গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে পাওয়া ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ভয়েস রেকর্ডিং নিয়মিত শোনে গুগল সংস্থা। বেলজিয়ামের গণ সম্প্রচারক ভিআরটি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের ডাচ ভাষার কিছু রেকর্ডিং ফাঁস করে দেওয়ার পরেই একথা স্বীকার করতে বাধ্য হলো গুগল। তাদের প্রতিবেদনে ভিআরটি দাবি করেছে, "অধিকাংশ রেকর্ডিংই সচেতনভাবে করা, কিন্তু গুগল এমন সব কথোপকথনও শুনছে যেগুলো রেকর্ড হওয়ারই কথা নয়। এরমধ্যে কয়েকটিতে গোপনীয় তথ্যও রয়েছে।"
গুগলের সার্চের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ডেভিড মনসীস সংস্থার তরফে একটি ব্লগ পোস্টে স্বীকার করেছেন যে তাদের ভাষা বিশেষজ্ঞরা ভাষা এবং তার ব্যবহারের প্রযুক্তিগত উন্নতির স্বার্থে এইসব রেকর্ডিং শোনেন। "এই ভাষা বিশেষজ্ঞরা যে কোনও ভাষা বোঝার সুবিধার্থে পর্যালোচনার পর প্রশ্নের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন। স্পিচ টেকনোলজির উন্নতির ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি আবশ্যক, এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো প্রোডাক্ট সৃষ্টির ক্ষেত্রেও," লিখেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফোন জলে পড়ে গেলে, ফোনকে ফিরে পেতে যে কাজগুলি করবেন না
গুগলের এও দাবি, মোট সংগৃহীত অডিও ফাইলের স্রেফ ০.২ শতাংশই রিভিউ বা পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও দাবি, সমস্ত অডিও ক্লিপিংই হয় বেনামী, নাহয় কোনও ব্যবহারকারীর সঙ্গে যুক্ত নয়, কাজেই কোনও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ব্লগ পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ভাষা বিশেষজ্ঞরা গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে অডিও ক্লিপে 'ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ'-এর ওপর হস্তক্ষেপ করেন না।
কিন্তু স্মার্টফোন, 'গুগল হোম' জাতীয় স্মার্ট স্পিকার, এবং অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে সংগৃহীত এক হাজারের বেশি রেকর্ডিংয়ের মধ্যে ১৫৩ টি রেকর্ডিং ঘটনাচক্রে করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভিআরটি। এইগুলিতে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন একজনের ক্ষেত্রে তাঁর ঠিকানা, আরেকজনের ক্ষেত্রে নাতি-নাতনির নাম, প্রকাশ হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করতে হলে হয় "ওকে গুগল" বলতে হয়, নাহয় সংশ্লিষ্ট ডিভাইসে অ্যাসিস্ট্যান্ট বোতামটি টিপে সক্রিয় করতে হয়, যার পর রেকর্ডিং শুরু হয়। বিরল হলেও গুগল স্বীকার করেছে, কখনও কখনও "ওকে গুগল"-এর কাছাকাছি শুনতে কোনও কথাতেও চালু হয়ে যেতে পারে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। ওই ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, খুব বেশি 'ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ' থাকলে এরকমটা সম্ভব।
এবছরই গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যামাজন প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে তাদের ভাষা পরিচিতি এবং স্বাভাবিক ভাষা বোঝার প্রক্রিয়া মজবুত করতে তারা 'একো' প্রযুক্তির দ্বারা ধরা পড়া অ্যালেক্সা ভয়েস রেকর্ডিংয়ের "খুবই সামান্য সংখ্যক নমুনা" শুনেছে। এই স্বীকারোক্তির নেপথ্যে ছিল ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন, যাতে বলা হয়েছিল, সারা পৃথিবীতে হাজার হাজার অ্যামাজন কর্মী 'একো' ব্যবহারকারীদের বাড়ি এবং অফিস থেকে সংগ্রহ করা ভয়েস রেকর্ডিং শোনেন।