আদিত্য-এল ১-এর কাউন্টডাউন শুরু আজ! ইসরো প্রধান বলেছেন - 'রকেট এবং স্যাটেলাইট' উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত। ভারতের প্রথম সৌর মিশন ২ সেপ্টেম্বর চালু হবে। এটি L1 পয়েন্টে স্থাপন করা হবে, পৃথিবী থেকে ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে, যেখান থেকে এটি সূর্যকে অধ্যয়ন করবে।
চাঁদে সফল অবতরণের পর, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এখন মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন করতে চলেছে। এবার চোখ সূর্যের দিকে, যার জন্য ২ রা সেপ্টেম্বর ISRO মহাকাশে আদিত্য-এল ১ মিশন লঞ্চ করবে। সূর্য অধ্যয়নের জন্য ভারতের প্রথম মহাকাশ মিশনের কাউন্টডাউন শুরু হবে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর)। ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, ইসরো প্রধান এস. সোমনাথ বলেছিলেন যে মহাকাশ সংস্থা ইসরো হাইভোল্টেজ এই সৌর মিশন 'আদিত্য-এল ১' এর ২ রা সেপ্টেম্বর উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং শুক্রবার ১লা সেপ্টেম্বর থেকে এর উৎক্ষেপণের কাউন্টডাউন শুরু হবে।
ইসরো প্রধান এস সোমনাথ চেন্নাইয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা লঞ্চের প্রস্তুতি নিচ্ছি। রকেট ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত। আমরা উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। মিশনটি ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১.৫০ মিনিটে শ্রীহরিকোটা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
জানা গিয়েছে, সৌর করোনা পরীক্ষা করার জন্য এই মিশন। সূর্যের আশেপাশের তাপমাত্রা থেকে শুরু করে সেখানকার পরিবেশ, সমস্ত তথ্য দিতে থাকবে আদিত্য এল ১। পাশাপাশি সূর্যের ঠিক কী প্রভাব পড়বে পৃথিবীতে, তাও পাঠাবে ভারতের এই মহাকাশযান। L1 পয়েন্টে পৌঁছতে আদিত্য এল ১-এর সময় লাগবে চার মাস।
আদিত্য-এল ১ অভিযানে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (পিএসএলভি) ১,৪৭৫ কেজি ওজনের মহাকাশযান বহন করবে। এই মহাকাশযাটিকে পৃথিবীর চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হবে। মহাকাশযানটি সাতটি বৈজ্ঞানিক পেলোড বহন করবে। চাঁদে যে পেলোডগুলো পাঠানো হয়েছে, তার চেয়ে আদিত্য-এল১ এর পেলোড দুই গুণেরও বেশি হালকা। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মতই, সূর্যাভিযানের মহাকাশযানও পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথ এবং গতিবেগ বাড়াবে। র পাশাপাশি মহাকাশযানের গতিবেগ সূর্যের দিকে গুলতি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ানো হবে। যেখানে পৌঁছনোর কথা, সেই এল১ পয়েন্টের দূরত্ব প্রায় চার মাসে অতিক্রম করবে মহাকাশযান। পৌঁছনোর পর এল১ পয়েন্টের চারপাশে একটি শূন্য কক্ষপথে ওই মহাকাশযান প্রবেশ করবে। আর, সেখান থেকেই সূর্যে নজরদারি চালাবে। পাঁচ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করবে।
যে কোন দুটি মহাকাশীয় বস্তুর মধ্যে এল১ থেকে এল৫ পাঁচটি ল্যাগ্রঞ্জ বিন্দু থাকে। এই পয়েন্ট বা বিন্দুসমান স্থানগুলোকে মহাকাশে পার্কিং স্পট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কারণ, এই সব বিন্দুর মত স্থানগুলোয় মহাকাশীয় বস্তুর মহাকর্ষীয় টান অত্যন্ত কম থাকে। এই টানে মহাকাশীয় বস্তুর চারপাশে ঘোরা যায়। কিন্তু, ওই বস্তুর ওপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না। যার ফলে, এইজাতীয় বিন্দুতে স্থাপন করা উপগ্রহকে তার আছড়ে পড়া আটকাতে বা অবস্থান বদলানো ঠেকাতে প্রচুর জ্বালানি ব্যয় করতে হবে না।