Advertisment

E-sports: কীভাবে ই-গেম খেলেই রোজগার করবেন লাখে

প্রথাগত পড়াশুনার পাশাপাশি আধুনিক যে সমস্ত পেশা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসছে, ই-স্পোর্টস তার মধ্যে অন্যতম। কম্পিউটারে গেম খেলে অনেকেই আজকাল নিত্যনতুন দেশে পাড়ি দেবার পাশাপাশি রোজগার করছে লক্ষ-কোটি টাকা। কীভাবে? তারই হদিশ এখানে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
video-games-cover

আজকাল ডোটা, ওভারওয়াচ, ফিফা সমেত অসংখ্য গেমের টুর্নামেন্টে ইস্পোর্টস খেলোয়াড়রা এত টাকা রোজগার করেন যা শুনলে আপনি হয়ত ভিরমি খাবেন।

আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার হ্যারিসবার্গ ইউনিভার্সিটির কোন ফুটবল দল নেই। প্রয়োজন বোধ করেননি তাঁরা। পরিবর্তে গড়ে তুলেছেন একটি ভিডিও গেম খেলার টিম। বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করবার পর ষোল সদস্যের এই দলে স্থান পেলে বিশ্ববিদ্যালয় হার্থস্টোন, লিগ অফ লেজেন্ডস, ওভারওয়াচ জাতীয় গেম খেলবার জন্য দেবে মোটা টাকার স্কলারশিপ।

Advertisment

শুধু হ্যারিসবার্গ ইউনিভার্সিটিই নয়, আজকাল ডোটা, ওভারওয়াচ, ফিফা সমেত অসংখ্য গেমের টুর্নামেন্টে ই-স্পোর্টস খেলোয়াড়রা যা অর্থ রোজগার করেন, শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হবে। মার্কিন প্রবাসী ভারতীয় সাহিল অরোরা ওরফে ইউনিভার্স এখনও অবধি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ই-গেমার। প্রাইজমূল্য এবং স্পনসরশিপ মিলিয়ে তাঁর মাসিক রোজগার প্রায় ২৭০,০০,০০০ ডলার, অর্থাৎ ১,৮৪,৪২,৩৫,০০০ টাকা। কুরো তাখাসোমি ওরফে কুরোকি নামক একজন জার্মান প্লেয়ার সম্প্রতি একটি ডোটা টুর্নামেন্টে জিতেছেন ৩২ লক্ষ ইউরো, বা ২৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। এদেশেও রয়েছেন রৌনক সেন ওরফে ক্রোউলি, ক্ষিতীশ বাওয়া ওরফে কিলপ্রিস্ট এবং ইসপ্রীত সিং চাড্ডা ওরফে হান্টার-এর মত অসংখ্য গেমার, যাঁদের রোজগার অবহেলা করার মত নয় মোটেই।

তবে এঁরা কেউই কিন্তু শখের গেমার না। পেশাদার ই-গেমার হতে লাগে কঠোর পরিশ্রম এবং মনসংযোগ। পেশাদার ফুটবল, ক্রিকেট বা টেনিস খেলোয়াড়দের মতই প্রতিদিন নিয়ম করে গেম খেলেন এরা।

asus-gaming-vr-759-pro-gaming ভারতে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সামগ্রিক মূল্য ২০১৬ সালে ছিল ৫৪৩ মিলিয়ন ডলার, যা হিসেবমত ২০২২-এ বেড়ে হবে ৮০১ মিলিয়ন ডলার

ই-স্পোর্টস কী?

সংক্ষেপে লিখলে ই-স্পোর্টস ওরফে ইলেকট্রনিক স্পোর্টস হল মূলত ভিডিও গেমের টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টগুলি ভারত সমেত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আয়োজিত হয় এবং তাতে অংশগ্রহন করেন পেশাদার গেমাররা। এই টুর্নামেন্টগুলির বেশিরভাগই হয় মাল্টিপ্লেয়ার অর্থাৎ দলভিত্তিক খেলা।

ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্টে মূলত তিন ধরনের গেম খেলা হয় - রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি (RTS), ফার্স্ট পার্সন শুটার (FPS) এবং মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন ব্যাটল এরিনা (MOBA)। এছাড়াও অপেশাদারদের জন্য কিছু গেমিং টুর্নামেন্টে বিভিন্ন ফাইটিং এবং আর্কেড গেমও খেলা হয়।

ক্রিকেট, ফুটবল, টেনিস ইত্যাদি খেলার মতই ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্টগুলি দেখেন অজস্র মানুষ। ২০১৭ সালে প্রায় বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৯ কোটি মানুষ এই খেলাগুলি স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে নিয়মিত দেখেন। ই-স্পোর্টসের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে সম্প্রতি গুগলও বাজারে এনেছে ইউটিউব গেমিং। তবে গেমারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ট্রিমিং মাধ্যম হল ট্যুইচ।

pn02egaming-sports11-pro-gamer ডেয়ার টু ড্রিম ই-স্পোর্টস দল। Express photo: Prashant Nadkar

ই-স্পোর্টস টিম

অধিকাংশ জনপ্রিয় ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্টই খেলা হয় দলগত ভাবে। ক্রিকেট বা ফুটবলের মতই ভিডিও গেমের ক্ষেত্রেও প্রতিটি খেলোয়াড় পালন করে ভিন্ন ভূমিকা। প্রয়োজন অনুযায়ী বদলে ফেলা হয় খেলার ছকও।

পেশাদার গেমার হতে চাইলে শুরু করবেন যেভাবে

১) প্রথমেই প্রয়োজন অসংখ্য গেম খেলা এবং তারপর কোনও একটি বিশেষ গেম বেছে নেওয়া। বিশ্বের সমস্ত জনপ্রিয় গেমার সাধারণত কোন একটি বিশেষ গেমেই দক্ষ।

২) গেমিং পৃথিবীতে টিমের গুরুত্ব অসীম। গেমার হিসাবে দক্ষ হতে চাইলে প্রয়োজন ভাল গেমারদের সঙ্গে নিয়মিত প্র্যাকটিস করা। পাশাপাশি নিজস্ব খেলার মান সম্পর্কে অন্য গেমারদের সঙ্গে আলোচনা করলেও দক্ষতা বাড়ে কয়েকগুণ।

৩) অন্যান্য খেলার মতই পেশাদার ভিডিও গেমার হতে হলেও প্রয়োজন কঠোর প্র্যাকটিসের। পেশাদার গেমাররা সাধারণত দিনে অন্ততপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা গেম খেলেন প্রতিদিন। বড় টুর্নামেন্টে খেলবার আগে অনেক গেমার ৮-৯ ঘন্টা দৈনিক প্র্যাকটিসও করে থাকেন।

৪) ক্রিকেটে যেভাবে একজন ব্যাটসম্যান বিভিন্ন ধরণের বলে কভার ড্রাইভ বা স্কোয়ার কাট প্র্যাকটিস করেন সেভাবেই ভিডিও গেমের একটি বিশেষ অংশে গুরুত্ব দিয়ে একলা প্র্যাকটিস করা প্রয়োজন।

৫) দক্ষ গেমার হতে গেলে বদল আনতে হবে মানসিকতায়ও। জেতার পাশাপাশি হারাও শিখতে হবে স্বাভাবিক ভাবে। খেলার সময় করা ভুলগুলো চিহ্নিত করা দরকার যাতে ভবিষ্যতে একই ভুল বারবার না হয়।

৬) প্রতিদিন কঠোর প্র্যাকটিসের পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যাওয়াও ভীষণ প্রয়োজন। বন্ধু বা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সময় কাটালে তাতে প্রচুর মানসিক শক্তিও মেলে।

৭) পেশাদার ই-স্পোর্টসে সফল হতে হলে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সক্ষম হওয়া খুব প্রয়োজন। সফল গেমাররা ক্ষিপ্রগতিতে খেলা বদলে ফেলতে পারেন মূহূর্তেই।

Video Game
Advertisment