খানাখন্দ সহ চাঁদপানা মুখের অন্য রূপ পৃথিবী থেকে দেখা কখনওই সম্ভব নয়, তাই পৃথিবী থেকে পাড়ি দিল চিনের এক স্যাটেলাইট। যা পরখ করে দেখবে চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশের বর্তমান অবস্থা। বরফ, নাকি জলাশয়, নাকি আরও বড় কোনো গর্ত, যা দেখাতে একেবারেই ইচ্ছুক নয় পৃথিবীর এই উপগ্রহ। তবে মানব সভ্যতার কাছে বোধ হয় হার মানতে হবে চাঁদের দীর্ঘমেয়াদী জেদকে। চাঁদের উল্টো পিঠের রহস্য উদঘাটনে ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হল চিনা ল্যান্ডার ‘শাঙ্গে-৪’ এর চন্দ্র অভিযান। মহাকাশের কর্মসূচিতে আরও একটি মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হবে এই অভিযান।
অন্য পিঠটি কোনও কালেই দেখা সম্ভব নয় পৃথিবী থেকে। চাঁদের আবর্তনের পর্যায়কাল এবং তার কক্ষপথের পর্যায়কাল একই হওয়ায় আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদের একটাই পৃষ্ঠ সবসময় দেখতে পাই। চাঁদ পৃথিবীকে যে অক্ষরেখায় পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে, সে অক্ষরেখায় চাঁদ একদিন বা ২৪ ঘন্টায় ১৩° কোণ অতিক্রম করে। এইজন্য আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদের একটাই পৃষ্ঠ দেখে থাকি। চাঁদের শতকরা প্রায় ৪১ ভাগ আমরা দেখতে পাই না।
আরও পড়ুন: সেরে উঠছে ওজোন স্তরের ছিদ্র
সিনহুয়ায় প্রকাশিত একটি বিবৃতি অনুযায়ী, শাঙ্গে-৪ উড়ে গেছে চাঁদের অচেনা মুখের রহস্য উদঘাটনের জন্য। অবতরণে কোনোরকম সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। পূর্ববর্তী মহাকাশযান চাঁদের দূরত্ব বেশ কিছুবার অতিক্রম করলেও, ঐ অচেনা অংশে অবতরণ করেনি। তাই বিজ্ঞানীদের চোখে মুখে খানিক সন্দেহের ছাপ রয়ে গেছে।
চীনের মহাকাশ কর্মসূচির অগ্রগতিকে সম্মান জানিয়েছেন সে দেশের নেতা-মন্ত্রীরা। অগ্রাধিকার সহ রাষ্ট্রপতি জিয়া জিপিং চীনকে 'স্পেস পাওয়ার' হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছেন। চীনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বিবৃতি থেকে জানা যায়, রাত ২.২৩-এ চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের স্যাটেলাইট লঞ্চ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এই মহাকাশযান। লং মার্চ-3 বি রকেটটির সঙ্গে পাঠানো হয় একটি ল্যান্ডার এবং রোভার।
চাঁদে অবতরণের পর শাঙ্গে-৪ এর কাজ - কম ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও তরঙ্গ ও মহাকাশীয় পর্যবেক্ষণ, ভূখণ্ড এবং ভূমিগুলি পরিদর্শন করা, খনিজ শনাক্ত করা এবং চাঁদের দূরবর্তী দিকে পরিবেশের গবেষণা করার জন্য নিউট্রন বিকিরণ এবং নিরপেক্ষ পরমাণু পরিমাপ।
আরও পড়ুন: মঙ্গলে মনমতো জায়গা না পেলেও আগ্নেয়গিরির স্পর্শ পেয়েছে ‘ইনসাইট’
চীন ২০৩০ সাল নাগাদ রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পিছনে ফেলে বড় মহাকাশ শক্তি হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে। ইতিমধ্যে সে দেশ আগামী বছর একটি মনুষ্যসৃষ্ট স্পেস স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
Read the full story in English