গোপন টিকটক অ্যাকাউন্ট, পোস্টের সংখ্যা শূন্য, ফলোয়ারের সংখ্যা ৪ হাজার। অ্যাকাউন্টের মালিক? ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গ। এমনটাই জানিয়েছে BuzzFeed-এর একটি প্রতিবেদন। BuzzFeed বলছে, @finkd নামে এই অ্যাকাউন্টটি যাচাই করা বা ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট নয়, কিন্তু একটু ঘাঁটলেই দেখা যায় যে এটি জুকারবার্গের ভেরিফায়েড ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত।
জুকারবার্গ নিজের কোনও ভিডিও টিকটকে পোস্ট করেন নি, কিন্তু ৬১ জনকে টিকটকে ফলো করেন তিনি, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আরিয়ানা গ্রান্ডে এবং শ্যাক-এর মতো সেলেব্রিটিরা। এছাড়াও লোরেন গ্রে অথবা জেকব সারটোরিয়াস-এর মতো টিকটক সুপারস্টারদেরও ফলো করেন বলে জানা গিয়েছে।
অল্প কথায় বলতে গেলে, টিকটক এমন একটি সোশ্যাল মিডিয়া মঞ্চ, যেখানে নিজেদের তৈরি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও পোস্ট করতে পারেন যে কেউ। কিন্তু মূল আগ্রহের বিষয় হলো, টিকটকের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হলো ফেসবুকের মালিকানাধীন ইন্সটাগ্রাম। এবং জুকারবার্গ স্বয়ং স্বীকার করেছেন যে ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটে ইন্সটাগ্রামকে ছাড়িয়ে গেছে টিকটক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও যে রমরমিয়ে চলছে টিকটক, সেকথাও বলেছেন জুকারবার্গ।
পরিসংখ্যানও তাই বলছে। বাইটডান্স সংস্থার মালিকানাধীন টিকটক দাবি করছে, ভারতে মাসিক ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) সক্রিয় ইউজার রয়েছেন তাদের, অন্তত তাদের শেষ প্রকাশ্য বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে বাইটডান্স। এই ধরনের কোনও পরিসংখ্যান ফেসবুকের কাছ থেকে না পাওয়া গেলেও, ভারতে ইন্সটাগ্রামের ইউজার সংখ্যা আন্দাজ ৭০ মিলিয়ন (৭ কোটি) বলে মনে করা হয়।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে টিকটক-কে ইন্সটাগ্রামের 'এক্সপ্লোর' বিভাগের সঙ্গে তুলনা করে জুকারবার্গ বলেছেন, টিকটকে "বিভিন্ন কাহিনি এক্সপ্লোর করে দেখা ছাড়া আর কিছু নেই"। অতএব, তাঁর মতে, "আমাদের কাছে সময় আছে ট্রেন্ড শিখে, বুঝে, তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার", অন্তত টিকটকের ক্ষেত্রে। হয়তো এই কারণেই ইন্সটাগ্রামের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্ত্বেও টিকটকে গোপন অ্যাকাউন্ট খুলে বসে আছেন তিনি।
টিকটকের জন্ম ২০১৭ সালে, যখন বাইটডান্স নামক বিশাল চিনা প্রযুক্তি সংস্থা ৮০০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেয় Musical.ly অ্যাপটি, এবং তার সঙ্গে জুড়ে দেয় নিজেদের ভিডিও অ্যাপ দোয়িন। এখানেও মজার ব্যাপার হলো, Musical.ly-র সহ প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স ঝু-এর সঙ্গে ২০১৬ থেকেই অ্যাপটি কেনার বিষয়ে কথাবার্তা চালাচ্ছিলেন জুকারবার্গ, কিন্তু সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয় নি। 'কিনতে যখন পারলাম না, তখন টিকতেও দেব না', এই মনোভাব নিয়েই কি টিকটক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন জুকারবার্গ!