ভারতে করোনাভাইরাস বা COVID-19 আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭, যাঁদের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একজন। বলা বাহুল্য, প্রযুক্তির সাহায্যে চতুর্দিকে ছড়াচ্ছে করোনা মহামারী সম্পর্কে তথ্য এবং বিভ্রান্তি, দুইই। মঙ্গলবার এই বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে মাইক্রোসফট, ফেসবুক, গুগল, লিঙ্কডইন, রেডিট, টুইটার, এবং ইউটিউব। বিবৃতির সারমর্ম: "আমরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সাহায্য করছি, এবং ভাইরাস সংক্রান্ত ভুয়ো তথ্য ও বিভ্রান্তি রুখতে শুধুমাত্র পরীক্ষিত তথ্যই প্রকাশ করছি।"
গুগল এবং গুগল সার্চ: উদাহরণস্বরূপ, গুগল সার্চে গেলে ভারতীয়রা সরাসরি পেয়ে যাবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট লিঙ্ক, যার ঠিক নীচেই দেখা যাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে পাওয়া করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেশ ও নির্দেশাবলী। এছাড়াও তাদের নিজস্ব 'নলেজ প্যানেলের' অন্তর্ভুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস, যা সার্চের পাশে দেখা যাবে। সেখান থেকে পাওয়া যাবে এই রোগ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থার খবর।
গুচলের সিইও সুন্দর পিচাই তাঁর ব্লগে লিখেছেন, এই মহামারীর সুযোগ নিয়ে বিজ্ঞাপন করতে চাইছে যেসব সংস্থা, তাদের বিজ্ঞাপন ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে গুগলে। এছাড়াও গুগল প্লে-স্টোরে 'করোনাভাইরাস' শব্দটি লিখে সার্চ দিলে কোনও ফলাফল দেখানো হচ্ছে না।
ইন্সটাগ্রামে করোনাভাইরাস: COVID-19 সংক্রান্ত "ক্ষতিকারক ভুল তথ্য" তাদের প্ল্যাটফর্মে রাখছে না ইন্সটাগ্রাম। COVID-19 সম্পর্কিত কোনও হ্যাশট্যাগ কেউ ব্যবহার করলে তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে WHO, CDC, এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অ্যাকাউন্ট, যা সার্চে ভেসে উঠছে। গত জানুয়ারি মাস থেকেই করোনাভাইরাস সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হ্যাশট্যাগ ব্লক করতে শুরু করে ইন্সটাগ্রাম। এছাড়াও সম্ভাব্য বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট তাদের পার্টনারদের কাছে সত্য যাচাইয়ের জন্য পাঠাচ্ছে ইন্সটাগ্রাম। করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সংক্রান্ত সবরকম নতুন 'AR effect'ও বাতিল করছে এই সংস্থা।
ফেসবুক এবং করোনাভাইরাস: বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে 'থার্ড পার্টি' সহযোগীদের সাহায্যে এই ধরনের তথ্য বিকৃতি খণ্ডন করবে ফেসবুক। ভুল তথ্য পাওয়া গেলে তা ছড়াতে দেবে না ফেসবুক। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, এই ধরনের তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করতে চাইলে সতর্কবার্তা আসবে আপনার কাছে।
বিশ্বের যে কোনও স্বীকৃত স্বাস্থ্য সংস্থা অথবা কর্তৃপক্ষের দ্বারা চিহ্নিত ভুয়ো তথ্য ডিলিট করে দেবে ফেসবুক, বলে জানিয়েছে এই সংস্থা। এই ভুয়ো তথ্যের মধ্যে পড়ে করোনাভাইরাস সারিয়ে তোলার নানারকম অপরীক্ষিত চিকিৎসাও। এছাড়াও কোনও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যদি ভীতি ছড়ানো হয়, তা নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে ফেসবুক। এবং আপাতত ফেসবুকে বন্ধ রয়েছে মেডিক্যাল ফেস মাস্ক বিক্রির বিজ্ঞাপন।
ইউটিউব এবং করোনাভাইরাস: গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউবে ভারতীয় ব্যবহারকারীরা 'করোনাভাইরাস' লিখে সার্চ করলে সবচেয়ে প্রথমে দেখা যাবে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট লিঙ্ক, এবং তার নীচে স্বীকৃত কিছু সংবাদমাধ্যমের ভিডিও। সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ভ্রান্ত তথ্য প্রচারকারী হাজার হাজার ভিডিও নামিয়ে নিয়েছে ইউটিউব, যে প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
টুইটারে করোনাভাইরাস: টুইটারে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ভুল অথবা ক্ষতিকারক তথ্য চিহ্নিত করার ভার থাকবে মূলত স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের উপর, যদিও এতে কখনও কখনও চিহ্নিত হতে পারে সঠিক তথ্যও। সুতরাং ভুল তথ্য ধরা পড়লেও পাকাপাকিভাবে কোনও অ্যাকাউন্ট ডিলিট করবে না টুইটার। এবং বাকি সবার মতোই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লিঙ্ক স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা থাকবে এই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে।
Read the full story in English