চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের পর ১৪ দিন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান। এর পর স্লিপ মোড রাখার পর আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে। এখানেই শেষ ভারতের এই হাইভোল্টেজ মুন মিশন? ISRO জানিয়েছিল ২২ সেপ্টেম্বরের জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে ইসরোর। তবে ইসরোর সেই আশা পূরণ হয়নি।
এর আগে, স্লিপ মোড প্রক্রিয়া শুরু করার সময়, মহাকাশ সংস্থা বলেছিল যে বর্তমানে ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ করা হয়েছে। এছাড়া রিসিভারও চালু রাখা হয়েছে। এদিকে, চন্দ্রযান-৩ রোভার 'প্রজ্ঞান' জেগে না উঠলে পরবর্তী পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছিল ইসরো। ইসরো বলেছিল যে যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে এটি চাঁদে ভারতের পাঠানো 'বার্তাবাহক' হিসাবে চিরকাল থেকে যাবে।
ল্যান্ডার এবং রোভারটি আমাদের পৃথিবীতে ১৪ দিন অর্থাৎ চাঁদে একদিন কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে ১২ তম দিনেই দুজনেই স্লিপ মোডে চলে যায়। প্রজ্ঞান ২রা সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০০ মিটারের বেশি যাত্রা অতিক্রম করে। এই মিশনের মাধ্যমে, আমেরিকা, রাশিয়া এবং চীনের পরে ভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ হয়ে চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করে। এর মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ হয়ে উঠল ভারত।
নজির গড়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফট ল্যান্ডিং করে। তবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পরেও আরও একবার সফট ল্যান্ডিং করেছে ল্যান্ডার। ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরো। জানা গিয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে লাফিয়ে উঠে প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার হাওয়ায় ভেসেছিল বিক্রম। তারপর ফের নিরাপদে নেমে পড়ে চাঁদের মাটিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম সফট ল্যান্ডিংয়ের মতোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিক্রমের এই দ্বিতীয় ল্যান্ডিং। কারণ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই আগামী দিনে চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে এনে পরীক্ষা করা যেতে পারে।
চন্দ্রযান-৩ সফল মিশনের সময়, বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভার অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা কাজ করে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে। বিক্রম ল্যান্ডারের প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার ভেসে যাওয়া পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। তবে ভবিষ্যতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ভারতের বহুল আলোচিত চন্দ্রযান-৩ মিশনকে সফল বলেই উল্লেখ করেছে ইসরো। ISRO এই অভিযানের মাধ্যমে ১৪ দিনের মধ্যে অনেক অজানা তথ্য মিলেছে। এই অভিযানের সময়, বিক্রম ল্যান্ডারের লাফ দেওয়ার একটি অপ্রত্যাশিত পরীক্ষা করা হয়, যাকে বলা হচ্ছে হপ টেস্টিং। এই পরীক্ষাটি ভবিষ্যতে চাঁদে ইসরো-এর মিশনগুলির জন্য খুব কার্যকর বলেই মনে করছেন ইসরো।
বিক্রম ল্যান্ডার ২৩ আগস্ট চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করে, তারপরে প্রজ্ঞান রোভার এটি ছেড়ে চলে যায় এবং চাঁদের অনেক তথ্য সংগ্রহ করে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভার ১৪ দিনে পরিচালিত গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রচুর ডেটা পেয়েছে।