পাকিস্তানের প্রথম মহিলা মহাকাশচারী নামিরা সেলিম তাঁর এক সাম্প্রতিক লেখায় চন্দ্রযান-২ অভিযানের জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, "দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে বড়সড় পদক্ষেপ" এই অভিযান।
'সায়েনশিয়া' নামক ডিজিটাল সায়েন্স পত্রিকায় নামিরা লিখেছেন, "চন্দ্রযান-২ মিশনটি বাস্তবিকই দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে এক বিশাল পদক্ষেপ। শুধুমাত্র এই অঞ্চলের পক্ষেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরে মহাকাশ ক্ষেত্রের পক্ষেও গর্বের বিষয়।"
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর থেকেই উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। এই প্রেক্ষিতে নামিরা লিখেছেন, মহাকাশে অর্থহীন হয়ে পড়ে রাজনৈতিক সীমানা। তাঁর প্রশংসার নিশানায় ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে উন্নতিও।
"দক্ষিণ এশিয়ায় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেছে, এবং যে দেশই দৌড়ে এগিয়ে থাকুক না কেন, মহাকাশে বিলীন হয়ে যায় রাজনৈতিক সীমানা, পৃথিবীতে আমাদের মধ্যে যা বিভাজন সৃষ্টি করে, মহাকাশে তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে," আরও লিখেছেন নামিরা।
স্যার রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিকে চড়ে মহাকাশে গিয়ে নজির গড়েন নামিরা। উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুতেও পদার্পণকারী তিনিই প্রথম পাকিস্তানি, এবং মাউন্ট এভারেস্ট থেকে স্কাই-ডাইভিং করা প্রথম এশিয়ান।
প্রথম ধাক্কায় সফল হয় নি চন্দ্রযান-২ অভিযান। তার ল্যান্ডার বিক্রম ঠিক সময়ে নিজের গতি কমাতে না পেরে সম্ভবত প্রয়োজনের অতিরিক্ত গতিতে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও অক্ষত রয়েছে বিক্রম, তবে তার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন নি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, ভারতের এই ঐতিহাসিক চন্দ্র অভিযানের ঠিক এমন সময় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন নামিরা, যে সময় তাঁরই দেশের বিজ্ঞান মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এই অভিযানকে ব্যঙ্গ করে বলিউডের সঙ্গে তুলনা টেনে এনেছেন।
"একমাত্র বলিউডের মাধ্যমেই চাঁদে যেতে পারে ভারত। আর ১০০ কোটি হলেই চাঁদে পৌঁছে যাবেন আপনারা। কিন্তু সিরিয়াসলি বলতে গেলে, উগ্রপন্থীরা সবসময়ই ব্যর্থ হয়, এবং আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন বিজ্ঞানীদের কথা না মেনে এক জ্যোতিষীর কথা শুনে মিশন দেরিতে শুরু করে। অন্যান্য সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ ভুলে যান," টুইটারে লিখেছেন চৌধুরী।
Endia only way now you can reach moon is through Bollywood,another 100 crore and you guys ll be on the moon. on serious note extremists always fail and you failed when instead of scientists you relied on Jotshi and delayed the mission,Come out of hatred for other communities.
— Ch Fawad Hussain (@fawadchaudhry) September 8, 2019
সফল হলে চাঁদের মাটিতে অবতরণকারী পৃথিবীতে স্রেফ চার নম্বর দেশ হতো ভারত। এর আগে চাঁদের মাটিতে মহাকাশযান নামিয়েছে তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এবং চিন। তবে ভারত ছাড়া কেউই চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের চেষ্টা করে নি।
রবিবার ইসরো-র চেয়ারম্যান কে শিভন জানান, চাঁদে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বিক্রমকে, এবং তার একটি থার্মাল ইমেজ তুলেছে চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারে বসানো যন্ত্রপাতি। প্রসঙ্গত, ওই অরবিটার এখনও চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে ঘুরে চলেছে। তবে বিক্রমের সঙ্গে আর ১১ দিনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবেই ইসরোকে। সেই চেষ্টাতেই রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।