বুধবার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগলের সিইও সুন্দর পিচাইয়ের জন্মদিন। সম্প্রতি তার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ইউটিউব অরজিনাল সম্প্রচারিত ডিয়ার ক্লাস ২০২০ অনুষ্ঠানে সেই সমস্ত স্মরণীয় ঘটনার কথা উল্লেখ করে বর্তমান যুগের ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ দিচ্ছেন তিনি। যাঁরা স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশোনা শুরু করতে যাবে, তাদেরকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বছর ৪৮ এর পিচাই এই নতুন অনুষ্ঠানটি শুরু করেছেন।
সেখানে তিনি বার বার উল্লেখ করেছেন, বেশ কিছু জিনিস বিরক্তির সৃষ্টি করলেও ধৈর্য ধরতে হবে। এই অনুষ্ঠানে সুন্দর পিচাই, তাঁর জীবনের হেঁটে আসা কঠিন অজানা পথের কথা উল্লেখ করেছেন।
তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন সুন্দর পিচাই। আইআইটি খড়গপুর থেকে বি-টেক পাশ করেন। এরপর এমএস ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেন স্ট্যান্ডফোর্ড থেকে। এরপর এমবিএ। অ্যাপ্লাইড মেটেরিয়াল, ম্যাককিনসে এন্ড কোম্পানিতে সাধারণ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এরপর ২০০৪ সালে ম্যানেজমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট হিসেবে গুগল জয়েন করেন। সেখানে তিনি প্রথমে মাইক্রোসফট এক্সপ্লোরাল এবং মজিলা ফায়ারফক্স এর জন্য গুগল টুলবার এর ওপর কাজ করেন তিনি।
বেশ কিছু বছর পর পিচাই সরাসরি নিযুক্ত হন গুগলের নিজস্ব ব্রাউজার ডেভলপমেন্টের কাজে। ২০০৮ সালে পিচাই এর হাত ধরেই লঞ্চ হয় ক্রোম। এরপরই পদোন্নতি হয় তাঁর। ভাইস প্রেসিডেন্ট অফ প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী দুই বছরে পিচাই অর্জন করে গুগল প্রোডাক্টিভ চিফ পদ। কয়েক মাসের পর থেকেই তিনি কাজ শুরু করে দেন অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেমের ওপর। যার বাজার আজ মন্দ নয়। অ্যাপেল ছাড়া স্মার্টফোন ইউজারদের এখন প্রথম পছন্দ অ্যান্ড্রয়েড।
ব্রিটানিকা অনুসারে, ২০১০ সালের মাইক্রোব্লগিং সার্ভিস টুইটার ২০১৪ সালে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তাঁকে নিয়োগ পত্র দেয়। গুগলে থাকার কারণে বড় আর্থিক প্যাকেজও অফার করে তারা। কিন্তু গুগল আর খুব বেশি দেরি না করে ২০১৫ সালে সুন্দর পিচাই কে গুগলের সিইও হিসেবে ।
সুন্দর পিচাই এর এ বিরাট সফলতার পেছনে রয়েছে অনেক কঠিন জীবন। যা তিনি কিছুটা হলেও উল্লেখ করেছেন ডিয়ার ক্লাস ২০২০ অনুষ্ঠানে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তার প্রথম বিদেশে আশা। সেবারই প্রথম বিমানে চড়ে ছিলেন তিনি। আমেরিকা পৌঁছাতে যে খরচ তা তার বাবার গোটা বছরের বেতন। তা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল পিচাইয়ের বাবা কে। আমেরিকা পৌঁছে দেখেন বাড়িতে ফোন করতে গেলে মিনিটের দু ডলারের বেশি খরচ হবে। সেই টাকা তার পকেটে ছিল না। সেখানে একটি ব্যাগের দাম তার বাবার প্রতি মাসের মাইনের সমান। প্রযুক্তির প্রতি তার তীব্র ভালোবাসা এই কঠিন পরিস্থিতিটাকে জয় করতে সাহায্য করেছে।