ই-স্কুটারে আগুন লাগার বিভ্রাট কমাতে ব্যাটারি সোয়াপিংয়কেও হাতিয়ার করতে চলেছে একাধিক সংস্থা। কিন্তু কেন? রোজই বাড়ছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। মানুষ তাই বেশি করে ব্যাটারি চালিত স্কুটারের দিকে বেশি করে ঝুঁকছে। এই ধরণের স্কুটারে পেট্রোল ভরার কোন প্রয়োজন হয়না। একবার চার্জ করলেই অনায়াসেই ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা চলে এই ই স্কুটারগুলি। এদিকে মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে একের পর সংস্থা বাজারে নিয়ে আসছে ই-স্কুটার। এই ধরণের স্কুটার দামেও কিছুটা সস্তা।
সম্প্রতি ওলা নিয়ে এসেছে ব্যাটারি চালিত স্কুটার আর তা লঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গেই রেকর্ড বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারতে পরপর ঘটে চলা ইলেকট্রিক স্কুটারে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসতেই বৈদ্যুতিক টু-হুইলার ব্যবহারকারীদের মনে আশঙ্কা দানা বাঁধছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অথবা রাস্তায় চলতে চলতে ব্যাটারি চালিত স্কুটারে আগুন ধরে গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন স্কুটারের চালক।
অনেক সময় আগুনে গুরুতর জখমও হয়েছেন অনেকেই। গত শনিবার পুনেতে Ola S1 Pro-তে আগুন ধরে যায় এবং তামিলনাড়ুর ভেলোরে Okinawa-র একটি স্কুটারের ব্যাটারির বিস্ফোরণের ফলে এক ব্যক্তি ও তার ১৩ বছরের মেয়ের মৃত্যু হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল এত টাকা খরচ করে কেউ যখন কোন প্রোডাক্ট কিনবেন তার গুণমানের সঙ্গে কেন আপোস করবেন?
কেন সংস্থাগুলি এই ব্যাপারে উদাসীন হবে? ব্যাটারি চালিত স্কুটারের ক্ষেত্রে প্রধানত যে সমস্যা দেখা যায় তা হল আগুন লাগার মত ঘটনা। কিন্তু আপনি কি জানেন কেন ই-স্কুটারে আগুন লাগে? মূলত ই স্কুটার গুলিতে ব্যবহার করা হয়, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির। এখন প্রশ্ন বর্তমানের বৈদ্যুতিক স্কুটারগুলিতে কি আদৌ উৎপাদিত তাপের নির্বাপণের উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে? লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক যানবাহন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যবহৃত হোক না কেন, যদি তারা অনুপযুক্তভাবে তৈরি বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বা ব্যাটারি পরিচালনা করে এমন সফ্টওয়্যারটি সঠিকভাবে ডিজাইন করা না হলে আগুন ধরে যেতে পারে।
তবে ই-স্কুটার প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে দাবি করা হচ্ছে ব্যাটারি ঠিক মত চার্জ না করাতেই এমন বিপত্তি বাড়ছে। এর বিকল্প পদ্ধতি হিসাবে ব্যাটারি সোয়াপিংয়ের কথা বিবেচনা করছেন প্রস্তুতকারী সংস্থা। এব্যাপারে RACEnergyএর কর্নধার শ্রেয়াস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, গ্রাহককে কখনই ব্যাটারি চার্জ করতে হবে না।
এটি পরিষেবা প্রদানকারী যে ব্যাটারি প্যাকগুলি চার্জ করে দেবে গ্রাহক কেবল সেটি ব্যবহার করবেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাটারি সোয়াপিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এক্ষেত্রে চার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন তাড়াহুড়া করা হয়না। Hallekere এর তরফে এক সাক্ষাতকারে বলা হয়েছে যে ‘এমন কিছু দিক রয়েছে যা একটি স্কুটারের ব্যাটারির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে এবং আগুন লাগার দিকে সেটিকে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে।
অনেক কারণেই সেটি হতে পারে। সেলের গুণমান, সেল প্যাকিং, বৈদ্যুতিক তারের সমস্যা, ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং চার্জিং প্রযুক্তি,” । তবে অনেকের মতেই এই ব্যাটারি সোয়াপিং কতটা সম্ভব সেটাই প্রশ্ন কারণ যারা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ই-স্কুটার কিনেছেন তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ব্যাটারি বদলানো বিরক্তির কারণ হতে পারে সেই সঙ্গে এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে আগুন লাগার সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ব্যাটারি সোয়াপিং অপশনকেই অগ্রাধিকার দিতে আগ্রহী ই-ভেহিকেল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি।