চাঁদের তাপমাত্রা জেনে বিস্মিত ইসরোর বিজ্ঞানীরাও, ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রত্যাশিত ছিল না বিজ্ঞানীদের কাছেও। প্রাথমিক ভাবে ইসরোর প্রকাশিত গ্রাফ দেখে বোঝা যাচ্ছে, গভীরতা অনুযায়ী চাঁদের মাটির বিভিন্ন স্তরে তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
চন্দ্রযান-৩-এর সফট ল্যান্ডিংয়ের চার দিন পর, ইসরো আজ চন্দ্রযান-৩-এর পাঠানো প্রথম তথ্য শেয়ার করেছে। ISRO বিভিন্ন গভীরতায় চন্দ্রের মাটির তাপমাত্রার তারতম্যের উপর একটি গ্রাফ শেয়ার করেছে।
ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পাঠানো বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের পৃষ্ঠের তথ্য শেয়ার করেছে। চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে একটি রোভারও পাঠানো হয়েছে, যার নাম প্রজ্ঞান। যেটি চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ করছে। ২৩শে আগস্ট চন্দ্রযান-৩-এর সফট ল্যান্ডিংয়ের চার দিন পর, রবিবার ইসরো চন্দ্রযান-৩-এর পাঠানো প্রথম তথ্য শেয়ার করেছে। ইতিহাসে এই প্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুর চারপাশের মাটি নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ISRO বিভিন্ন গভীরতায় চন্দ্রের মাটির তাপমাত্রার তারতম্যের উপর একটি গ্রাফ শেয়ার করেছে। এটি ব্যাখ্যা করে কিভাবে চাঁদের পৃষ্ঠে তাপমাত্রা পরিবর্তন হয়। আসলে, বিক্রম ল্যান্ডারে নিযুক্ত চন্দ্র সারফেস থার্মোফিজিকাল এক্সপেরিমেন্ট (ChaSTE) এর মাধ্যমে করা প্রথম পর্যবেক্ষণের ডেটা ইসরোর বিজ্ঞানীদের হাত তুলে দিয়েছে।
ChaSTE-এর মাধ্যমে সংগৃহীত বৈজ্ঞানিক তথ্য বিজ্ঞানীদের চন্দ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার পরিবর্তনশীল আচরণ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ দেবে। চন্দ্রযান-৩ এর অধীনে চাঁদে পাঠানো ChaSTE-তে তাপমাত্রা পরীক্ষা করার সরঞ্জাম লাগানো হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে চাঁদের ১০ সেন্টিমিটার গভীর পর্যন্ত পৃষ্ঠের তাপমাত্রা মাপা যায়। ChaSTE শুধুমাত্র আর্থ-বোরিং মেকানিজম দিয়েই সজ্জিত নয়, তাপমাত্রা মাপার জন্য ১০ টি অত্যাধুনিক সেন্সরও রয়েছে এতে।
ইসরোর প্রকাশিত গ্রাফে বলা হয়েছে কীভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে গভীরতার তারতম্যে তাপমাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে। চন্দ্রপৃষ্ঠের ৮০ মিলিমিটার গভীরে তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি মতো ছিল। যত উপরের দিকে উঠেছে, তত তাপমাত্রা বেড়েছে। সেভাবেই একটা সময় তাপমাত্রা ৫০-৬০ ডিগ্রির কাছাকাছি চলে গিয়েছে। চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০ সেন্টিমিটার গভীর পর্যন্ত আপাতত তাপমাত্রার অনুসন্ধান চালানো হয়েছে।
এর আগে, ISRO শনিবার বলেছিল যে চন্দ্রযান -৩ মিশনের তিনটি লক্ষ্যের মধ্যে দুটি অর্জিত হয়েছে, যখন তৃতীয় উদ্দেশ্যের অধীনে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চলছে। চন্দ্রযান-৩ ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি নরম অবতরণ করেছিল। এর মাধ্যমে ভারত প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করল। এ ছাড়া আমেরিকা, চিন ও রাশিয়ার পর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে অবতরণ করেছে ভারত।