাইটে যা দেখেন তা আরও ভাল ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতার সঙ্গে একত্রিত করা, যেখানে ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল বাস্তবতায় একটি মলে প্রবেশ করতে পারেন এবং প্রকৃত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। এটি আরও প্রগতিশীল হবে” ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে জানান তিনি। এর মাধ্যমে মানুষ ভার্চুয়ালি সহজেই মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন। প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি ব্র্যান্ড নিয়ে শুরু করা হলেও এই মলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ২০০ থেকে ২৫০ টি ব্র্যান্ডকে এই মলে যুক্ত করা পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি আলাদা গেমিং জোনও থাকবে।