আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ভারতের ৬০০০ রেল স্টেশনে পাওয়া যাবে ওয়াই-ফাইয়ের সুব্যবস্থা। এমনটাই বলেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ফিকসি)-এর আয়োজন 'স্মার্ট রেলওয়ে কনক্লেভে' এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিষয়ে সরব হয়েছেন গোয়েল।
গোয়েল বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, যদি আমাদের দেশকে ডিজিটাল প্রযুক্তির চাদরে মুড়ে দিতে হয়, তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহারের মৌলিক উপাদানটি যাতে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়, তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের নেটওয়ার্কে ফাইবার অপটিক্স নেই, ভারতীয় রেল সম্প্রতি তার ওপরই কাজ করে চলেছে। আমরা আশাবাদী যে পরবর্তী ছয় থেকে আট মাস ধরে, সমস্ত স্টেশনগুলিতে টানা কাজ চলার পর ওয়াই-ফাই পাবেন যাত্রীরা।"
আরও পড়ুন:জিও-র নতুন ব্রডব্যান্ড কানেকশন পেতে কী করতে হবে আপনাকে, দেখে নিন
উল্লেখ্য, পরিকল্পনার শুরুতে ভাবা হয়েছিল, রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানে খুশি আপনি ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে পাবেন ইন্টারনেট পরিষেবা। কিন্তু আমজনতার জন্য যে বিনামুল্যে এই পরিষেবা আনা হল, তাতে কোনো কৌতূহলই নেই তাঁদের। সবাই নিজের ফোনের ফোর জি ব্যবহার করতেই বেশি আগ্রহী। এদিকে ফাইল বন্দী হয়ে পড়ে আছে এখনও প্রায় আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পাঁচ হাজার রেল স্টেশনে ফ্রি ওয়াই-ফাই বসানোর পরিকল্পনার নথিপত্র।
৯০ দিনের একটি সমীক্ষা করে দেখা গেছে ভোডাফোনের ২০ শতাংশ, এবং এয়ারটেলের ১৭ শতাংশ গ্রাহক ব্যবহার করেন বিনামূল্যের ওয়াই-ফাই। অন্যদিকে ওয়াই-ফাইয়ের খুব একটা তোয়াক্কা করেন না জিও এবং আইডিয়া ব্যবহারকারীরা। এর একটা কারণ সম্ভবত এই যে সীমিত এলাকার মধ্যে বন্দী রেলের ফ্রী ওয়াই-ফাই। এলাকা ছেড়ে বেড়িয়ে গেলে সেই সংযোগ থেকে আপনি বঞ্চিত।
আরও পড়ুন: Free Wi-Fi : রেলের ওয়াইফাইতে বেশি দেখা হয় পর্ন ফিল্ম
অন্যদিকে গোয়েল জানান, জাতীয় স্তরে পরিবহনের উন্নতি সম্প্রতি 'স্মার্ট' তকমা পেয়েছে। পরিবহনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে তা বাস্তবায়িত করা, সব কিছুতেই এখন পরিকাঠামোগত বদল ঘটেছে। রেলমন্ত্রী আরও জানান, বিগত চার বছর ধরে এই ভোলবদল চোখে পড়েছে। তাঁর দাবি, এবছরের এপ্রিল মাসের এক তারিখ থেকে সব ট্রেন যথাসময়ে তার দূরত্ব অতিক্রম করছে, এবং ৭৩ থেকে ৭৪ শতাংশ উন্নতি হয়েছে রেল পরিষেবায়।
গোয়েল বলেন, "প্রতিটি লোকোমোটিভ নেভিগেশন একটি জিপিএস ডিভাইসের মাধ্যমে কাজ করে, যাতে আমরা মোবাইল ফোনে চিহ্নিত করতে পারি প্রতিটি ট্রেন, এবং সেটি ঠিক কোথায় আছে সে সম্পর্কেও অবগত হওয়া যায়।" তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর ভারতীয় রেল পরিকাঠামোগত উন্নতির কারণে প্রায় ২ বিলিয়ন টাকা খরচ কমাতে পারবে, এমন চেষ্টা হচ্ছে। তা না হলে সেই খরচের কোপ গিয়ে পড়বে যাত্রীদের ওপর।
"ভারতীয় রেলওয়ে সংস্থা অত্যন্ত দক্ষ, তাই দেশের দরিদ্রের ওপর বোঝা বাড়ানোর দরকার নেই," বলেন গোয়েল। এ উপলক্ষে মন্ত্রী ও উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি দুটি পত্র প্রকাশ করেন, এক 'রেলওয়ে সেক্টরে ভারতবর্ষে ফিকসি-ইআই রিপোর্ট এবং প্রযুক্তির বিষয়ক 'FICCI-AT Kearney রিপোর্ট'।